Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪,

দক্ষকর্মী নেবে জাপান উদ্যোগ কাজে লাগানো হোক

মার্চ ১৪, ২০১৭, ০৬:০৯ এএম


দক্ষকর্মী নেবে জাপান উদ্যোগ কাজে লাগানো হোক

সহযোগী দৈনিক জানাচ্ছে যে, ‘শিক্ষানবিস ও দক্ষ কর্মী নেবে জাপান’। নির্মাণ, উৎপাদনমুখী শিল্প প্রযুক্তি ও দক্ষতা হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে শিক্ষানবিস ও দক্ষকর্মী তৈরির লক্ষ্যে জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। ফলে শিক্ষানবিস ও দক্ষতা অর্জনকারী কর্মীরা ৫ বছর মেয়াদে চাকুরি করার সুযোগ পাবেন জাপানে। মেয়াদ শেষে এ সব বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফিরে এসে নিজেরাই উদ্যোক্তা হতে পারবেন। তাদের অর্জিত দক্ষতা প্রয়োগ করে শিল্প কারখানায় উচ্চ বেতনে ম্যানেজার, সুপারভাইজার পদে চাকুরি করার সুযোগ পাবেন। প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, এ চুক্তির মাধ্যমে আমরা আরো অধিক দক্ষকর্মী তৈরি করতে পারবো এবং দেশ-বিদেশে চাহিদা অনুযায়ী দক্ষকর্মী প্রেরণ করতে পারবো। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে সারা বিশ্বে দক্ষ কর্মীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমরা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দক্ষ কর্মী তৈরি এবং বিভিন্ন দেশে প্রেরণ সর্বাধিক গুরত্ব প্রদান করছি। বর্তমানে জাপানে নির্মাণ খাতে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। জানা যাচ্ছে সূত্র থেকে, টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম (টিআইটিপি)র আওতায় জাপান দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন (প্রশিক্ষণার্থী) সংগ্রহ করছে। বাংলাদেশ থেকে এ প্রোগ্রামের আওতায় সর্বাধিক পরিমাণ টেকনিক্যাল ইন্টার্ন নেয়া হবে। বাংলাদেশ থেকে নেয়া শিক্ষানবিস-কর্মীদের ৫ বছর পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দেয়া হবে এবং পরে দেশে ফিরে নিজেরাই উদ্যোক্তা হতে পারবেন। উল্লেখ্য যে আগের চুক্তিতে বাংলাদেশি নবিসি কর্মীরা জাপানে ৩ বছর কাজ করার সুযোগ পেতেন, বর্তমান চুক্তির ফলে ৫ বছর কাজ করতে পারবেন। উদ্যোক্তা তৈরিতেও জাপান বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে। জাপানে বর্তমানে প্রায় ১২ হাজার কর্মী রয়েছে। দেশটির চাহিদা অনুযায়ী তারা বাংলাদেশ থেকে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে অদক্ষ কর্মী নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষকর্মী বানিয়ে ওদেশেই কাজের সুযোগ করে দেবে। একজন কারিগরি প্রশিক্ষণার্থী কর্মী ১১০০-১২০০ ডলার বেতন পাবেন। বাংলাদেশের জন্য এটা একটা সুবর্ণ সুযোগ। এই সুযোগ ১৬ আনা কাজে লাগাতে হবে। এটা প্রযুক্তির যুগ। এশিয়ায় জাপান ও চীন প্রযুক্তিতে বিশ্বের সেরা দ’টি দেশ। এই দেশ দুইটির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এখন খুব ভালো। বঙ্গবন্ধু ক্ষমতা গ্রহণ করেই বলেছিলেন, ‘ভিক্ষা করে কোনো জাতি বাঁচতে পারে না।’ এ কথার তাৎপর্য বিপুল। চীনের সঙ্গেও বঙ্গবন্ধু সম্পর্ক স্থাপনে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। আমরা কেবল শতবছর ধরে প্রযুক্তি আমদানি করবো কিংবা চীন-জাপান থেকে দ্রব্য আমদানি করবো, এটা হতে পারে না। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জনের সহায়তা গ্রহণ করা। জাপান এই সুযোগটি আমাদের দিচ্ছে। চীনের কাছ থেকেও দক্ষতা অর্জনের সহায়তা চাওয়া উচিত। আমরা প্রযুক্তিতে স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে চাই,দেশে বেকারত্ব রেখে শুধু খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ হলে চলবে না। প্রধানমন্ত্রী যে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছেন, এর তাৎপর্য পুরোটাই প্রযুক্তিগত। অধিক জনসংখ্যার দেশে সরকারি চাকুরির কোটা কমই থাকে। সে ক্ষেত্রে আমাদের জনশক্তি তথা শিক্ষিত বেকার যুবকদের দক্ষকর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। পেশাগত অনেক কুসংস্কার, সেকেলে চিন্তা, ভূয়া ইগো বিচূর্ণ করে যে কোনো টেকনিক্যাল বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করলে কারো ভাত-কাপড়ের অভাব হবে না। অধিক জনসংখ্যা ও বেকারত্বের স্ফিতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে উদ্যোক্তা তৈরির বিকল্প নেই।

চাকুরি অথবা মাছিমারা কেরানি হওয়ার প্রত্যাশা পরিত্যাগ করে চীন-জাপানের মতো আমাদের যুবশক্তিকে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রেরণা দিতে হবে, সরকারি সহযোগিতাও দিতে হবে। বর্তমান পৃথিবীতে অদক্ষ মানুষের কোনো মূল্য নেই। তাদের না খেয়ে মরতে হয়। যে কোনো টেকনিক্যাল বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করলে তার ভাত খায় পরে। সর্বোপরি আমরা জাপানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই তাদের দেশে আমাদের দেশ থেকে শিক্ষানবিস ও অদক্ষকর্মী নেবার জন্য। আমরা চাই এই উদ্যোগ সফল হোক।