প্রিন্ট সংস্করণ॥ সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৮, ০৭:১৭ পিএম
সিরাজদিখানে হাত বাড়ালেই মিলছে মরণনেশা ইয়াবা ট্যাবলেট। উপজেলার সর্বত্র এই মরণনেশার বিস্তার ঘটেছে। সেবনকারীদের কাছে ইয়াবা ট্যাবলেটের নাম “বাবা”। লাল ও গোলাপী রংয়ের এই ট্যাবলেটের নেশায় বুদ হয়ে পড়েছে যুব ও তরুণ সমাজ। গত ৬ মাসে সিরাজদিখান থানা পুলিশ ১১৪ জন ইয়াবা বিক্রেতাকে গ্রেফতার করেছে। উদ্ধার করে ৫ হাজার ৬শ ৩৬পিস ইয়াবা ট্যাবলেট। আর থানায় মাদক মামলা দায়ের করা হয় ৯৬ টি। গ্রেফতারকৃতদের বেশীর ভাগই খুচরা ইয়াবা বিক্রেতা।
তবে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে ইয়াবা ব্যবসার গডফাদাররা। সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন, গ্রাম, মহল্লাা, হাট-বাজার ঘুরে ইয়াবা বিস্তারের ভয়াবহতার চিত্র পাওয়া গেছে। আগে নির্দিষ্ট কিছুস্থানে ইয়াবা বেচাকেনা হলেও এখন তা আর নির্দিষ্ট কোনো স্থানে নেই। ‘কল অন ডেলিভারি’তে ইয়াবা মিলছে সিরাজদিখানের সর্বত্র। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, কতিপয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতা কেউই বাদ নেই ইয়াবার নীল ছোবল থেকে। সিরাজদিখান উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নের সবকয়টি ইউনিয়নে ইয়াবার সয়লাব তবে বালুরচর, মালখানগর, বাসাইল, কেয়াইন, শেখরনগর, রাজানগর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশী মাদক বেচা কেনা হয়। নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে, থানা পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোয়ারা নেন। টাকা না দিলে ইয়াবা ব্যবসায়ী কিংবা সেবনকারী ইয়াবাসহ আটক হলে থানা পুলিশ ইয়াবা কম-বেশী দেখিয়ে মাদক মামলা দিয়ে কোর্টে চালান দেন । সুশীল সমাজের মতে, পুলিশ, প্রশাসন দিয়ে পুরোপুরি মাদক বন্ধ করা সম্ভব নয়, মাদক বন্ধ করতে হলে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে মাদক সেবীর-বাবা-মা কিংবা অভিভাবককেই। অভিভাবক সচেতন হলেই মাদকসেবীর সংখ্যা কমে যাবে। বিক্রমপুর কেবি ডিগ্রি কেেলজের অধ্যক্ষ মো. সামছুল হক হাওলাদার বলেন, ‘মাদক বন্ধে প্রথমেই সচেতন হতে হবে বাবা-মাকেই, সন্তান যদি বাবা-মা এবং নিকট আত্মীয়স্বজনের নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং তারা যদি সন্তানের পিছনে একটু সময় ব্যয় করেন, সন্তান কোথায় যায়, কার সাথে থাকে এসমস্ত খোঁজ খবর যদি রাখতে পারেন তাহলেও মাদক অনেকটা কমে যাবে বলে আমার মনে হয়।’ এ ব্যাপারে সিরাজদীখান থানার ওসি আবুল কালাম জানান, ‘আমরা মাদকের সাথে কোন আপোষ করিনা, প্রতিমাসেই আটক করছি মামলা দিয়ে চালান করেছি কিন্তু প্রত্যেক অভিভাবক যদি একটু সচেত হতেন এবং থানা পুলিশকে সহযোগিতা করতেন, সামাজিক সচেতনতা এবং সামাজিক বন্ধন যদি আরো বৃদ্ধি করা যেতো তাহলে মাদক থেকে মুক্তি পাওয়া যেতো।’