Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

‘করোনার সঙ্গে লড়া গেলেও, রাধের সঙ্গে লড়াই করা যাবে না’

মে ১৬, ২০২১, ০৮:০০ এএম


‘করোনার সঙ্গে লড়া গেলেও, রাধের সঙ্গে লড়াই করা যাবে না’

গল্পের শুরুটা হয় মুম্বাই শহর থেকে। যেই শহর ধীরে ধীরে গুন্ডাগিরি, ভাইগিরির পর এখন মাদকের ঝালে পুরোপুরি ফেঁসে গেছে তিন পাগলের পাল্লায় পরে। যারা দিল্লি থেকে মুম্বাই এসেছেন টাকার নেশায়। স্কুল থেকে শুরু করে কলেজের বাচ্চাদের ব্যবহার করছেন নিজেদের মাদকের ব্যবসা বাড়ানোর জন্য। যখন পুরো শহরের পুলিশ এদের থামাতে ব্যর্থ হয়, সেই সময় এন্ট্রি হয় সুপার স্পেশাল কোপ রাধের। যে নিজের অদ্ভুত অদ্ভত কাজের জন্য বেশ পরিচিত। রাধের ডিকশনারিতে ভয় বলে কোনো শব্দের অস্তিত্বই নেই। কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে শত্রুর ঘরের মধ্যে ঢুকে তার বিনাস করাই রাধের মূল লক্ষ্য। খুনের নেশা তার এতোই প্রিয় যে এনকাউন্টারের সংখ্যা একশো পূরণ হতে আর মাত্র ৩ গোণা বাকি। এর আগে কী হবে এর ভবিষ্যৎ বাণী নার্সারিতে পড়া বাচ্চাও বলতে পারবে। রানা এন্ড কোম্পানির সাথে জোর টক্কর হবে রাধের। যেখানে অ্যাকশন হবে, হিরোগিরির দেখা মিলবে। আর যার শেষ পরিণতি হবে রাধের জয়।

এর বাইরে সিনেমা নিয়ে তেমন কিছু বলার নেই। তারপরেও যখন আপনাদের মনে সিনেমা নিয়ে অনেক কিছু উঁকি দেয়, তখন আসুন দিশাকে একটু দিশা দেখিয়ে দেই। সিনেমায় দিশা রাধের নায়িকা কম, উবার ড্রাইভার বেশি মনে হয়। আপনার ঘর পোঁছানোর জন্য লিফটের দরকার হোক কিংবা মার খাওয়ার পর হাসপাতালে যাওয়ার দরকার হোক দিশার ট্যাক্সি ওখানে হাজির হয়ে যাবে। বলিউডের স্ট্রাগলার অভিনেত্রী অনন্যা পাণ্ডকে কেউ যদি ওভার এক্টিংয়ে প্রতিযোগিতায় হারাতে পারে তাহলে সে দিশা। এক লাইনে যদি দিশার অভিনয়ের কথা জানতে চান তাহলে জবাব হবে, দিশার অভিনয় কেমন, দিশা কো পাতা নেহি?

যদিও অন্যের ঘরে উঁকি ঝুঁকি দেওয়া ঠিক না, কিন্তু খবর পাওয়া যাচ্ছে দিশার এই সিনেমা দেখার পর টাইগার ভাইয়া শেষমেষ জঙ্গলেই বাসা বেঁধেছে। ভাবছেন কেন?

কেন না, এই সিনেমায় হবু শ্বশুর জেকি শ্রফকে দিশা ভাই বানিয়ে নিয়েছেন। শেষমেষ এই ছিল দিশার মনে! 

থাক ওইদিকে বেশি না যাই, ওদের ঘরের মামলা ওরাই মেটাক। এবার আসুন রাধের পোস্টমর্টাম করা যাক।

ছোটবেলার কথা মনে? একমাস রোজার ছুটির পর স্কুল খোলার আগে আগে তাড়াহুড়া করে হোমওয়ার্ক শেষ করতে হতো, প্রভুদেবাও মনে হলো সেই কাজটাই করেছেন। কিন্তু তাড়াহুড়াই নাচের সব বিট ধরলেও, সিনেমার বিট যেন সব ছাড়া ছাড়া হয়ে গেল। 

সালমান খান জোর করে ওয়ান্টেডের সেই চরিত্রকেই রিক্রিয়েট করার প্রচেষ্টাতেই লেগেছিল। এই চক্করে না অ্যাকশন হলো, না কমেডি। ডায়লগ শুনে তো হাসবো না রাগবো বুঝতেই সময় শেষ। সেই সাথে গানের কথা না বললেই না। কিন্তু বলবো কী কিছুই তো বুঝিনি গানের কথা। না পড়ে বিসিএস পাস করে গেলেও হাজার বার শুনেও ইউলিয়ার গানের কথা বোঝা সম্ভব না।

দেখুন, রানদীপ হুডা শুধু নামের কারনে বদনাম হয়েছন, সিনেমার আসল খলনায়ক পরিচালক প্রভুদেবা। এবার এমনই খেল দেখালেন তিনি, যেই খেলা বোঝা কেবল মঙ্গলগ্রহের যাদুর পক্ষেই সম্ভব। 

সিনেমায় এতো বেশি অপ্রয়োজন চরিত্র জোরপূর্বক ঢোকানো হয়েছে। যেন মনে হয় বিগ বসের ঘর। যেমন ধরুন দিশার হবু শ্বশুর না সরি ভাই জেকি শ্রফ। যে চরিত্রটা না থাকলেও কারো কিছু যায় আসতো না। 

তবে এই পান্তা ভাতে যেন একটু ইলিশের ছোঁয়া দিয়েছে রানদীপ হুডা। সিনেমার ভিলেন যদিও সে কিন্তু পর্দায় সালমানের থেকে তাকে দেখতেই যেনো বেশি ভালো লাগে। একেই বলে বুঝি আসল প্রতিভা। 

সব মিলিয়ে আমার কথা যদি শোনেন তবে অক্সিজেনের এই সংকটপুর্ণ মুহুর্তে রাধে না দেখাই ভালো। কারণ করোনার সঙ্গে লড়া গেলেও, রাধের সঙ্গে লড়াই করা যাবে না। এই অবস্থায় রাধে দেখলে অক্সিজেনের যোগান দিতে এবার বেশামাল হয়ে পড়বে সরকার। 

আমারসংবাদ/এডি