Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

সৌদি গিয়েও ভাগ্য ফেরেনি নাঈমার

প্রিন্ট সংস্করণ॥আব্দুল লতিফ রানা

ডিসেম্বর ২২, ২০১৯, ০৭:১৪ পিএম


সৌদি গিয়েও ভাগ্য ফেরেনি নাঈমার জীবনের তাগিদে বাংলাদেশ থেকে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরবে গিয়ে আগুনের ছ্যাঁকাসহ অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন গৃহবধূ নাঈমা আক্তার। শুধু তাই নয়, নির্যাতনের বিচারের দাবিতে থানায় গেলে উল্টো তার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দেয়া হয়েছে। গৃহবধূ নাঈমাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দালালচক্র।তারপরও ফেরত না পাঠিয়ে তার বিরুদ্ধে চুরির মামলা দেয়া হয়েছে। নাঈমা আক্তার সুখের আশায়, একটু ভালো থাকার আশায় বিদেশ গিয়েছে। কিন্তু জীবনে সুখ কিনতে কিনতে প্রবাস জীবনের সুখ বিক্রি করে দিয়েছেন শ্রমবাজারে। অনেক সুখের আশায় তার পরিবার-পরিজন ছেড়ে যেতে হয়েছে প্রবাসে। শুধু তার অবলা শিশুসহ আপনজনের মুখে একটু হাসি এনে দিতে। কিন্তু তিনি এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। রাজধানীর চকবাজার থানার খাজে দেওয়ার দ্বিতীয় লেনের ২২/৬ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা ছিলেন নাঈমা আক্তার। তার স্বামীর নাম দেলোয়ার হোসেন। তারা ইর্ষিতা (৬) ও নইম (১০) নামে দুই সন্তানের জনক-জননী। পাবনা শহরে তাদের বাড়ি। জীবনের ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে স্বামী ও দুই শিশুসন্তানকে ছেড়ে সুখের আশায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের মাধ্যমে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। এ সময় দালালচক্র তার কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। সেখানে যাওয়ার পর নাঈমাকে দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করানো হয়। কিন্তু দীর্ঘ ছয় মাস পার হলেও তাকে বেতনের কোনো টাকা দেয়া হয়নি। তার সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক এক বাসায় ঝিয়ের কাজের পরিবর্তে তাকে দিয়ে একাধিক বাসায় কাজ করানো হয়। শুধু তাই নয়, ঠিকমতো খাবারও দেয়া হয় না। এরপর রাতে ঠিকমতো ঘুমাতেও দেয়া হয় না। এর প্রতিবাদ করায় দালালচক্রটি তার ওপর নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে তার শরীরে ইস্ত্রি গরম করে ছ্যাঁকা দেয়া হয়। ভুক্তভোগীর স্বামী দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, একদিন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে পালিয়ে সৌদি আরবের স্থানীয় এক থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন তার স্ত্রী নাঈমা আক্তার। পরে পুলিশ গিয়ে নির্যাতনকারীদের আটক করে। এরপর তাকে দেশে ফেরত পাঠানো এবং নির্যাতন না করার অঙ্গীকারনামা দিয়ে দালালচক্র রক্ষা পায়। পরে হালিমা নামে এক দালাল ও তার স্বামী এমদাদ এক লাখ ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন নাঈমাকে দেশে ফেরত পাঠাতে। এরপর হুন্ডি ও বিকাশের মাধ্যমে তাদের দাবিকৃত টাকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেই দালালচক্র নাঈমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেছেন। এখন নাঈমাকে সৌদি আরবস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। তাকে এখনো দেশে পাঠানো হচ্ছে না। তাদের দুটি শিশুসন্তান অনবরত কান্না করছে। তাই নাঈমাকে দেশে ফেরত পাঠাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তিনি। এ ব্যাপারে দালালচক্রের সদস্য এমদাদ ও হালিমার সেল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো কথা বলতে রাজি হননি। এসটিএমএ