Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

ই-পাসপোর্ট দ্রুত চালু হোক

এপ্রিল ২৭, ২০১৬, ০৭:২২ এএম


ই-পাসপোর্ট দ্রুত চালু হোক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট সুবিধা জনগণের দোর গোড়ায় পৌঁছে দিতে তার সরকার ইলেক্ট্রনিক বা ই-পাসপোর্ট চালু করতে অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ৈ যাচ্ছে। এ পাসপোর্ট প্রবর্তিত হলে এ খাতে কোনো জালিয়াতি থাকবে না। রোববার সকালে আগারগাঁওয়ে ডিপার্টমেন্ট অব ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহে ২০১৬ এবং বিভাগীয় ও আঞ্চলিক ১০টি পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের নব নির্মিত ভবন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন কালে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাসপোর্ট হলো একটি স্বাধীন রাষ্টের প্রতীক। এটি জাতির মর্যাদা বহন করে। হয়রানি ছাড়া পাসপোর্ট পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। এ ক্ষেত্রে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিস নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে। পাসপোর্ট সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আমাদের সরকার। তাছাড়া এ খাতকে সম্পূর্ণ ডিজিটাল করার ক্ষেত্রে সরকার গত ৭ বছরে অসামান্য সাফল্য অর্জন করেছে। ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট চালু হওয়ার পরে পাসপোর্ট ইসুতে প্রতারণার অবসান ঘটবে। প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, নতুন উদ্বোধন করা পাসপোর্ট অফিস জনগণের দোরগৌড়ায় উন্নত সেবা পৌছে দিতে সহায়ক হবে। নতুন এই পাসপোর্ট অফিসগুলো ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস এবং আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস গুলো হলো কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, ব্রাহ্মনবাড়ীয়া, পটুয়াখালি, ফেনী, মুন্সীগঞ্জ, কুষ্টিয়া, পাবনা ও দিনাজপুুর। এখন থেকে প্রতিটি জেলায় একটি করে পাসপোর্ট অফিস থাকবে। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট খাতের উন্নয়নে নেয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে তার সরকার যে সব জেলা থেকে বেশি মানুষ বিদেশে যান সে সব স্থানে পাসপোর্ট সেবা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেয়। এই পরিকল্পনার আওতায় এ পর্যন্ত ভিআইপি ১ কোটি ৪০ লাখ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট এবং ৩ লাখ ২৬ হাজার মেশিন রিডেবল ভিসা দিয়েছে। এটি একটি যুগান্তকারী ঘটনা। অনেকেই এই পদক্ষেপের সম্ভাবনা নিয়ে সন্ধিহান ছিলেন। কিন্তু ভিআইপি কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিরলস প্রচেষ্টায় এ পরিকল্পনা সফল হয়েছে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, পাসপোর্ট -ভিসা রাষ্ট্রের একটি অতি জরুরী বিষয়। দিন বদলের পরিক্রমায় নাগরিকদের বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন ও প্রবনতা অনেক বেড়েছে, দিন দিন বাড়ছে। এ জন্য পাসপোর্ট-ভিসা লাগবেই। বিদেশ যেতে পাসপোর্ট-ভিসার বিকল্প নেই। পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পাসপোর্ট অফিসে হয়রানির শেষ নেই, অর্থ অপচয়েরও শেষ নেই। পাসপোর্ট-ভিসা সংগ্রহের জটিলতার সুযোগ নিয়ে মাঠে নেমেছে ভয়ঙ্কর দালাল চক্র।একটি পাসপোর্ট তৈরি করতে যত ঝামেলা, যত খরচ, তার চেয়ে ১০ গুণ বেশি হয়রানি কোনো দেশে যাওয়ার জন্য ভিসা সংগ্রহ করা। পদে পদে ঘুষ দিতে হয়, দালাল-জালিয়াতদের খপ্পরে পড়তে হয়। প্রধানমন্ত্রী যে প্রাণ খোলা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ই-পাসপোর্ট-ভিসার ব্যাপারে, তা দ্রুত বাস্তবায়ন হলে জনগণ একটি সাংঘাতিক হয়রানি থেকে রেহাই পাবে। এখন দরকার আন্তরিকতার সঙ্গে দ্রুত ই-পাসপোর্ট-ভিসা প্রক্রিয়া শেষ করা। যত সহজে, যত কম হয়রানিতে দেশের নাগরিকরা বিদেশে গিয়ে কর্মসংস্থানে যোগ দিতে পারবে, তত দ্রুত তারা দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবেন। এটা বলার অবকাশ নেই যে, বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিট্যান্স আমাদের অর্থনীতি মজবুত হওয়ার অন্যতম শর্ত। এ পর্যন্ত ৩৩টি ইমিগ্রেশন চেক পয়েন্ট এবং ৬৫টি পাসপোর্ট ও ভিসা উইং খোলা ছাড়াও সরকার প্রত্যেক জেলায় একটি করে পাসপোর্ট অফিস স্থাপন করেছে। এই অধিদপ্তরে লোকবল ৩৯৭ থেকে ১ হাজার ২৮৪ জনে উন্নীত করা হয়েছে। আন্তজার্তিক পর্যায়ে তাদের সফলতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষন দেয়া হচ্ছে। আমরা আশা করছি দ্রুতই ই-পাসপোর্ট-ভিসা জনগণ পেয়ে যাবে। দালালদের খপ্পর থেকে তারা বাঁচবে।