Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

"চিনি"-তে মিষ্টি কম

ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২১, ০৭:২০ এএম


গল্পটা মা মিষ্টি ও মেয়ে চিনির। আর পাঁচটা বাঙালি মা-মেয়ের চেয়ে একটু আলাদাই এই মা -মেয়ের সম্পর্ক। বাড়ির কর্তা গত হলেও তার অদৃশ্য উপস্থিতি এখনও ছায়ার মতো লেপটে আছে সারা বাড়িতে। বাড়ির প্রতিটি কোণায় যেন ছাপ লেগে আছে তার অত্যাচারের।

এই স্মৃতির কারণে বাড়িতে থাকতে না পেরে প্রেমিক সুদীপের সঙ্গে লিভ-ইন করে চিনি।  অফিসে বিজ্ঞাপনের ট্যাগলাইন লেখা, বসের বাঁকা কথা শোনা, থেরাপিস্টের কাছে কাউন্সেলিং করাতে যাওয়া। এই চিনির প্রতিদিনের রুটিন।

অন্যদিকে, তার মা-ও ভাল থাকার পথ খুঁজে নিতে চাইছে নিজের মতো করে। মেয়ের সাথে পায়ে পা মিলিয়ে ঝগড়া করে প্রতিটি বিষয় নিয়ে। রান্নাঘরে আমিষ খেলে যে মা চোটপাট করত মেয়ের উপরে, আলাদা থাকবে বলে সেই মেয়েই বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মা নাড়ুর কৌটো ধরিয়ে দেয় তার হাতে। এই দেখা যায় মেয়ের লিভ-ইন পার্টনারের সঙ্গে দারুণ ভাল সম্পর্ক, পরমুহূর্তেই আবার প্রচণ্ড রেগে গিয়ে সেই ছেলেকেই ‘রাস্তার ছেলে’ বলে বসে চিনির মা। 

এই অদ্ভুত মা-মেয়ের সম্পর্ক শেষমেশ কোনদিকে মোড় নিবে? কেনই বা মায়ের উপর এতো অভিমান চিনির? 

এই প্রশ্নের উত্তর দিবে মৌনাক ভৌমিকের পরিচালনায় নির্মিত "চিনি" সিনেমায়।

চিনি সিনেমাটি এক দুষ্টু-মিষ্টি ছকভাঙা মা-মেয়ের সম্পর্কের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে। এই গল্পে একদিকে যেমন মা-মেয়ের দুষ্টু-মিষ্টি ছকভাঙা সম্পর্কের গল্প বলা হয়েছে। অন্যদিকে, সমাজের নারীদের উপর অত্যাচেরের গল্পও তুলে ধরা হয়েছে। 

তবে সিনেমার "চিনি" নামের সিনেমায় যেন মিষ্টিই কম পড়ে গেছে কোথাও কোথাও। 

সিনেমার কিছু কিছু জায়গায় বিরক্ত হবেন আপনি। মনে হবে যেন একই রেকর্ড বার বার বাজানো হচ্ছে। তবু আসল ঘটনা কী বুঝতে দেরি হয়ে যবে আপনার। 

এছাড়াও সিনেমায় অত্যাচারী বাবার গায়ে সন্তানের হাত তোলা, শেষে মারণব্যাধি ধরা পড়ার মতো খুবই প্রত্যাশিত কিছু বাঁক রয়েছে গল্পে, যা তেমন ধাক্কা দেয় না। প্রধান চরিত্রদের দুঃখ, রাগ বা যন্ত্রণাই সিনেমার অনেকটা জুড়ে। তবে তার সঙ্গে কতটা একাত্ম হতে পারবেন দর্শক, সে প্রশ্ন রয়ে যায়। ক্যামেরা যেন আটকে গেছিলো চার দেওয়ালের ভেতর, যা একটু ক্লান্তিকর।

মায়ের চরিত্রে অপরাজিতা আঢ্যকে তাঁর চেনা রূপে পাওয়া গেছে। তার চেয়ে ভালো যেন কেউ হতেই পারতো না। মধুমিতা সরকার আবেগের দৃশ্যগুলিতে ভাল ছিলেন। তবে কিছু কিছু জায়গায় সামান্য ওভারস্মার্টনেস ছাপিয়ে গিয়েছে তাঁর সহজাত অভিনয়ক্ষমতাকে। তুলনায় সুযোগ কম পেলেও সাবলীল অভিনয়ে নজর কাড়েন সৌরভ দাস। 

আর যে কথা না বললেই নয়। সেটি হলো সিনেমার গান।  ‘তোমার চোখের শীতলপাটি’ গানটি মন কাড়বে আপানার।

সব মিলিয়ে " চিনি" চেনা সুখ-দুঃখের গল্পও। এটি কোনো রমকম নয়, থ্রিলার নয় কিংবা ফ্যামিলি ড্রামাও নয়। এটি একটি হরোর স্টোরি। সব ঠিক ছিল শুধু একটু মিষ্টির পরিমান ঠিক হলেই যেন জমে যেত। 

আমারসংবাদ/এডি