Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

এবার বৃত্তিও দেবে না সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ২৫, ২০২০, ১২:৫৩ পিএম


এবার বৃত্তিও দেবে না সরকার

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ না কমায় চলতি বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা (পিইসি) ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা হবে না।

প্রতিবছর প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি দেয়া হলেও এবার এই পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ায় সেই বৃত্তি দেবে না সরকার।

তবে প্রাথমিকের সব শিক্ষার্থীর জন্য উপবৃত্তি কার্যক্রম আগের মতোই চলবে।

মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম-আল-হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, সমাপনী পরীক্ষার ভিত্তিতে যে বৃত্তি দেয়া হয় সেটা এ বছর দেয়া সম্ভব হবে না।

প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ৮২ হাজার ৫০০ জন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হয়। এরমধ্যে ৩৩ হাজার জনকে ট্যালেন্টপুলে এবং ৪৯ হাজার ৫০০ জনকে সাধারণ বৃত্তি দেয়া হয়।

ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিপ্রাপ্তদের মাসে ৩০০ টাকা এবং সাধারণ বৃত্তিপ্রাপ্তদের মাসে ২২৫ টাকা করে দেয়া হয়। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত তিন বছর বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা বৃত্তির টাকা পায়।

অর্থাৎ এবার প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে আগামী ৩ বছরে সরকারের প্রায় ৮০ কোটি টাকা খরচ হওয়ার কথা ছিল।

আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়ার জন্য আলাদা পরীক্ষা নেয়া হলেও ২০১০ সালে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের সমাপনী পরীক্ষা চালুর পর এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে উপজেলাভিত্তিক মেধাবৃত্তি দেয়া হচ্ছে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীকে মাসে ৭৫ টাকা এবং প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাসে ১৫০ টাকা করে উপবৃত্তি দেয়া হয়।

এছাড়া যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি খোলা হয়েছে সেসব বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাসে ২০০ টাকা করে উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে।

এই উপবৃত্তি শিক্ষার্থীরা আগের মতোই পাবে।

এর আগে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় গত ১৯ আগস্ট প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি প্রস্তাবনার সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছিল। ওই প্রস্তাবনায় বলা হয়েছিল, চলতি বছর ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত ১৩১ কর্মদিবস নির্ধারণ করা হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে এ পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ দিন বিষয়ভিত্তিক পাঠদান দেওয়ার সুযোগ হয়েছে।

১৮ মার্চ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় মোট ৭১ কার্যদিবস বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকছে। ঘরে বসে শিখি শিরোনামে সংসদ টেলিভিশনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু থাকলেও পঞ্চম শ্রেণির ৪০৬টি স্বাভাবিক পাঠদান সম্ভব হবে না। আবার যেসব শিক্ষার্থীর বাসায় টেলিভিশন নেই, তাদের এই শিক্ষা ব্যবস্থার আওতায় আনা যায়নি।

প্রস্তাবে আরো বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী পঞ্চম শ্রেণির প্রায় ৫৬ শতাংশ শিক্ষার্থী টেলিভিশন শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় রয়েছে। সে বিবেচনায় ১২ আগস্ট থেকে বাংলাদেশ বেতারে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এতে ৯৭ শতাংশ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী মোবাইল ও রেডিও’র মাধ্যমে পাঠ সুবিধা নিতে পারছে।

অন্যদিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষকেরা যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা পিইসি প্রস্তাবের সার সংক্ষেপ পাঠিয়েছিলাম। তাতে সম্মতি পাওয়া গেছে।  এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আমারসংবাদ/এআই