Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

বন্ধ দরজার পেছনের গল্প

জানুয়ারি ১০, ২০২১, ০৬:১৫ এএম


বন্ধ দরজার পেছনের গল্প

সবসময় আমরা সামনে যা দেখি তা কি সত্যি হয়। একটা মানুষ আমাদের সামনে যেমন তার ঘরের দরজার পেছনে সে কেমন? এই কথা কী কখনও ভেবে দেখি আমরা? নবা সব সময় কিন্তু এই রকম নয়। সব সময় আমাদের সামনে যা থাকে তা আমাদের চোখের আড়ালে ভিন্ন কিছুও হতে পারে। 

এক্ষেত্রে আয়না বাজি সিনেমার একটি গানের লাইন মনে পরে যায়, যা দেখছো তা , তা না না, সব দেখা,জানা না। আসলে কিন্তু গানের কথা গুলো বাস্তবতাকেই তুলে ধরে। কারণ অনেক সময় আমরা সামনে যা দেখি ভেতরে তার উল্টো গল্পটাই লুকিয়ে থাকে।  

একটি একটি ঘর, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। ঘরের দরজার বাইরের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের চিত্র আমাদের সামনে থাকলেও দরজার পেছনের গল্প সবারই অজানা। ঠিক যেমন বিক্রম চন্দ্র আর অনুরাধার গল্পটা। 

বিক্রম চন্দ্র শহরের একজন নামী দামি উকিল। তিনি শুধু তার কাজেই মাহির নন, সবার কাছে তিনি একজন আদর্শ ছেলে, আদর্শ স্বামী এবং আদর্শ বাবা।  সব মিলিয়ে তিনি একজন আদর্শ মানুষ। বিক্রমের স্ত্রী অনুরাধা মানসিক ভাবে অসুস্থ হওয়ায় সব সময় স্ত্রীর দিকে নজর তার। স্ত্রীর প্রতি বিক্রমের ভালোবাসা দেখে সবাই প্রতিনিয়তই মুগ্ধ হয়।

কিন্তু এই ভালোবাসার গল্পের মোড় ঘুরে যায় যখন এক রাতে বিক্রমের স্ত্রী অনুরাধার ছুরিকাঘাতে খুন হয়ে যায় বিক্রম। বিক্রমকে ছুড়ি মেরে নিজেই হাসপাতালে ফোন দেয় অনুরাধা। ঐ অবস্থাতেই বিক্রম এবং তার মেয়েকে একা ফেলে বাসা থেকে বের হয়ে যায় সে। পুলিশ এসে রক্তাত্ব ছুড়ি হাতে বিক্রমের মেয়ে এবং বিক্রমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর অনুরাধাকে না পাওয়া গেলেও, অনুরাধা নিজেই হাসপাতালে ছুটে আসে বিক্রমের কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য। পুলিশের কাছেও সে নিজেই বিক্রমকে হত্যা করার বিষয়টি মেনে নেই।

তবে অনুরাধার এই জবানবন্ধি মেনে নেন না তার পক্ষের উকিল মাধব মিসরা। তার কাছে এই পুরো ঘটনাটাই ডাল মে কুছ কালা হে নেহি , পুরো ডাল টাই যেন কালো।
 
তবে কী স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তৃতীয় কেউ আছে যার কারণে ভেবে চিন্তে এই খুন করা হয়েছে? কিংবা  অনুরাধার মানসিক অবস্থা আসলেই ঠিক নেই নাকি সে নাটক করছে যার ভুক্তভোগী হয়েছে বিক্রম। 
এই সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে হটস্টার এবং ডিসনি প্লাসের অরিজিনাল ওয়েব সিরিজ," ক্রিমিনাল জাস্টিজ; বিহাইন্ড দ্যা ক্লোজড ডোর-এ।"
  
ক্রিমিনাল জাস্টিজ এমন একটি সিরিজ যেখানে সব উত্তর আপনার দেওয়া রয়েছে, কিন্তু প্রশ্ন কী সেটা আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে।

খুব চালাকীর সাথে একটি খুনের গল্পেকে বন্ধ দরজার পেছনে  স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের গল্প এবং পরিবারে নারী পুরুষের যে বৈষম্য রয়েছে তা তুলে ধরা হয়েছে যা সত্যি প্রশংসার দাবিদার।

প্রতিটি জানা উত্তরের প্রশ্নের সন্ধান যখন আপনি পাবেন শুধু চমকে যাবেন। যেখানে গল্পের একটু ত্রুটি মনে হবে সেখানে অভিনেতা- অভিনেত্রীদের অভিনয় চমকে দেবে আপনাকে। সেই সাথে সাথে কারাগারের ভেতরের দৃশ্য দেখে গা শিউরে উঠবে আপনার।

তবে এইরকম মারাত্মক সিরিয়াস গল্পের মাঝেও পঙ্কজ ত্রিপাঠির অসাধারণ কমেডি আপনাকে এনে দিবে দুধ চায়ে আদার স্বাদ। নতুন বিবাহিত স্বামী-স্ত্রীর মিষ্টি মিষ্টি ঝগড়া, হাসি এনে দেবে আপনার মুখে।  
অনুরাধার চরিত্রের জন্য কৃতির মতোন কেউ যেন হতেই পারতো না। এছাড়াও যিশু সেনগুপ্ত, অনুপ্রিয়া এবং মিতার অভিনয়ে প্রতিটি দৃশ্যে মুগ্ধ হবেন আপনি।
 
প্রতিটি এপিসোড ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট লম্বা হলেও এক সেকেন্ডের জন্যেও বিরক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। প্রতিটা এপিসোডের শেষে এমন টুইস্ট রয়েছে যা পরের এপিসোড দেখতে বাধ্য করবে আপনাকে। 

সিনেমার টাইটেলের "বিহাইন্ড দ্যা ক্লোজড ডোর" এই লাইন যথার্থ ব্যবহার হয়েছে পুরো সিনেমায়।
  
সব মিলিয়ে ক্রিমিনাল জাস্টিজ; বিহাইন্ড দ্যা ক্লোজড ডোর একটি  দরজার সাজানো পর্দার পেছনে লুকিয়ে থাকা অন্ধকার ঘরের গল্প। যা লজ্জা কিংবা ভয়ে সব সময় লুকিয়েই থাকে শুধু বন্ধ দরজার ভেতরেই।      

আমারসংবাদ/এডি