জবি প্রতিনিধি
জানুয়ারি ১৪, ২০২২, ১১:৩৫ এএম
প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে বন্ধ রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক ছাত্রকেন্দ্র (টিএসসি)। এ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে নানা প্রশ্ন। টিএসসির সংস্কার কিংবা সম্প্রসারণ প্রসঙ্গে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তুমুল প্রতিক্রিয়ায় বিষয়টি অনেকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। কি হবে জবি টিএসসি'র ভবিষ্যত? কি করা হবে এখানে? এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিংহভাগ শিক্ষার্থী টিএসসি থেকে খাবার খেতেন। টিএসসির দোকান পাট বন্ধ করে দেওয়াতে ভোগান্তি বেড়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। সেখানকার দোকানদারদের কপালেও পরেছে চিন্তার ভাঁজ। বিশ্ববিদ্যালেয়ের একমাত্র ক্যাফেটিরিয়া সামাল দিতে পারছেন শিক্ষার্থীদের খাবারের চাপ। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে একটাই প্রশ্ন কবে চালু হবে টিএসসি।
জানা যায়, ২০১৪ সালের হল আন্দোলনের সময় সমবায় ব্যাংকের মালিকানা থেকে জমিটি দখল করে শিক্ষার্থীরা। এরপর থেকে জায়গাটি টিএসসি হিসেবে দাবি করে আসছে তারা। ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক জায়গাটি কয়েকবার বেদখল হলেও সর্বশেষ ২০১৭ সালের শুরুতে আবারো দখলমুক্ত করে শিক্ষার্থীরা। এর পর স্বাভাবিক ভাবে চললেও প্রায় এক সপ্তাহ থেকে টিএসসি টি বন্ধ করে দিয়েছে জবি শাখা ছাত্রলীগ। টিএসসিতে প্রায় ২৫ টির মতো দোকান ছিলো। এগুলি দোকানে চা, সিংঙ্গারা, সমুচা এবং ভাত-মাছ ও মাংস পাওয়া যেত। কিন্তু বেশিরভাগ দোকানেই ছিলোনা শিক্ষার্থীদের বসার জন্য কোনো সু-ব্যবস্থা। পরিবেশন করা হতো নিম্নমানের খাবার।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী নিয়াজুর রহমান লিমন বলেন, জগন্নাথে পর্যাপ্ত যায়গা না থাকাতে একটি মাত্র ক্যান্টিন, সেখানেও ভালো মানের খাবার পাওয়া যায় না। তাই শিক্ষার্থীরা টিএসসি এসে আড্ডা দেয়, নাস্তা খায়। টিএসসি এখন বন্ধ করে দেওয়াতে আমাদের জন্য খুবই সমস্যা হয়েছে। আসলে কি করা হবে এখানে? টিএসসিতে কি আগের মত আড্ডা দিতে পারব ? খাইতে পারব? এমন প্রশ্ন আমার মনে।
জবি ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, এই জায়গাটার নাম আমরাই টিএসসি রেখেছি। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে 'কনসার্ন্ট ফর টিএসসি' নামে একটি প্রোগ্রাম করি; মূলত তখন থেকেই জবি টিএসসির যাত্রা শুরু। এর পর ছাত্র ইউনিয়ন সেখানে কয়েকটি গাছ লাগায়, যা আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগ এর আগেও এই জায়গাটি নিয়ে ব্যবসা করেছে; বর্তমান ছাত্রলীগও এমনটিই করবে। এটা নতুন বিষয় নয়। আমরা চাই জায়গাটি সুন্দর ও গোছানো হবে। এলাকার মানুষও সেখানে আসবে, সবার সাথে আমাদের সম্পর্ক ঠিক থাকবে।
এ বিষয়ে জবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসাইন বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন করে সাজানো হবে। জায়গাটি নতুন করে গড়ার প্রচেষ্টা করছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। এখানে দোকান পাট থাকবে সুনির্দিষ্ট , বসার জন্য মনোরম পরিবেশ তৈরি করা হবে। সব মিলিয়ে আমরা যাতে একটি টিএসসি বলতে পারি সেভাবে সাজাবো। তাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানির কথা চিন্তা করে, চাঁদাবাজি বন্ধ করতে গত রোববার (৯ জানুয়ারি) টিএসসির সব দোকান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকাতে ব্যাংকের জায়গাটি আমরা টিএসসি হিসেবে ব্যবহার করি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে আমরা টিএসসি বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে চাচ্ছি। আশা করছি ভালো কিছু করতে পারব। এখানে ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে কেউ চাঁদাবাজি করতে পারবে না। আর খাবার এর দাম ও কমানো হবে।
আমারসংবাদ/কেএস