Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪,

আতঙ্কে পরী-পিয়াসাদের খদ্দেররা, নজরদারিতে আরো অনেকে

আমার সংবাদ ডেস্ক

আগস্ট ৫, ২০২১, ১২:০০ পিএম


আতঙ্কে পরী-পিয়াসাদের খদ্দেররা, নজরদারিতে আরো অনেকে

ঢাকার শোবিজ জগতের বেশ কয়েকজন মডেল-অভিনেত্রী অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে জানা গেছে। সম্প্রতি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অভিযানে নায়িকা পরীমনি ও কথিত মডেল ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা এবং মৌসহ আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর ব্যাপক আতঙ্কে রয়েছে অনেকে।

বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, বর্তমানে মডেলদের অনেকেই বিভিন্ন পার্টির নামে গোপন ক্যামেরায় সমাজের বিত্তশালীদের অসতর্ক মুহূর্তের ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে রাখতেন। পরে এগুলো তাদের পরিবারের স্বজন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিত্তশালীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করতেন। বিত্তশালীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করলেও যে থেমে যেতেন, তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন সময়ে আরও বড় বড় আবদান চেয়ে বসতেন তারা। বিভিন্ন এলাকায় এ চক্রের সদস্যদের এজেন্টও রয়েছে। তাদের হাত ধরেই সুন্দরী নারীরা হয়েছে ওঠেন পার্টি গার্ল।

পরী-পিয়াসারা পর্নোগ্রাফির সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে জানিয়েছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। এই নায়িকা এবং কথিত মডেলদের খদ্দের কেবল রাজধানী ঢাকা কেন্দ্রীক নয়, দেশের বিভিন্ন শহরের শীর্ষ পর্যায়ের ধনীর দুলালরাও রয়েছেন। তাদের অসামাজিক-অস্বাভাবিককাণ্ড তাদের পরিবারের সদস্যরা জেনেও মুখ বন্ধ করে ছিলেন। বিপথগামী সদস্যদের মাধ্যমে বিলাসবহুল জীবনযাপনের সুযোগ পাচ্ছিলেন পরিবারের সদস্যরা। গুলশান-বনানী-উত্তরায় বারকেন্দ্রীক অপকর্মে একাধিক গ্রুপ অব কোম্পানির কর্ণধার, অভিজাত এলাকায় ক্লাব পরিচালনায় দায়িত্বরত ব্যক্তি, শীর্ষ পর্যায়ের গাড়ি আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী এবং কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার নাম গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। যারা ওইসব মডেল, নায়িকা বা সুন্দরী তরুণীদের সঙ্গ নিতো এবং খুশি হয়ে বিনিময়ে বস্তুগত এবং অবস্তুগত উপহার প্রদান করতো। তবে ওইসব সেনসেশনাল তরুণীরা তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে তাদের সঙ্গ নেওয়া ধনীর দুলালদের গোপন ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে ব্লাকমেইল করে মোটা দাগের অর্থ হাতিয়ে নিতো। অন্যথায় ওইসব ছবি বা ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে হেনস্তা করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হতো। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কেবল রাজধানী ঢাকাতেই অসামাজিক ও অপকর্মে লিপ্ত ৩০০ শতাধিক ধনীর দুলালের তথ্য আইন প্রয়োগকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার হাতে রয়েছে। ধনীর দুলালদের কয়েকজনকে নজরদারীর মধ্যে রাখা হচ্ছে, যারা কেবল ক্লায়েন্ট নয়, ওইসব অপকর্মের ইন্ধন যুগিয়েছেন তাদেরও আইনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার। প্রয়োজনে তাদের তালিকা শীর্ষ পর্যায়ে পাঠিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া বিষয়ে নির্দেশনা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, পরীমনি, ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা, মৌ ছাড়াও শিরিন শিলা, মৃদুলা, অহনা, নায়লা নাঈম, শুভা, মানসি, পার্শা, মৌরি ও আঁচল অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এরা সবাই র‍্যাবের নজরদারিতে আছেন। গ্রেপ্তার হতে পারেন যে কোনো সময়। তবে শুধু নায়িকা বা মডেল নন। বেশ কয়েকজন চিত্রনায়ক মাদক এবং অবৈধ পর্নোগ্রাফি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লে. কর্নেল খায়রুল ইসলাম জানান, পরীমনি ছাড়াও বেশ কয়েকজন মডেল-অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ পর্নোগ্রাফির অভিযোগ পাওয়া গেছে। হয়তো খুব কম সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে।

র‍্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস). কর্ণেল কে এম আজাদ বলেন, বিভিন্ন সময়ে আমাদের কাছে অসামাজিক ও বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত কথিত মডেল, নায়িকা ও সুন্দরী তরুণীদের বিষয়ে অভিযোগ আসে। তাছাড়া আমাদের সাইবার মনিটরিং টিমের নজরদারিতেও তাদের অস্বাভাবিক রকমের আচরণ ধরা পড়ে। ওইসব মডেল, নায়িকা বা সুন্দরী তরুণীদের কাছে যেসব ধনীর দুলালদের নিয়মিত যাতায়াত ছিলো তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া পিয়াসা ও পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদে এমনসব ধনীর দুলালদের নাম-পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। তাদেরকেও অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনার জন্য তৎপরতা চালানো হচ্ছে। তবে পরী-পিয়াসারা গ্রেপ্তারের পর ওই ধনীর দুলালরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাদেরকে ট্রেস করা কঠিন হয়েছে যাচ্ছে। তারা অল্প সময়ের মধ্যেই একস্থান থেকে অন্যস্থানে অবস্থান পরিবর্তন করছে।

আমারসংবাদ/জেআই