Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

উত্তাপ নেই মসলার বাজারে

জুলাই ১৩, ২০২১, ০৯:৩৫ এএম


উত্তাপ নেই মসলার বাজারে

এক সপ্তাহ পর ঈদুল আযহা। চলমান কঠোর লকডাউনের কারণে মসলার বাজারে এখনও উত্তাপ লাগেনি। চাহিদা কম থাকায় মসলার দাম তেমন বাড়েনি, গত দুই/তিন মাস ধরে পাইকারী ও খুচরা বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে মসলার বাজার। ফলে আগের দামই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মসলা। যেখানে ঈদের আগে গরম মসলার বাজারে থাকে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়; সেখানে এবছর ক্রেতাদের ভিড় নেই বললেই চলে।

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর কাওরান বাজারের মসলা জাতীয় পণ্যের পাইকারি দোকানগুলোতে এমন চিত্র দেখা যায়। চাহিদা কম বলে মসলার দাম রয়েছে স্থিতিশীল। প্রতিবছর কোরবানির ঈদে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মসলা কিনতে রাজধানীর কাওরান বাজারে আসে ক্রেতারা। লকডাউনের কারণে ঢাকার বাহির থেকে লোকজন আসতে না পারার কারণেও বিক্রি হচ্ছে কম। শুধু মাত্র খুচরা ব্যবসায়ীরা পণ্য কিনছেন। ব্যক্তিপর্যায়ে মসলা কেনার তেমন একটা তোরজোর লক্ষ্য করা যায়নি।

কাওরান বাজারে প্রতিকেজি জিরা প্রকারভেদে পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা, এলাচ ২২০০- ৩৬০০ টাকা, দারুচিনি ৩৫০-৪৫০, লবঙ্গ ১০০০-১১০০ টাকা, জায়ফল ৭৫০, গোলমরিচ সাদা ৮০০, কালো ৪৪০, কিসমিস ২৫০- ৩০০, আলুর বোখারা ৫০০, চিনা বাদাম ১০০, আখরোট প্রতিকেজি ৯০০ টাকা, কাঠবাদাম ৬৫০, কাজু বাদাম ৬০০ থেকে ৭৫০, পেস্তা বাদাম ১২০০ থেকে ১৬০০, শাহীজিরা ২২০-২৫০ টাকা, মিষ্টিজিরা ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

[media type="image" fid="132590" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

কাওরান বাজারের ইয়াসিন স্টোরের ম্যানেজার মো: আলী বলেন, লকডাউনের পর থেকে ক্রেতা একেবারেই কমে গেছে। যেখানে প্রতিবছর ঈদ আসলে ক্রেতাদের ভিড় থাকে, ঠিক মতো সামাল দেয়া যায় না আর আজ ক্রেতা নেই বললেই চলে। আগে খুচরা দোকানদাররা মসলা কেজি কেজি নিতো আর এখন ৫০০ গ্রাম করে নিচ্ছে। কারণ তাদেরও বিক্রি কমে গেছে অর্ধেকের বেশি। লকডাউনে আমাদের ব্যবসায়ীদের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। দোকানের কর্মচারীদেরও বাদ দিয়ে দিতে হইছে। বেতন দেয়ার মতোও অবস্থা নাই! 

মসলা ব্যবসায়ী আমানুল্লাহ বলেন, বেচাকেনা একদমই নেই। আগে ঈদ আসলে বেচাকেনা করেই কুল পেতাম না আর এখন দোকান খুলে বসে থাকি। হাতে গোনা দুই একটা ক্রেতা। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের তেমন কোন উপস্থিতি নাই বাজারে। লকডাউনে সবারই আয়রোজগার কমছে। অনেক মানুষ এবার কোরবানি দিতে পারবে না। মসলার দাম কিছুটা কম। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে যেহেতু চাহিদা কমে গেছে। 

কাওরান বাজার এলাকায় শহিদুল্লাহ নামের এক ক্রেতার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, লকডাউনে রোজগার কমে গেছে। বাসা থেকে বের হওয়া যায় নাই। যেই কয়টা আয় ছিল তা দিয়ে ঘর ভাড়া দিয়ে সংসার চালাইতেই কষ্ট হয়ে যায়। সামনে কোরবানির ঈদ। আগের মতো আর সেই উপার্জন নাই। তাই কোরবানির জন্য অল্প করে মসলা কিনতে হইছে।

[media type="image" fid="132591" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

নারায়ণগঞ্জ থেকে মসলা কিনতে কাওরান বাজারে এসেছেন খুচরা মসলা ব্যবসায়ী তামিম শেখ। তিনি বলেন, লকডাউনে ব্যবসা শেষ। মসলা কিনতে ঢাকায় আসতে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০০ টাকা। লকডাউনের আগে খরচ হতো ১০০ টাকা। আগে বাসে করে মসলা নিতাম এতে ২শ' থেকে ৩শ' টাকা দিলেই হতো। এখন ভ্যান ভাড়া করতে হয় এক থেকে দেড় হাজার টাকা দিয়ে। সামনে ঈদ তাই কিছু মসলা নিতে এসেছি। আগে প্রতিদিন ৪-৫ কেজি মসলা বিক্রি হতো এখন সেখানে ২ কেজি বিক্রি হচ্ছে। যে মানুষ আগে আধা কেজি মসলা নিতো সে এখন ১০০ গ্রাম মসলা নিচ্ছে।

বাংলাদেশ পাইকারী গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এনায়েত উল্লাহ আমার সংবাদকে বলেন, লকডাউনের কারণ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরা ঢাকায় আসতে পারছে না। ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর চাহিদা বেড়ে গেলে মসলার দামও বাড়ে। কিন্তু গত দুই বছর বাড়েনি। এবছর দাম স্থিতিশীল রয়েছে। এছাড়া সব ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান, বিয়ে, জন্মদিন সব কিছু বন্ধ। ফলে চাহিদা কমেছে মসলার।

আমারসংবাদ/এমএস