Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫,

চোখ জুড়াবে মন মাতাবে সরিষার ফুলের আভা

জিয়া উল ইসলাম

জানুয়ারি ৮, ২০১৯, ০৬:০৮ এএম


চোখ জুড়াবে মন মাতাবে  সরিষার ফুলের আভা

সরিষার সোনালি হলুদ রং ফুল। এক থেকে তিন ফুট উঁচু গাছ হয়। গাছের ডালে মঞ্জুরিতে ফুল ফোঁটে। পাপড়ি চারটি। ভেতরে ছয়টি রেনু দ- থাকে। চারটি বড়, দুইটি ছোট। বীজকালে সাদা রংও দেখা যায়। আমাদের দেশে বীজের জন্য সরিষা চাষ হয়। বীজ থেকে খাবার তেল একসময় আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয় ছিল। বর্তমানে এই তেল বিভিন্ন মজারদার খাবারে জন্য ব্যবহার হয়ে আসছে।

সাধারণ আমাদের দেশে শীত এলে মাঠজুড়ে সরিষার দেখা পাওয়া যায়। মাঠভর্তি হলুদ সরিষা ফুল রোদে ঝলমল করতে থাকে। মাঠে তাকালে চোখে পড়ে হলুদ আর হলুদ। এ এক অপরূপ সৌন্দর্য। চারপাশের মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত ফসলের মাঠ। মৌমাছির গুনগুন শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পণ এ অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনোমুগ্ধকর এক মুহূর্ত। ভোরের বিন্দু বিন্দু শিশির আর সকালের মিষ্টি রোদ ছুঁয়ে যায় সেই ফুলগুলোকে।

শীতে সরিষা ক্ষেতের পাশ ভ্রাম্যমাণ মৌয়ালরা মৌবাক্স স্থাপন করে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ শুরু এই মধু সারা দেশে তারা বিক্রি করে। তবে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় মৌমাছির জীবনও কখনো কখনো হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। সরিষা শাক হিসেবে খাওয়া যায় সরিষা বাটা দিয়ে ইলিশ তো আরও মজাদার খাবার। তবে সরিষার ফুলের থেকে যে জিভে পানি আনা ভর্তা বানানো যায়, তা অনেকেই জানেন না। সরিষার ফুলের ভর্তা সামান্য কিছু উপকরণ দিয়ে বানানো যায়। এই ভর্তায় কোনো শুকনো মরিচ ব্যবহার করিনি।

উপকরণ : ভাপে দিয়ে সিদ্ধ করা সরিষা ফুল এক কাপ, শৈলমাছ বড় চার পিস (টাকি মাছ হলে আট পিস), পেঁয়াজ কুচি দুই কাপ, রসুন কুচি এক কাপ, হলুদ আধা চামচ, কাঁচামরিচ আটটি, (পছন্দ অনুযায়ী ঝালের পরিমাণ বাড়ানো বা কমানো যেতে পারে), সরিষা তেল আধা কাপ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী,

প্রস্তুত প্রণালি : প্রথমে মাছ ভালো করে ধুয়ে আধা চামচ হলুদ ও সামান্য লবণ দিয়ে মেখে রাখতে হবে। চুলায় জ্বাল ধরিয়ে নন স্টিক ফ্রাই প্যান অথবা লোহার কড়াই দিয়ে এর মধ্যে সরিষার তেল দিতে হবে (দুই টেবিল চামচ তেল কাপে রেখে পুরোটাই দিয়ে দিতে হবে)। তেল ভালো করে গরম হলে এতে মাছ ভাজতে হবে, বাদামি হওয়ার আগে মাছ তুলে রেখে, ওই তেলেই একে একে পেঁয়াজ কুচি, রসুন কুচি, কাঁচামরিচ দিয়ে ভাজতে হবে হালকা আঁচে। কিছুক্ষণ ভেজে বাদামি হওয়ার আগেই তা অন্য একটি পাত্রে তুলে রাখতে হবে। চুলায় যে পাত্রে মাছ ও পেঁয়াজ রসুন ভাজা হয়েছে, ওই গরম কড়াইতে ভাপ দেয়া সরিষা ফুল দিয়ে হালকা ভাজতে হবে এক মিনিট। এরপর চুলা বন্ধ করে দিতে হবে। এবার ভেজে রাখা মাছ থেকে ভালো করে কাটা বেছে ফেলতে হবে। এরপর ভেজে রাখা পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচামরিচ, কাটাবাছা মাছ, সরিষা ফুল ভাজা এবং লবণ দিয়ে পাটাতে ভালো করে পিষতে হবে। সব ভালো করে পিষে মেশাতে হবে। এবার আগে তুলে রাখা দুই টেবিল চামচ তেল দিয়ে মাখতে হবে। ব্যাস, তৈরি হয়ে যাবে মুখরোচক সরিষা ফুল ভর্তা।

সরিষা ফুল গ্রাম-বাংলার প্রকৃতিকে হলুদ চাদরে ঢেকে রেখেছে। ইচ্ছা করলে আপনি এই শহর থেকে গ্রামে দেখে আসতে পারেন এই সরিষা ক্ষেত, অবশ্য আপনাকে সরিষা ফুলের আভায় মন মাতাবে চোখ জুড়াবে এবং পাগল করবে এর ঘ্রাণে।