আরমান হাসান, জবি প্রতিনিধি
জানুয়ারি ১৫, ২০২২, ০১:৩০ পিএম
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে শীর্ষ স্থানে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের দুঃখের অন্ত নেই। চাইলেও তারা এই কঠিন যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতে পারেনা।দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ভর্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ভর্তি হয়েও তারা পাচ্ছেনা তেমন সুযোগ-সুবিধা।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সব সুবিধা থাকা দরকার যেমন পরিবহন, আবাসন, বড় ও পরিছ্ন্ন ক্যাম্পাস, ক্যান্টিন, পর্যাপ্ত বই সমূদ্ধ লাইব্ররী , গবেষণাগার, ক্লাসরুম ইত্যাদি সহ যেসকল সে সব সুযোগ সুবিধা থাবা দরকার তার সিকি টুকুও পায়না এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আবার এদিকে শিক্ষকরা ক্লাস রুটিন না মেনে শিক্ষকদের ইচ্ছামত ক্লাস নেবার অভিযোগ করে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষকরা তাদের ইচ্ছানুযায়ী ক্লাস নেয়ার ফলে করোনার মাঝেও বাধ্য হয়েই সারাদিন ক্যাম্পাসে থাকতে হচ্ছে। সকালের ক্লাস অপেক্ষা করতে করতে বিকেলে করতে হয়। আবার কোনদিন ক্লাস না করেই ফিরে যেতে হয়। শিক্ষকদের স্বেচ্ছাচারিতায় অতিষ্ঠ শিক্ষাথীরা রেজাল্ট খারাপের ভয়ে কোন কিছু বলার সাহস পায়না।
তাই মুখ বুজে সহ্য করতে বাধ্য হচ্ছে তারা। ক্লাসরুম সংকট আর সময়মত ক্লাস না হওয়ায় ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকতে হয় তাদের। সময়ের মূল্য ছাত্রদের থাকলেও শিক্ষকরা তাদের ইচ্ছামত করেই দিন কাটান বলে অভিযোগ তাদের। আবার ক্লাসে দেরিতে আসলে ক্লাসে ঢুকা নিষেধ।
সকালের ক্লাস বিকেলে না হলে ক্লাস না নিয়েই বলে চলে যাও। শিক্ষার্থীরা না পারে একাডেমিক ক্লাসে মন দিতে না পারে চাকুরির পড়া পড়তে। এভাবে তাড়া উভয় সংকটের মধ্যেই দিন পার করছে বলে অভিযোগ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভৃগোল ও পরিবেশ বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী বলেন, 'আমরা কাউকে বলেতেও পারছিনা আর শিক্ষকদের বুঝাতেও পারছি না।
হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, শিক্ষকরা যদি এমন করে তাহলে আমরা কি শিখবো? তারা আমাদের সময়কে নষ্ট করছে আর এভাবে আমাদের জীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় আমরা পিছিয়ে পড়বো। ভার্সিটি জীবনের শেষ মুহূর্তেও যদি এভাবে চলে তাহলে আমরা কিভাবে চাকরির জন্য নিজেকে প্রস্তুত করবো?
অ্যানথ্রোপলোজি বিভাগের আবু রায়হান বলেন, 'রুটিনে দুটি ক্লাস থাকলেও কোনদিন একটাও হয়না। ক্লাস না করেই ঘুরে যেতে হয়। আসলে আমাদের কিছু করার নাই।'
সাইক্লোজি বিভাগের হাসান মাহমুদ বলেন, 'দেশের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা যখন গ্রাম থেকে উঠে এসে শিক্ষার্থীদের সাথে এমন আচরণ করে; তখন এটা মেনে নেওয়া যায়না। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলে সত্য এটাই এখন আমাদের কালচারে পরিণত হয়েছে।'
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লাইফ এন্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন কাজী সাইফুদ্দিন দৈনিক আমার সংবাদকে বলেন, 'সব বিভাগেই ক্লাস দেরিতে হয়ে থাকে। এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবো। শিক্ষার্থীরা সরাসরি আমাকে বলতে পারে।'
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. আইনুল দৈনিক আমার সংবাদকে বলেন, আমাদের জগন্নাথে ক্লাসরুম সংকট থাকাতে অনেক সময় এমনটা হয়ে থাকে। বিবিএ ভবনের কাজ প্রায় শেষ। কাজ শেষ হলে অনেক বিভাগ সেখানে চলে যাবে। তখন আশা করছি শিক্ষার্থীদের কোনো অভিযোগ থাকবে না।'