Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

নারী উদ্যোক্তা আনিকার সফলতার গল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২১, ০১:১৫ পিএম


নারী উদ্যোক্তা আনিকার সফলতার গল্প

পৃথিবীতে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর’। নারী ও পুরুষকে এভাবেই দেখেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। বর্তমানে নারীরা কোনো কাজেই পিছিয়ে নেই। তারা তাদের নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। ঘরে বাইরে সব পেশায় নিজেদের নিয়োজিত করছে। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা। অনলাইন ব্যবসায়ের প্রবর্তনের ফলে নারীরা আরও বেশি পরিমাণে সফল উদ্যোক্তায় পরিণত হচ্ছে। তেমনি একজন সুমাইয়া আরেফিন আনিকা।

ব্যবসায়ী বাবা ও গৃহিণী মায়ের মেয়ে আনিকা, জন্ম ও বেড়ে ওঠা টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলায়। গোপালপুর থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাশের পর ২০১৯ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় (উত্তরা ইউনিভার্সিটি) ভর্তি হন। পড়ছেন ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি নিয়ে।  

করোনাকালে পড়াশুনার মধ্যে যেটুকু সময় অবশিষ্ট থাকে সেটুকু অলসভাবে তিনি কাটাতে চাননি সেই কারণেই অনলাইনে নারী ও শিশুদের পণ্য নিয়ে ব্যবসার চিন্তা করেন। সেই চিন্তার থেকে ফেসবুকে ‘আঁটসাঁট’ নামে একটা পেইজ খোলেন এবং সেই পেইজে নারী ও শিশুদের বিভিন্ন পোশাকের ছবি আপলোড করেন। এর পর একটি দুটি করে অর্ডার আসতে থাকে। এখন তার অনলাইন শপে প্রতিদিনই পণ্যের ক্রেতা বাড়ছে। 

সুমাইয়া আরিফিন আনিকা ফেসবুক পেইজ ‘আঁটসাঁট’ ভোক্তাদের রুচি ও পছন্দ অনুযায়ী পণ্য এনে থাকেন। পণ্যের মধ্যে রয়েছে টাঙ্গাইলের শাড়ি, থ্রিপিস, বেডসিট, ইত্যাদি। রয়েছে জুয়েলারি পণ্যও। 

দাম ও মানের কারণে অনলাইনের পাশাপাশি নিজ এলাকায় তিনি সাধারণের কাছে অল্প সময়ে ভালো অবস্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছেন।

নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার তাগিদ থেকে ৮ মাস আগে ব্যবসায়ের মুলধন ১০,০০০ টাকা হলেও বর্তমানে তার ব্যবসায়ের মূলধন বহুগুণে বেড়েছে। নিজস্ব পরিমণ্ডলে তিনি এখন একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত। স্বাধীনভাবে কাজ করে মেধা ও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটানোর চিন্তা থেকে উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা।

একজন উদ্যোক্তার প্রথম এবং প্রধান কাজ হলো স্বপ্ন দেখা। একজন ব্যবসায়ী ও একজন উদ্যোক্তার মধ্যে এটাই পার্থক্য। স্বপ্নবাজ আনিকা তার মনের লালিত স্বপ্ন পূরণে কাজ করে যাচ্ছেন।

এমন উদ্যোগ সম্পর্কে সুমাইয়া আরিফিন আনিকা বলেন, আমার স্বপ্ন ছিল একজন উদ্যোক্তা হওয়ার। সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি সঙ্গে পরিশ্রম করে যাচ্ছি। শুরুটা অনেক সহজ না হলেও পরিবার এবং বিশেষ একজন বন্ধুর সহযোগিতায় আমি এগিয়ে চলতে সাহস পেয়েছি। পড়াশুনার পাশাপাশি নিজে কিছু একটা করার দৃঢ় ইচ্ছে থেকেই মাথায় আসে অনলাইন ব্যবসার প্ল্যান। তবে এ কাজে সব সময় আমার মা-বাবা অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। সেই সঙ্গে বিশেষ মানুষটির সাপোর্টের কথাও জানান তিনি।

বর্তমান ব্যবসার অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ভালো কেনাবেচা চলছে। তবে অন্যান্য এলাকা থেকেও নিজ এলাকায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তার অনলাইন পেজ ‘আঁটসাঁট’। ভবিষ্যতে তিনি একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত দেখতে চান।

নতুন নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আমার পরামর্শ- স্বাবলম্বী হয়ে বেঁচে থাকার স্বার্থকতাটাই আলাদা। তাই বলবো, একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হলে আপনাকে অবশ্যই ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে মাঠে নেমে পড়তে হবে। প্রতিবন্ধকতা থাকবেই, তবে ইচ্ছা থাকলে তা ওভারকাম করা সম্ভব। স্বপ্ন, সামান্য পুঁজি আর পরিশ্রম থাকলেই অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া যায়।

‘ভবিষ্যতে আমার ‘আঁটসাঁট’র প্রোডাক্ট সারাদেশসহ বিদেশে ছড়িয়ে দিতে চাই।’ যোগ করেন আনিকা।

আমারসংবাদ/কেএস