Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

কাজ হারিয়ে দিনমজুর এখন জনপ্রিয় ইউটিউবার, আয় লক্ষাধিক!

আমার সংবাদ ডেস্ক

জুলাই ১৩, ২০২১, ০৮:২০ এএম


কাজ হারিয়ে দিনমজুর এখন জনপ্রিয় ইউটিউবার, আয় লক্ষাধিক!

মহামারি শুরু হওয়ার পরই কাজ হারান আইজ্যাক। সব জায়গায় লকডাউন হওয়াতে কাজ পাচ্ছিলেন না আইজ্যাক। কিন্তু অন্যরা যেখানে করোনায় কাজ হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন, আইজ্যাক উল্টে নিজেকে অন্য ভাবে আবিষ্কার করেছেন। আইজ্যাক মুণ্ডা এ সবের বাইরে গিয়ে একটু ভিন্ন ধারায় ভেবেছেন।

দিনমজুরি ছেড়ে এখন তিনি জনপ্রিয় ইউটিউবার। মারাত্মক পরিশ্রমের পর দিনের শেষে সামান্য টাকা হাতে নিয়ে বাড়ি ফেরা আইজ্যাক আজ বাড়িতে বসেই লাখপতি! নিজের ইউটিউব চ্যানেল খোলার পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যেই তার অ্যাকাউন্টে টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ!

সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছিলেন আইজ্যাক। তারপর গরিব পরিবারে যা হয় তার জীবনও সে পথেই এগোচ্ছিল। স্কুলছুট এবং তার পর উপার্জনের জন্য দিনমজুরি করা। সারা দিন কাজ আর কাজ শেষে বাড়ি ফেরা। এর বাইরে নতুন করে জীবন নিয়ে ভাবার অবকাশ তার ছিল না। হয়তো কখনও ভাবার কথা মনেও হয়নি তার।

২০২০ সালে দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিলে কাজ চলে যায় আইজ্যাকের। তার পর দীর্ঘ সময় বাড়িতেই বেকার হয়ে বসেছিলেন। কখনো কোনো কাজের ডাক পেলে যেতেন। এ রকমই এক দিন এক বন্ধুর ফোনে তিনি ইউটিউব-এ ব্লগিং করতে দেখেন। বিষয়টি তার বেশ ভালো লাগে। হাজার তিনেক টাকা ধার করে একটি স্মার্টফোন কিনে বন্ধুর সাহায্যে তিনি নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে ফেলেন।

মাটির বাড়ি। থালার এক পাশে পড়ে থাকা ভাত অত্যন্ত কম পরিমাণ সবজি দিয়ে মেখে খাওয়া। কখনো তালপাতা দিয়ে মাদুর বানানো। দৈনন্দিন জীবন তিনি তুলে ধরতে শুরু করলেন ইউটিউবে। তার আপলোড করা প্রথম ভিডিও ছিল ভাত খাওয়ার। স্ত্রী এবং সন্তানদের সঙ্গে মেঝেতে বসে একসঙ্গে খাচ্ছিলেন তিনি।

এর ঠিক তিন মাসের মধ্যে ভিডিওটি পাঁচ লাখ মানুষ দেখেন। শুধু ওই একটি ভিডিও থেকেই ৩৭ হাজার টাকা আয় করেন তিনি। এরপর একে একে আরও ভিডিও করতে শুরু করেন আইজ্যাক। ৩৫ বছরের দিনমজুর আইজ্যাক এখন পেশাদার ইউটিউবার। তার চ্যানেলের নাম ‘আইজ্যাক মুণ্ডা ইটিং’।

তার গ্রামের সংস্কৃতি, জীবনযাপন উঠে আসে আইজ্যাকের ভিডিয়োয়। তার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা সাত লাখ ৫২ হাজার ছুঁয়েছে। গ্রাম্য জীবন তুলে ধরার জন্য প্রশংসার বন্যা বয়ে যাচ্ছে তার বানানো ভিডিওগুলোতে। একদিকে বিশ্বের মানুষকে পরিচয় করাচ্ছেন গ্রামীণ পরিবেশ, সংস্কৃতির সঙ্গে। অন্যদিকে উপার্জনের পথ বাতলে দিচ্ছে তার মতো আরো হাজারো মানুষকে। 

আমারসংবাদ/এডি