Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

তালেবানরা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা; দ্রুত সমর্থন দেয়া দরকার: ডা. জাফরুল্লাহ 

নিজস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবর ১১, ২০২১, ০১:৪৫ পিএম


তালেবানরা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা; দ্রুত সমর্থন দেয়া দরকার: ডা. জাফরুল্লাহ 

তালেবানরাই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তাদের দ্রুত সমর্থন দেয়া দরকার বলে মন্তব্য করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধে বিজয় লাভের পর যে পরিমাণ মানুষকে আমরা হত্যা করেছি তালেবানরা তার চাইতে কম হত্যা করেছে। আমি তুলনা করে বলতে চাই ১৯৭১ সালে আমরা যখন যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, সেই সময়ে আমাদের দেশের অবস্থা কি ছিল? আমরা স্বাধীন হওয়ার পরে যত লোক হত্যা করেছি তালেবানরা তার চাইতে কম সংখ্যক হত্যা করেছে।  তালেবানরা বিজয় লাভের পরই আমি বলেছি তালেবানরা মুক্তিযোদ্ধা। ২০ বছর স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করে তারা যদি মুক্তিযোদ্ধা না হয় তাহলে এক বছর যুদ্ধ করে আমরা কিসের মুক্তিযোদ্ধা।

সোমবার (১১ অক্টোবর) সাভারে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘রাজনীতি ও প্রশাসন বিভাগ’ কতৃক আয়োজিত ‘ইঙ্গ-মার্কিন প্রচারণা এবং আফগানিস্তান প্রশ্নে তালেবান’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, পশ্চিমা বিশ্বের ইসলাম ফোবিয়ার সাথে যুক্ত হয়েছে ভারত। ভারত মিথ্যাচারে তাল দেয়ায় ওস্তাদ। পশ্চিমা মিডিয়ার ইসলাম ফোবিয়া আমাদের ভুল পথে চালিত করে। আফগান তালেবানরা কয় মাস হলো ক্ষমতায় এসেছে। অপপ্রচার হয়েছিল তারা ক্ষমতায় আসলে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করবে। কয় জন মানুষ হত্যা হয়েছে।

তিনি বলেন, আফগানিস্তানের সম্পদ আছে। তাদের কৃষির মূল সম্পদ আফিমে। আফিমের  সব ফ্যাইন্যান্স আমেরিকা ও ভারতের। আফিম আছে বলে তারা প্রচারণা চালায় আবার চুপেচুপে তারাই ফাইন্যান্স করে। আমি মনে করি আমাদের উচিৎ তালেবানদের মেনে নিয়ে তাদের সমর্থন দেয়া। কারণ আমাদের স্বার্থ আছে। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই বাংলাদেশের ভালো স্বার্থ আছে। তাদের যেই পশ্চাৎপদ মতামত আমরা সেটাতে উদ্বুদ্ধ করতে পারব। উঠা-বসা, আলাপ-আলোচনা না করলে হবে না। 

তিনি আরো বলেন, আমরা যদি আজ তালেবানদের বয়কট করি তবে প্রশ্ন জাগে আমরা কেনো পশ্চিমার কথায় পরিচালিত? আমরা আমাদের নিজের চিন্তাধারায় পরিচালিত হবো। আমি বলবো এই মুহূর্তে আফগানিস্তানে এক লাখ বাংলাদেশীর কর্মসংস্থান হবে। তবে তালেবান বিজয়ের ফলে একটু সমস্যাও আছে। বড় সমস্যাটা হল ভারতে বিভক্তি হবে। আজকে কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামীরা বুঝবে যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করা যায়। অর্থাৎ আজকে কাশ্মীরের মুক্তির আন্দোলনটা বেড়ে যেতে পারে।

