Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

এএসপির সঙ্গে জোরপূর্বক বিয়ে, ৬ দিনের মাথায় স্বামীকে তালাক কিশোরীর!

নিজস্ব প্রতিবেদক

জানুয়ারি ২৩, ২০২১, ০৩:৩৫ এএম


এএসপির সঙ্গে জোরপূর্বক বিয়ে, ৬ দিনের মাথায় স্বামীকে তালাক কিশোরীর!

বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া পুলিশের এক এএসপির সঙ্গে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়ায় ৬ দিনের মাথায় স্বামীকে তালাক দেয় এক কিশোরী।

সম্প্রতি এ ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর আজিমপুর এলাকায়।

ঘটনার নেপথ্যে জানা যায়, ওই কিশোরীর বাবা-মা তার অমতে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে তাকে বিয়ে দেয়। এ অন্যায় কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না সেই কিশোরী। ফলে বাধ্য হয়ে সে বিয়ের ৬ দিনের মাথায় স্বামীকে তালাক দেয়।  

এদিকে স্বামীকে নিজ ইচ্ছায় তালাক দেয়ায় সেই কিশোরীকে ঢুকতে দেয়া হয়নি বাবার বাড়িতে। পরে বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) রাতে তাকে পুলিশের সেফহোমে রাখা হয়েছে। 

এই প্রসঙ্গে শুক্রবার উইমেন সাপোর্ট সেন্টারের সহকারী পুলিশ কমিশনার মিনা মাহমুদা বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে সে আমাদের এখানে আসার পর থেকে বেশ ভালো আছে। এখনও তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের কোনো সিদ্ধান্ত  হয়নি। সে যতদিন এখানে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে, আমরা তাকে সহযোগিতা করবো। 

এদিকে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর কিশোরীর বাবা বলেন, মেয়ের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। শুক্রবার বন্ধের দিন থাকায় তাকে ফিরিয়ে আনতে পারিনি। তবে আজ শনিবার সকালে গিয়ে মেয়েকে বাসায় নিয়ে আসবো। এটা আসলেই একটা ভুল বোঝাবুঝি ছিল। মেয়েকে ফেরত চাই। ওর যেটা ভালো মনে হয়, ও সেটাই করবে। 

অপরদিকে কিশোরী জানায়, সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই তার বাবা তাকে কয়েকবার বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। প্রত্যেকবারই বিয়ের আয়োজন থেকে বিভিন্নভাবে নিজেকে মুক্ত রাখতে পেরেছে সে। সর্বশেষ এই বিয়েতেও যখন রাজি হচ্ছিল না, ঠিক তখনই বাবা তার বয়স বাড়িয়ে এফিডেভিট করেন। এফিডেভিটে তার বয়স উল্লেখ করা হয় ১৯ বছর। পরে অনেক প্রতিবাদ করেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। বাধ্য হয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয় তাকে।

এদিকে বিয়ে প্রসঙ্গে কিশোরী জানায়, গত ১৫ জানুয়ারি ৩৭তম বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া পুলিশের এক এএসপির সঙ্গে তাকে জোর করে বিয়ে দেন মেয়েটির মা-বা। এক পর্যায়ে সে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলেও ততক্ষণে বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়। 

এরপর গত বৃহস্পতিবার স্বামী জোর করে তাকে মার্কেটে নিয়ে যান। ফেরার পথে সহযোগিতা চাওয়া বন্ধু ও সাংবাদিকদের তার বাসার সামনে পেয়ে যায় মেয়েটি। একইসঙ্গে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) একজন প্রতিনিধি তাকে আইনি সহযোগিতা দিতে আসেন। বরসহ মেয়েটি যখন বাসার নিচে উপস্থিত ঠিক, তখনই বন্ধুদের দেখে সে আবারও নিজের বাল্যবিয়ের প্রতিবাদ করে।  

পরে সহপাঠীদের সহযোগিতায় লালবাগ থানায় আশ্রয় নেয় মেয়েটি। সেখানে তার সম্মতিতে বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে। এ সময় তার বাবা-মাকেও থানায় ডেকে আনে পুলিশ। এরপর মেয়েটিকে তাদের বাসায় নিতে আপত্তি জানায় বাবা-মা। 

আমারসংবাদ/জেডআই