ঢাকা
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,
আব্দুল্লাহ আল জাবেদ
অক্টোবর ৫, ২০২১, ০৮:৫৫ এএম
কতই বা বয়স? আনুমানিক ২০। চেহারায় সংগ্রামের চিহ্ন স্পষ্ট। বাবাকে হারিয়েছে ছোটবেলায়। লঞ্চ ডুবিতে বাবা মারা যাওয়ার পর কোথাও ঠাঁই হয়নি তার। জীবন কেটেছে পথে-ঘাটে। কখনো কাজ করেছে মানুষের বাসায়। জীবনে চলতে চলতে একসময় পরিচয় হয় এক গার্মেন্টস কর্মীর সাথে। পরে তাকে বিয়ে করে। কিছুদিন যেতে না যেতেই শুরু হয় স্বামীর নির্যাতন।
গত বছর করোনাকালে স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যায়। অন্যত্র বিয়ে করে সংসার গড়ে।নিজের কথা,আর অনাগত সন্তানের কথা চিন্তা করে শুরু করে সংগ্রামী জীবন। সিদ্ধান্ত নেয় রিকশা চালানোর। প্রথমে কেউ রিকশা দিতে রাজি না হলেও তার অনুনয় বিনয়ে মহাজন তাকে রিকশা চালানোর জন্য ভাড়া দেওয়া হয় এবং দৈনিক ২৫০/৩০০ টাকা জমা দিতে হয়।
এভাবেই শুরু হয় রিকশার প্যাডেলে তার সংগ্রামী জীবনের নতুন অধ্যায়।নিজের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে ফাতেমার।এই মেয়েই এখন তার সব। মেয়ের জন্যই নতুন করে যুদ্ধ শুরু করেছে ফাতেমা। পথে পথে রিকশা চালিয়ে জীবন ধারণের চেষ্টা করছে। এখন তার একটি রিকশা চাই।
বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জা পরম মমতায় পাশে দাঁড়িয়েছে ফাতেমার। তিনি তাকে একটি রিকশা দিয়েছেন। আজকের দিনটি ফাতেমার জীবনে এক বিশাল স্বপ্ন, বড় ধরণের প্রাপ্তি।
পুনাক সভানেত্রী জীবন যুদ্ধে সংগ্রামী এই নারীর হাতে তুলে দিয়েছে একটি নতুন রিকশা। আজ সকালে রাজধানীর রমনায় পুনাক কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে পুনাকর অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে ফাতেমার হাতে তুলে দেন নতুন রিকশা, দিয়েছেন উপহার সামগ্রী।
পুনাক সভানেত্রীর হাত থেকে রিকশা ও অন্যান্য উপহার পেয়ে আবেগাপ্লুত ফাতেমা কান্নায় ভেঙে পড়েন। পুনাক সভানেত্রী ফাতেমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, আজ থেকে তুমি আমার মেয়ে।
আমারসংবাদ/এএজে