ডা. চৌধুরী বলেন, আমি মনে করি তালেবানদের দ্রুত সমর্থন দেয়া দরকার। যারা দ্রুত যাবে তাদের লাভ। তাদের সমস্তকিছু আমরা মেনে নিব তা না। তবে উঠাবসা করলে তারা দেখবে মেয়েরা স্কুলে গেলে তার কথাটা ভালো বুঝবে। তারা তাদের মেয়ে সন্তানদের বিদেশে রাষ্ট্রদূত বানাতে উৎসাহিত হবে। তাই আমি সরকারকে বলবো এখনি তালেবানকে সমর্থন দিয়ে সেখানে আমাদের দূতাবাস খোলা উচিৎ।

এসময় সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দেশের পুরো নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনাররাই বলছে তারা নিজেরাই ভেঙে পড়েছে৷ মাহবুব তালুকদার তো সবার সামনে বলেছে৷ আরেকজন বলেছে দেশের নির্বাচন যেভাবে হয়েছে আমার ইউনিয়নে যেনো সেভাবে নির্বাচন না হয়। তারা নিজেরাই বলেছে তারা ভেঙে পড়েছে তারা আর করতে পারছে না। এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার তো কয়েকবার বলেছে আমি কি করবো৷ ভোটার আনা আমার কাজ নয়। 

তিনি বলেন, কোনো দেশেই শত ভাগ বলবে না নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। আমেরিকা এবং ইংলেন্ডও বলেতে পারবে না সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। যদি কোনো দেশের নাগরিকরা মনে করেন ৭০ ভাগ ভোট নিজেরা নিজেদের মনোনীত জায়গায় দিতে পরেছে সেটাকে আমরা বলি সুষ্ঠু হয়েছে। আমাদের দেশে যদি কোনো পার্টি হাড়ে তাহলে তারা বলবে যে আমাদের বিরুদ্ধে সবাই ছিলো। তবে নির্বাচন কমিশন একা যে নির্বাচন সুষ্ঠু করাতে পারবে এটা দুনিয়ার কেউ বলতে পারবে না৷ 

সাবেক এই কমিশনার বলেন, আমাদের দেশে জুডিশিয়াল ইলেকশন কমিশন কেও সাপোর্ট করতে পারছ না এবং ইলেকশন ব্যবস্থা কে সাপোর্ট করতে পারছ না। অন্যান্য দেশে কিন্তু জুডিশিয়াল বিশাল বড় রোল প্লে করে। নির্বাচন কমিশন কে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে ফ্রি এন্ড ফেয়ার নির্বাচন উপহার দেয়ার জন্য। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এটি ব্যবহার করতে পারেনি। কিন্তু আমরা সেইরকম ইলেকশন কমিশনার খুব কম দেখেছি। গত দুই নির্বাচনে ভোটাররা হতাশ হয়েছে। অবশ্যই আমাদের রাজনৈতিক প্রভাব আছেই। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সার্চ কমিটির যদি হয় তবে আইন করে সার্চ কমিটি করতে হবে। কিমিটিতে কারা থাকবে কারা থাকবে না কোন জায়গা থেকে নাম করে কিভাবে আনবে সেটাই বলবে। ২০১১ সালে আমরা যে সার্চ কমিটির খসরা  করেছিলাম যে কোনো কিছুই পার্লামেন্টের বাইরে কিছু হবে না। সার্চ কমিটির নট পার্ট অফ পার্লামেন্ট।

সাবেক রাষ্ট্রদূত এম সিরাজুল ইসলাম বলন “ আমি নিজই আমরিকার ওয়াশিংটন ছিলাম, সেখানে মেয়েরা যতটা না নিরাপদ আফগানিস্তান বর্তমান মেয়েরা তার চেয়েবেশি নিরাপদ। আফগানিস্তান থক লিথিয়াম লুট করার চষ্টায় ছিল আমরিকানদর প্রধান লক্ষ্য। 

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদর ডীন, রেজিষ্টার. বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষকগণ এসময় উপস্থিত ছিলন।

অধ্যাপক ডা. লায়লা পারভীন বানু’র সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাহমান চৌধুরী। আলোচনায় আরো অংশ নেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি প্রফেসর দিলারা চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত এম সিরাজুল ইসলাম, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ড. তাসাদ্দেক আহমেদ।

আমারসংবাদ/জেআই