Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

অর্ধশতাধিকের বেশি ভ্যাক্সিনের আওতায় পবিপ্রবির সিএসই অনুষদ

পবিপ্রবি প্রতিনিধি

আগস্ট ১, ২০২১, ০৬:৪০ এএম


অর্ধশতাধিকের বেশি ভ্যাক্সিনের আওতায় পবিপ্রবির সিএসই অনুষদ

২০২০ সালের ১৭ মার্চ যেন শিক্ষার্থীদের জীবনে এক ভয়াবহ দুর্যোগ ছিল। সেই দুর্যোগকে আমরা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি। করোনাকালীন ছুটি ১ সপ্তাহ, ১ মাস এমনভাবে বাড়তে বাড়তে সংখ্যাটি আজ ৫০০ ছুঁই ছুঁই। 

শিক্ষার চেয়ে জীবনের মূল্য বেশি বলে, সেই জীবনকেই বন্দী খাঁচায় বন্দী করতে হয়েছে। হতাশায় আর পরিবারের দুশ্চিন্তায় অনেকে হয়ত বা দু'একবার আনমোনে আত্মহত্যা শব্দটির সাথেও নিজের মস্তিষ্ককে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। 

এ যেন জীবন বাঁচাতে মৃত্যুর সমান কষ্টকে সানন্দে বরণ করে নেওয়া। অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে, কিন্তু সবাই কি পারছে অংশগ্রহণ করতে? অ্যাসাইনমেন্ট আর প্রজেক্টের ভিড়েও নিজেদের হতাশা তালগাছের মতো মাথা উঁচু করে চোখ পাকিয়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। 

অনলাইন কিংবা স্বশরীরে পরীক্ষর মতো শব্দগুলোও মতপার্থক্য আর যুক্তি-যুক্তিখন্ডনের গর্তে মাটি চাপা পড়ে গেছে। থেমে নেই জীবন, তবুও যেন থেমে আছে জীবনের সবকিছু। ঠিক এমতাবস্থায় ভারতের ডেল্টা ধরণ করোনার প্রকোপকে শহর থেকে গ্রামে পর্যন্ত ছড়িয়ে দিচ্ছে। আবার অন্যদিকে ভ্যাক্সিন প্রয়োগ একটি সুখবরও বটে। একমাত্র শতভাগ ভ্যাক্সিন কার্যক্রমের মাধ্যমেই হয়তবা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আবারও শিক্ষার্থীদের বুকে টেনে নিতে পারবে। 

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলী অনুষদে দেখা যায়, প্রায় শতকরা পঞ্চাশের বেশি শিক্ষার্থী ভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছে এবং দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় আছে। অনেকে প্রথম ও দ্বিতীয় দুই ডোজই সমাপ্ত করেছে যদিও প্রথমদিকে, সরকারি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভ্যাক্সিনের নিবন্ধনে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে।  

কয়েকজনের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলে দেখা যায়, পবিপ্রবির সিএসই ১৪ ব্যাচের অর্থ্যাৎ ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থীদের প্রায় শতকরা ৬৭ ভাগ, ২০১৭-১৮ সেশনের শতকরা ৯০ ভাগ, ২০১৮-১৯ সেশনের শতকরা ৫০ ভাগ এবং ২০১৯-২০ সেশনের শতকরা ৫২ ভাগ শিক্ষার্থী ভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। 

যারা ভ্যাক্সিন গ্রহণ করেছেন, ইতোমধ্যেই তাদের তথ্য পবিপ্রবি প্রশাসন সংগ্রহ করার কাজ শুরু করেছে। যে সকল শিক্ষার্থী জাতীয় পরিচয়পত্রের অভাবে নিবন্ধন করতে পারেনি, তাদেরকে আপাতত পটুয়াখালীর সংশ্লিষ্ট ভ্যেনু থেকে ভ্যাক্সিন নেওয়ার কথা বলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ডের মাধ্যমে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য বিবেচনা এবং লকডাউনের কথা মাথায় আসলে, পটুয়াখালী ব্যাতীত অন্যন্য জেলার জাতীয় পরিচয়পত্রহীন শিক্ষার্থীদের জন্য বিষয়টি মূল্যহীন বললেই চলে। 

এ বিষয়ে একজন শিক্ষার্থী জানান, "দেশ লকডাউন হয়েছে প্রায় দেড় বছর! বহুদিন আগেই দেশে ভ্যাকসিন আসলেও, আবাসিক ছাত্রদের জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয় অনেক পরে। দেরিতে হলেও এটা ভালো উদ্যোগ ছিলো! কিন্তু আইডি কার্ড আর জন্মসনদের বেড়াজালে পরে অনেকেই টিকা নিতে পারে নি এখনো! আমিও তাদের মধ্যে একজন। প্রশাসনের উচিত এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করা।" শতকরা ভ্যাক্সিন কার্যক্রম শেষ হলে সকলেই চায় ক্যাম্পাসে ফিরতে।

১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী রুবাইয়া সারিকা এ বিষয়ে জানান, "ভ্যাক্সিন নেওয়ার আগেই আমার নানাসহ আমি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হই। এরপর দুঃখজনকভাবে একে একে আক্রান্ত হয় আমার পরিবারের তিন জন। আলহামদুলিল্লাহ, সকলেই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। কিন্তু আক্রান্ত পরবর্তী দুর্বলতা সামাল দেওয়া অনেক কষ্টকর ছিল। 

কোভিড-১৯ নেগেটিভ হওয়ার এক মাস পর ভ্যাক্সিন নেওয়া যায় জেনে আমিও আশাবাদী। ভ্যাক্সিন নিলে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা শতাধিক না কমলেও, এটি আমাকে এই অদৃশ্য ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করতে সাহায্য করবে এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। ভ্যাক্সিন নিয়ে অবশ্যই ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে চাই। 

ক্যাম্পাস জীবন শেষ হতে খুব বেশি দিন নেই আর। এ সামান্য সময়কে আর মিস করতে চাই না।" আবারও সন্ধ্যা নামুক পৃথিবীতে; পাখিরা ফিরে যাক নীড়ে যে নীড়ে বন্ধু আছে; আছে বেঁচে থাকার প্রত্যাশা- এই কামনা সকল শিক্ষার্থীর।

আমারসংবাদ/এআই