Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪,

চবিতে আটকে থাকা পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণায় শিক্ষার্থীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

নভেম্বর ২৯, ২০২০, ১০:২০ এএম


চবিতে আটকে থাকা পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণায় শিক্ষার্থীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

করোনা সংক্রমণের পর মার্চ মাসের শেষের দিকে বন্ধ হয়ে যায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। এতে আটকে যায় বিভিন্ন বিভাগের চলমান পরীক্ষাগুলো। এ সব পরীক্ষা নেয়ার দাবি করে আসছিল আটকে থাকা শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি ও সেসনজটের বিষয় মাথায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। সর্বশেষ গত ১৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যলয়ের একডেমিক কাউন্সিলে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় আটকে থাকা বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের ঘোষণার প্রায় ১৫দিন পেরিয়ে গেলেও পরীক্ষা নিতে দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ নেয়নি বিভাগগুলো। পরীক্ষা নিতে এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে দু’দফা আল্টিমেটাম। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর পৃথক চারটি স্মারকলিপিও প্রদান করেন। 

আল্টিমেটাম পেরিয়ে গেলেও অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, পদার্থ, রসায়ন, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা, সমাজতত্ত্ব ও আইন, রাজনীতি বিজ্ঞান, লোক প্রশাসন, সংস্কৃত, ফিন্যান্স, হিসাব বিজ্ঞান ও মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা ও গবেষণা সহ বিভিন্ন বিভাগে পরীক্ষা নিতে কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি।

এসব বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, ‘দেশের সবকিছু স্বাভাবিক করে দিছে সরকার। শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রেখে লাভ কি। এমনিতে আমাদের বিভাগগুলোতে সেসনজট লেগেই আছে। তার উপর করোনার কারণে প্রায় আরো এক বছর পিছিয়ে গেছি আমরা। বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও কেন বাস্তবায়ন করছে না কিছু বুঝতে পারছি না।’

তবে কয়েকটা পরীক্ষা দিয়ে আটকে থাকা যাওয়া শিক্ষার্থীরা কিংবা করোনার আগে যেসব শিক্ষার্থীদের ক্লাস সম্পন্ন হয়েছিল তারা স্বাগত জানালেও যাদের অনলাইনে ক্লাস সম্পন্ন করে পরীক্ষা দিতে হবে তাদের অনেকে পরীক্ষা নেয়ার বিরোধিতা করেন। 

তারা বলছেন, অনলাইন ক্লাসে সবাই সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে নাই। এখন পরীক্ষা নিলে তাদের অনেকে পিছিয়ে পড়বে। 

শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের শিক্ষার্থী জয় বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা শেষ হয়েছিল করোনার আগে। পরীক্ষা শেষে আমাদের ৬ মাস ইন্টার্ন করতে হয়। করোনায় বিভিন্ন স্কুল বন্ধ থাকায় আমাদের ইন্টার্ন বন্ধ। বিশ্ববিদ্যালয় খোলে দিলে স্যারদের কাছে আমরা কোন দাবি-দাওয়া দিতে পারতাম। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রেখে শুধু পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণায় আমাদের কি লাভ হবে?’

আবার হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে কিছু শিক্ষার্থী জানান, ‘শুধু পরীক্ষা দেয়ার জন্য আমাদের নতুন করে বাসা কিংবা কটেজ ভাড়া নিতে হবে। করোনায় আমাদের এখন প্রায় সবার টিউশনি বন্ধ। এমনিতে নিজ গ্রামে থেকে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখন আবার বাসা কিংবা কটেজ ভাড়া করে পরীক্ষা দিতে হলে আমরা কষ্টে পড়ে যাব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনায় আটকে থাকা পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাই এসময় আবাসিক হলগুলো খোলা থাকবে না। কয়েকদিনের মধ্যে পরীক্ষা নেয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। বিভাগীয় সভাপতিরা শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে সুবিধামতো সময়ে পরীক্ষার রুটিন দিবেন।’

আমারসংবাদ/কেএস