ঢাবি প্রতিনিধি
মার্চ ২৩, ২০২১, ০২:২০ পিএম
দেখতে দেখতে ষষ্ঠ দিন পার করল বাঙালীর প্রাণের অমর একুশে বইমেলা। দিন বাড়ার সাথে সাথে মেলা প্রাঙ্গনে বাড়ছে পাঠকের উপস্থিতি। আয়োজকরা জানিয়েছেন, করোনা প্রকোপ বৃদ্ধি ও গরম তাপমাত্রা এবারের বইমেলার প্রধান বাধা। তারপরেও মেলায় প্রতি ভালবাসার টানে পাঠকরা মেলা প্রাঙ্গনে উপস্থিত হচ্ছেন। স্টল ঘুরে ঘুরে দেখছেন বই। ভাল লাগলে কিনে নিচ্ছেন।
তবে, এবারের বইমেলায় বেশি বিক্রি হচ্ছে গল্প উপন্যাস সাইন্স ফিকশন এমনটি জানিয়েছে প্রকাশনীতে কর্মরত ব্যক্তিরা। তারা জানায়, এবারের বইমেলায় দেশ সেরা লেখকের সব বই এখনো পৌঁছায়নি। যার ফলে অনেক পাঠককে খালি হাতে ফেরত যেতে হচ্ছে। এবারের বইমেলায় এখন পর্যন্ত গল্প উপন্যাস বেশি চলছে বলে তারা জানিয়েছে।
[media type="image" fid="116534" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]
এ বিষয়ে তাম্রলিপি প্রকাশনীর বিক্রেতা ফেরদৌস আফসানা বলেন, এবারের বইমেলায় পাঠকরা বেশি চাচ্ছে গল্প উপন্যাস সাইন্স ফিকশন। বিশেষ করে আমাদের এখানে জাফর ইকবাল স্যারের বইগুলো অনেক ভাল চলছে। এখনো অনেক লেখকের বই আসেনি। তবে, পাঠকরা খোঁজ করেছেন।
মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) ছিলো মেলার ষষ্ঠ দিন। মেলা শুরু হল বিকাল ৩টা থেকে। এদিন বিকালে মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের তুলনায় মেলা প্রাঙ্গনে পাঠক বেড়েছে। তবে, মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। অনেক পাঠক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিক্রেতার মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। অনেক লেখক মাস্কছাড়া পাঠকদের সাথে ছবি তুলতে দেখা গেছে।
[media type="image" fid="116537" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]
এ বিষয়ে সদরঘাট থেকে আসা ইসরাত জাহান বলেন, এ বছর প্রথম বইমেলায় আসছি। প্রিয় লেখকের নতুন বই না পেয়ে বই কিনিনি। তবে, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবারের বইমেলা ব্যতিক্রম মনে হচ্ছে। মেলায় স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। যা আমাদের জন্য ক্ষতিকর।
মূল মঞ্চের আয়োজন: বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: মুক্তিযুদ্ধ ও নারী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মনিরুজ্জামান শাহীন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মোহাম্মদ জাকীর হোসেন এবং একেএম জসীমউদ্দীন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সেলিনা হোসেন।
[media type="image" fid="116538" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]
এ সময় প্রাবন্ধিক বলেন, সাধারণত মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকাকে দেখা হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার হিসেবে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে আমাদের দেশে নারীসমাজের রয়েছে অসাধারণ ভূমিকা। দেশমাতৃকার টানে জীবন বাজি রেখে তাঁদের অনেকে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রাথমিক প্রতিরোধ ও রণাঙ্গণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। সংগঠকের দায়িত্ব পালন, মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিপর্বে প্রশিক্ষণ গ্রহণ, মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দান, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা, মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী হিসেবে থাকা, শত্রুশিবিরের তথ্য সংগ্রহ করা, মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র লুকিয়ে রাখা-সহ বিভিন্ন ভূমিকা পালন করেন। নারীদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভূমিকা ছাড়া মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভ সহজ ছিল না।
আলোচকবৃন্দ বলেন, বাংলার আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাসে নারীর প্রতিবাদী, বিদ্রোহী ও যোদ্ধা-রূপ নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধেও নারীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণ স্বাধীনতার চূড়ান্ত লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যায় বাঙালি জাতিকে। লড়াইয়ে অংশগ্রহণের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি পর্যায়ে নারীর ভূমিকা ছিল অনন্য। মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়, খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা ছাড়াও দেশে-বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থন গড়ে তোলায় নারীরা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। মুক্তিযুদ্ধে নারীর অসীম সাহসিকতা ও বহুমাত্রিক ভূমিকার কথা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন মোহিত কামাল, জাহেদ সারওয়ার এবং অনন্ত উজ্জ্বল। গতকাল মেলায় নতুন বই এসেছে ১১৮টি।
[media type="image" fid="116539" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]
আজকের অনুষ্ঠানসূচি:
বুধবার (২৪ মার্চ) অমর একুশে বইমেলার ৭ম দিন। মেলা চলবে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: মুক্তিযুদ্ধে সংবাদ সাময়িকপত্র শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন জাফর ওয়াজেদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মোহাম্মদ সেলিম, মো. এমরান জাহান এবং কুতুব আজাদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ।
আমারসংবাদ/কেএস