Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

একেবারে ফুল প্যাকেজ কেজিএফ!

মে ২৪, ২০২১, ০৭:৪৫ এএম


একেবারে ফুল প্যাকেজ কেজিএফ!

গল্পটা বোনা হয়েছে রকি নামের একটি চরিত্রকে কেন্দ্র করে। দারিদ্রতার বেড়াজাল ভেঙে ছোট্ট রকির রকি ভাই হয়ে উঠার গল্প। ছোট থেকেই মায়ের খুব কাছের ছিল রকি। কিন্তু দুজনের এই স্নেহের বন্ধনে খলনায়ক রুপে প্রবেশ করে দারিদ্রতা। টাকার অভাবে অল্প বয়সেই মারা যায় রকির মা। কিন্তু মৃত্যুর আগে ছেলেকে প্রতিজ্ঞা করিয়ে নেয় সে যে, যখন সে মারা যাবে তখন যেনো সবচেয়ে ক্ষমতাধর হয়ে মরতে পারে। মায়ের কাছে করা এই প্রতিজ্ঞা রক্ষার জন্যই পুরো দুনিয়াকে নিজের হাতের মুঠোয় করে নেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মুম্বাইয়ে পাড়ি জমায় রকি। নিজেকে সবার সামনে আনার জন্য একজন অলস, অসৎ পুলিশ অফিসারের মাথায় বোতল দিয়ে মারে। এই প্রচেষ্টাতেও সফল হয়ে যায় রকি। এই ঘটনার মধ্যে দিয়েই রকির উপর চোখ পড়ে মুম্বাইয়ের ডন শেট্টির। শেট্টির কাছেই কাজে যোগ দেয় রকি। এরপরেই আসল খেলা দেখাতে শুরু করে রকি। ধীরে ধীরে নিজেকে এমন জায়গায় নিয়ে যায় যে মুম্বাইয়ের সব কাজ রকির ইচ্ছে মতো হতে শুরু করে। এমনকি রকির কাজ দেখে হিংসা হতে থাকে ডন শেট্টিরও।

এই পর একটি সিক্রেট মিশনে ব্যাঙ্গালোরে ডাক পড়ে রকির। নিশ্চয়ই সিক্রেট মিশোনটা কী এইটাই ভাবছেন। মিশনটা হচ্ছে গরুড়া নামের পাওয়ারফুল নেতাকে মারা। গরুড়া পাওয়ারফুল নেতা তো বটেই সেই সাথে দেশের সবচেয়ে বড় গোল্ড ফিল্ড কে জি এফ অর্থাৎ কলার গোল্ড ফিল্ডের মালিক। বেআইনি পথে হাজারো দরিদ্র মানুষকে নিজের কারখানায় নিয়ে যেয়ে তাদের দিয়ে স্বর্ণ খোদাইয়ের কাজ করায়। ব্যাঙ্গালোরে রকির পরিচয় হয় হোম মিনিস্টারের মেয়ে রীনার সাথে। ধীরে ধীরে রীনার মনে জায়গা করে নেয় রকি। সেই সুত্রেই সে জানতে পারে গরুড়াকে মারার পরিকল্পনায় রীনার বাবাও শামিল রয়েছে। 

প্রথমে পরিকল্পনা করা হয় গরুড়াকে ব্যাঙ্গালোরে নিয়ে এসে মারবেন। কিন্তু রকি পিছিয়ে যায়। পরে রকি ঠিক করে সে নিজেই কে জি এফ যাবে এবং হত্যা করবে গরুড়াকে। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। গরিব শ্রমিক সেজে কে জি এফ চলে যায় রকি। ঠান্ডা মাথায় গরুড়াকে মারার সব প্লান করে ফেলে রকি। ধীরে ধীরে এগিয়েও যায়। কিন্তু এইসময় শ্রমিকদের উপর অত্যাচার সহ্যের বাইরে চলে যায়। সেই সময় রকি পাশে দাড়ায় শ্রমিকদের। প্রথমে কে জি এফ এর গার্ডদের বেঁছে বেঁছে মারতে থাকে। সেই সাথে শ্রমিকদের সামনে থেকে সাহস দিতে থাকে। অনেকেই রকির সাথে এসে হাত মেলায়। এর মধ্যে দিয়েই প্রথমবার কে জি এফে প্রতিবাদ শুরু হয়। 

নিজের ক্ষমতাকে ঠিকিয়ে রাখার জন্য গরুড়া কালি পুজা করার নামে ৩ জন শ্রমিককে বলি দেওয়ার জন্য ধরে আনে। দুইজনকে মেরেও ফেলে। এখন শেষ যে মানুষটা বেঁছে আছে সে আর কেউ নয় রকি। 

এই সময়ই আসে সিনেমার আসল টুইস্ট। জানা যায় গরুড়াকে মারার প্লান অন্য কারো না, বরং তার আপন ভাইয়ের। সেই রকিকে কে জি এফফে আনে। 

তবে শেষমেষ কী রকি গরুড়াকে মারতে পারবে নাকি গরুড়া সব সত্যিটা জেনে রকিকে বলি দেবে? এর থেকেও বড় প্রশ্ন রকি কী হতে পারবে কে জি এফ এর মালিক?

এইসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে কেজিএফ: চ্যাপ্টার ওয়ান সিনেমায়। 

যারা এতোদিন বলিউডের অ্যাকশন সিনেমা দেখে বাহ বাহ করেছেন, তাদের কাছে কেজিএফ স্বর্গের সুখের মতো মনে হবে। আর যারা অ্যাকশন সিনেমা দেখেন না ভালো গল্পের অভাবে তাদেরকে এক বালতি সমবেদনা দিয়ে ভুল প্রমান করে দেবে এই সিনেমা।প্রতিটা দৃশ্য দেখে আপনিও বলে উঠবেন বাহ বাহ। 

সাউথের অতিরিক্ত অ্যাকশনের প্রভাব থাকলেও ইয়াসের লুকের সাথে দারুন ভাবে মিলে গেছে। এক কথায় ফাটাফাটি।  

ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের কথা না বললেই যেন নয়। মুভিটা যেহেতু অ্যাকশন নির্ভর সেই ক্ষেত্রে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক একটা বড় ভূমিকা পালন করে। আর সত্যি বলতে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছিলো অসাধারণ। পুরো জমে ক্ষীর। 

অসাধারণ গল্প, ইয়াসের অভিনয় সেই সাথে ভালো গান সব মিলিয়ে একটি ফুল প্যাকেজ কেজিএফ অর্থাৎ পয়সা উসুল। 

আমারসংবাদ/এডি