Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

স্মার্টকার্ড বিতরণে অব্যবস্থা সুষ্ঠু বিতরণ নিশ্চিত হওয়া উচিত

অক্টোবর ৫, ২০১৬, ০৬:০০ এএম


স্মার্টকার্ড বিতরণে অব্যবস্থা সুষ্ঠু বিতরণ নিশ্চিত হওয়া উচিত

গত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার করেছিলো ন্যাশনাল আইডি কার্ড। এ ব্যাপারে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও একটা সমর্থন ছিলো। কিন্তু এক পর্যায়ে এসে ভোটার আইডি কার্ডেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই প্রয়োজন হয়েছে স্মার্টকার্ডের। শুরু হয়েছে জাতীয় পরিচয় পত্র হিসেবে স্মার্টকার্ড বিতরণ। কিন্তু শুরুতেই দেখা দিয়েছে বিতরণে অব্যবস্থাপনা ও জটিলতা। ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ নাগরিক। স্মার্টকার্ড সংগ্রহে সাধারণ নাগরিকদের ঠিকমতো দিকনির্দেশনা দেয়া হয় নি। তাই নাগরিকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। আমাদের সন্দেহ হচ্ছে, স্মার্টকার্ড সংগ্রহের ঘাপলায় সামনের যে কোনো নির্বাচনে অনেক ভোটার ভোটদানে ব্যর্থ হবেন। স্মার্টকার্ডের প্রযুক্তিগত জটিলতা দূর করা না হলে, সহজভাবে ভোটারদের হাতে স্মার্টকার্ড তুলে না দিলে অগণিত ভোটার ভোট প্রয়োগে বঞ্চিত হবেন। গত সোমবার রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেয়ার পর সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এ জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। যে সব কেন্দ্রে এই কার্ড বিতরণ শুরু হয়, সে সব কেন্দ্রের ভোটারদের পক্ষ থেকে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। ব্যবস্থাপনায় সমন্বয়ের অভাবের কথা বলেছেন তারা। এ প্রসঙ্গে এক নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তা বলেছেন, প্রথমদিন মানুষের ব্যাপক উৎসাহের কারণে সকালে বিতরণ কেন্দ্রে বেশ ভিড় ছিলো। নির্ধারিত এলাকার বাইরের কিছু লোক ভুল করে কার্ড নিতে আসায় জটিলতা হয়েছে। সফ্টওয়্যারের ত্রুটির কারণে কিছু ক্ষেত্রে স্মার্টকার্ড বাছাই করে তাদের হাতে তুলে দেয়া যায় নি। তবে সংশ্লিষ্টদের আঙুলের ছাপ ও আইরিশের প্রতিচ্ছবি নিয়ে রাখা হয়েছে। পরে এসে তারা কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আগামী দিনে আরো সুচারুভাবে কাজ করা সম্ভব হবে বলে আশা করেন তিনি। ওই কর্মকর্তা আরো বলেছেন, বয়স্ক নাগরিকদের অনেকের ক্ষেত্রে আঙুলের ছাপ মেলাতে সমস্যা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে আঙুলের ছাপ না নিয়েই কাজ এগিয়ে নিতে হচ্ছে। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, যে কোনো নতুন সিস্টেমে জটিলতা দেখা দিতে পারে। কিন্তু তা নিরসনের তড়িৎ উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে প্রতিদিন সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা উচিত। যারা কার্ড বিতরণের দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের ঠিকমতো প্রশিক্ষণ নেয়াও প্রয়োজন। সার্বিকভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন নাগরিকরা হয়রানির শিকার না হন। যেন নাগরিকরা জটিলতার ভয়ে স্মার্টকার্ড গ্রহণে অনীহা বোধ না করে। দরকার হলে জনবল বাড়ানোর ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। আমরা দেখেছি, ভোটার তালিকা প্রণয়নের সময় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী এবং বেকার তরুণ তরুণীদের কাজে লাগানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও প্রযুক্তিতে দক্ষ বেকার জনশক্তি কাজে লাগালে স্মার্টকার্ড বিতরণ ব্যবস্থা সুষ্ঠু হবে, অন্যদিকে বেকাররাও তাৎক্ষণিক উপকৃত হবে। 

স্মার্টকার্ড বিতরণে নির্বাচন কমিশনের যথাযথ আন্তরিক পদক্ষেপের কোনোরকম অভাব হলে অগণিত বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, অসুস্থ লোকজন, কোলাহল ও ভিড় পছন্দ করে না, এমন লোকজন স্মার্টকার্ড সংগ্রহ করতে গরজ বোধ করবেন না। এতে দেশের নাগরিকদের একটি অংশ ভোটারবিহীন থেকে যাবেন। এরও কুফল দেখা দেবে সমাজে। একটি ভোটের যথেষ্ঠ মূল্য। সুষ্ঠু ভোটদান ব্যবস্থা নির্ভর করছে স্মার্টকার্ড বিতরণের ওপর। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের নির্ভুল পদক্ষেপের দরকার।