জানুয়ারি ১৬, ২০২২, ০১:৫০ পিএম
জমে উঠেছে বাণিজ্যমেলা। গত শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) ছুঁটির দিনে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় দেখা যায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। সকাল থেকেই ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে আসতে শুরু করে মানুষ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় মেলা প্রাঙ্গন।
দর্শনার্থীদের মধ্যে দেখা যায় উৎসবের আমেজ। ছবি তোলা, ফুচকা খাওয়া ও ঘুরে ঘুরে স্টল দেখা। দলবেধে আসা দর্শণার্থীরা বেশি মজা করছেন। পরিবার নিয়ে যারা এসেছেন তারাও কম যাননি। স্মৃতি ধরে রাখতে মেলার বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড দিচ্ছেন। অনেকে মেলা থেকে লাইভে গিয়ে বন্ধুদেরকে ঘুরে ঘুরে দেখাচ্ছেন মেলার বিভিন্ন স্টল।
কিন্তু এত মানুষের মধ্যেও বেচাবিক্রি নেই। বিক্রেতারা বলছেন, ঢাকার মেলার তুলনায় বিক্রির হার ৩০ শতাংশ। বিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে বিক্রেতারা বলেন, ‘দেখেন কারো হাতে ব্যাগ নেই। অর্থাৎ কেউ কিছু কিনেনি। সবাই ঘুরতে এসেছেন।’
মিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের একটি স্টলের বিক্রেতা মো. খোকন বলেন, ‘কোন বিক্রি নেই শুধু ঘুরাঘুরি। আমার দোকান একেবারে সামনে। মেয়েদের বাহারি ডিজাইনের পাকিস্তানি ব্রান্ডের জামাকাপড় নিয়ে বসে আছি। আসছে দেখছে চলে যাচ্ছে। আমার দোকানেই বিক্রি নেই অন্যদের কি অবস্থা বুঝেনইতো।’
একই প্যাভেলিয়নের ক্রোকারিজ সামগ্রী বিক্রেতা মিজান বলেন, বিক্রি অনেক কম। সাধারণত মেলায় আমাদের স্টলের মালামাল বেশি বিক্রি হয়। এখানেতো লোকজন মাল চিনেই না। আমার ফাইবারের মালামালকে তারা বলছে প্লাস্টিকের। আগের মেলায় এই সময়ে দেড় থেকে ২ লাখ টাকা বিক্রি হতো। কিন্তু আজ হয়তো ৩০ থেকে ৪০ হাজার হবে।
আরএফএলের রয়েছে দুটি স্টল। একটি প্লাস্টিক আরেকটি নন-প্লাস্টিক। মেলা উপলক্ষে বিশেষ ছাড় থাকায় ভাল বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু বিক্রি একেবারেই কম। স্টলের হিসাব রক্ষক বলেন, ঢাকার মেলার চেয়ে অর্ধেকও বিক্রি হচ্ছে না।
খেলনা ও ছোট ছোট বিভিন্ন জিনিসের স্টলের বিক্রেতা আশ্রাফুল বলেন, আগের মেলার তুলনায় বিক্রির হার ৩০ শতাংশ। এই দিনে ঢাকার মেলায় ১ থেকে দেড় লাখ টাকা বিক্রি হত। কিন্তু আজ হয়ত ৩০ থেকে ৪০ হাজার হবে। আজ ছুটির দিন তাই একটু বেশি বিক্রি অন্য দিন ২০ থেকে ২৫ হাজরের বেশি হয়না।
নারয়ণগঞ্জের আড়াই হাজার থেকে এসেছেন রাকিব, মাসুম ও রুবেল। তারা সবাই একই কলেজের শিক্ষার্থী। মেলায় এসেছেন ঘুরে ঘুরে দেখতে ও ছবি তুলতে। কিছু কিনেছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন,‘শুধু আইসক্রিম কিনে খেয়েছি। যাওয়ার সময় বাসার জন্য বিস্কুট কিনে নিয়ে যাব।’
গার্মেন্টসকর্মী রিপা বেগম। এসেছেন মুন্সিগঞ্জ থেকে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলায় এত সুন্দর মেলা হচ্ছে না এসে পারি বলেন? কিন্তু সব জিনিসের দাম বেশি, তাই কিছু কিনিনাই।’
নাসরিন আক্তার এসেছেন মিরপুর থেকে। তিনি বলেন, প্রতি বছরই মেলা থেকে আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন জিনিস কিনি। কিন্তু এবার আসার সময় যে ভোগান্তি হয়েছে তাই কিছু কিনিনি। কিভাবে নিয়ে যাব এতদুর বলেন?
আমারসংবাদ/আরএইচ