Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

সুখ কী আর সুখী কে!

বিনোদন ডেস্ক

মার্চ ২০, ২০২১, ০৬:২৫ এএম


সুখ কী আর সুখী কে!

সুখ একটা আপেক্ষিক ব্যাপার। সুখ একটি মানবিক অনুভূতি যা মনের একটি অবস্থা বা অনুভূতি যা ভালোবাসা, তৃপ্তি, আনন্দ বা উচ্ছ্বাস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। মানুষ সুখ প্রত্যাশী। কিন্তু সবাই সুখী হয় না। কেউ কেউ হয়। এই সুখী হওয়াটা একেক জনের কাছে একেক রকম। দেখা যায়, যাতে একজন সুখী, অন্যজন তাতে অসুখী। সুখের ব্যাপারটি একই সঙ্গে মানসিক ও পারিপার্শ্বিক। সুখ রহস্যাবৃত। কখনো বুঝা যায়, কখনো বুঝা যায় না। কখনো ধরা দেয়, কখনো ধরা দেয় না।

বর্তমানে সুখী মানুষ খুঁজে পাওয়া সোনার পাথর বাটির মতো। সকলেই সুখী হতে পারে না। তবে সুখী হতে পয়সা লাগে না। নিজের ইচ্ছা থাকলে অবশ্যই সুখী হওয়া সম্ভব। নিজের যতটুকু আছে তন্মধ্যে সন্তুষ্ট থাকলে, আনন্দ খুঁজে পেলে সুখী হওয়া কঠিন কিছু না।

মানুষের জীবনের প্রধান উদ্দেশ্যেই সুখী থাকা। আর তাই ২০ মার্চকে আন্তর্জাতিক সুখ দিবস বা বিশ্ব সুখী দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে।  ২০১২ সালের ২৮ জুন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক অধিবেশনে এ দিনটি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর বিশ্বের একাধিক দেশ দিবসটি নানা আয়োজনে দিনটি পালন করে আসছে। 

ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণসহ পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের সুখ-সমৃদ্ধি নিশ্চিতে দিবসটি পালন করা হয়। সদস্যভুক্ত দেশগুলোর ওপর পূর্ণ এক বছর জরিপ পরিচালনা করে এই দিবসে সুখী দেশের তালিকা প্রকাশ করে থাকে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের উপদেষ্টা এবং শান্তি ও নিরাপত্তা অর্থনীতিবিদদের প্রতিনিধি জেম এলিয়েন দিবসটির প্রতিষ্ঠাতা। তবে আন্তর্জাতিক সুখ দিবস প্রচলনের প্রচারটি শুরু হয় মূলত আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভুটানের হাত ধরে। দেশটিতে ইতিমধ্যে সুখ-সূচকের ভিত্তিতে জাতীয় সমৃদ্ধির পরিমাপের প্রচলন করা হয়েছে। তারা জাতিসংঘের কাছে বছরের একটি দিন সুখ দিবস হিসেবে পালনের আহ্বান জানায়। 

এ প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ২৮ জুন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে এ দিনটি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অধিবেশনে জাতিসংঘের ১৯৩টি দেশের প্রতিনিধিরা সুখ দিবসকে স্বীকৃতি দেন। দিবসটি পালনসংক্রান্ত বিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের প্রস্তাবে বলা হয় সুখের অনুসন্ধান একটি মৌলিক মানবিক লক্ষ্য। মানুষের জীবনের মূল উদ্দেশ্য সুখে থাকা। 

জাতিসংঘ তাদের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর ওপর পূর্ণ এক বছর জরিপ পরিচালনা করে এ দিবসের সুখী দেশের তালিকা প্রকাশ করে। এই কাজ করে মূলত জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশন নেটওয়ার্ক।

জনমত জরিপ সংস্থা গ্যালপের উপাত্তের ভিত্তিতে সংস্থাটি এই তালিকা তৈরি করে। ছয়টি মানদণ্ডকে বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বের সুখী দেশের এ তালিকা তৈরি করা হয়। এগুলো হলো মোট দেশজ উৎপাদন, জীবনের প্রত্যাশা, উদারতা, সামাজিক সহযোগিতা, সামাজিক স্বাধীনতা এবং সমাজে দুর্নীতির মাত্রা।

২০১৯ সালে সুখী দেশের তালিকায় বাংলাদেশ তার আগের বছরের তুলনায় ১০ ধাপ নিচে নেমেছিল। ২০১৯ সালের লিস্ট অনুযায়ী ১৫৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২৫তম এবং তার আগের বছর ছিল ১১৫তম। ২০২০ সালের তালিকা অনুযায়ী বাংলাদেশে অবস্থান ১৫৩টি দেশের মধ্যে ১০৭ যেখানে শ্রীলঙ্কা এবং ভারতের অবস্থান যথাক্রমে ১৩০ ও ১৪৪তম। তালিকায় ভারত ও শ্রীলঙ্কার ওপরে বাংলাদেশের নাম দেখে আমাদের মনে যেমন স্বস্তি অনুভব হয়, তেমন পাকিস্তানের ৬৬তম এবং নেপালের ৯২তম অবস্থান দেখে শুধু অস্বস্তি নয়, তালিকা তৈরির প্রক্রিয়ার প্রতিই সন্দেহ তৈরি হয়। এ তালিকায় সবচেয়ে কম সুখী দেশ হিসাবে ১৫৩তম স্থানে আছে আফগানিস্তান এবং তার ওপরে পর্যায়ক্রমে আছে দক্ষিণ সুদান, জিম্বাবুয়ে ও রুয়ান্ডা।

এ বছরের তালিকায় তৃতীয়বারের মতো বিশ্বের সেরা সুখী দেশ হিসেবে তালিকার শীর্ষে আছে ফিনল্যান্ড, দ্বিতীয় স্থানে ডেনমার্ক এবং নরওয়েকে পেছনে ফেলে সুইজারল্যান্ড তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে।

চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে যথাক্রমে আইসল্যান্ড ও নরওয়ে। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পর্যায়ক্রমে ১১, ১২, ১৩, ১৭ ও ১৮তম। তালিকার মাঝামাঝি পর্যায়ে আছে রাশিয়া ও চীন, ৭৩ ও ৯৪তম স্থানে।

আমারসংবাদ/এডি