Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের টিকটকের মাধ্যমে মেরে ফেলার হুমকি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মার্চ ৫, ২০২১, ১০:৫৫ এএম


মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের টিকটকের মাধ্যমে মেরে ফেলার হুমকি

মিয়ানমারের সেনাবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়া বিক্ষোভকারীদের টিকটকের মাধ্যমে দেশটির পুলিশ ও সেনারা মৃত্যুর হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ডিজিটাল অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন মিয়ানমার আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট (এমআইডিও) জানিয়েছে, টিকটকের আট শতাধিক ভিডিওতে আন্দোলনকারীদের ভয়-ভীতি দেখানো হয়েছে।

এমআইডিওর নির্বাহী পরিচালক তাইকে তাইকে অং বলেন, এটা হিমশৈলের কেবল উপরিভাগ। টিকটকে এমন আরও শত শত ভিডিও রয়েছে, যেখানে উর্দি পরা সেনা ও পুলিশ আন্দোলনকারীদের হুমকি দিচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সামরিক জান্তা সরকারের মুখপাত্র কোনো মন্তব্য করেনি।

এদিকে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি ক্যামেরার দিকে বন্দুক তাক করে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলছে, আমি তোমাদের মুখে গুলি করব। এজন্য আমি সত্যিকারের বুলেট ব্যবহার করব। গোটা শহর আজ রাতে আমি টহল দিব। দেখামাত্রই গুলি করব। আপনাদের শহিদ হওয়ার বাসনা আমি পূরণ করব।

টিকটকে আসা উর্দি পরা ওই ব্যক্তি বা অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগে ব্যর্থ হয় রয়টার্স। তারা সেনাবাহিনীতে কাজ করেন কি না, তাও যাচাই করা সম্ভব হয়নি বার্তা সংস্থাটির পক্ষে।

মিয়ানমারের আন্দোলনকে ঘিরে চীনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে ভীতি প্রদর্শনমূলক বা বিদ্বেষপ্রসূত ভিডিও দেয়া সম্প্রতি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি জায়ান্ট ফেসবুক এরই মধ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সংশ্লিষ্ট সব পেজ বন্ধ করে দিয়েছে। এর আগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশটিতে ফেসবুক নিষিদ্ধ করে।

টিকটক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কোনো ধরনের সহিংসতা উসকানো বা ক্ষতিকর ভুল তথ্য সম্বলিত কনটেন্ট প্রকাশে আমরা অনুমোদন দিই না। এ বিষয়ে আমাদের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। মিয়ানমারকে নিয়ে সব ধরনের সহিংসতামূলক বা মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর মতো কনটেন্ট আমরা সরিয়ে ফেলছি। আমাদের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে এমন সব কনটেন্ট দ্রুতই সরানো হচ্ছে।

টিকটকে পোস্ট করা ১২টির বেশি ভিডিও পর্যালোচনা করেছে রয়টার্স। সামরিক শাসন উৎখাত ও নির্বাচিত নেতা অং সান সু চির মুক্তির দাবিতে কর্মসূচি ডাক দেয়া বিক্ষোভকারীদের উর্দি পরা ব্যক্তিরা বন্দুক হাতে হুমকি দিচ্ছে বলে ওইসব ভিডিওতে দেখা যায়। ওইসব হুমকিমূলক ভিডিওর কোনো কোনোটি কয়েক হাজার বার ভিউ হয়েছে। রয়টার্সের পর্যালোচনা করা ভিডিও চলতি সপ্তাহে সরিয়ে ফেলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নামী তারকাদের নাম হ্যাশট্যাগ দিয়েও কেউ কেউ আন্দোলনকারীদের হুমকি দিচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ১ ফেব্রুয়ারি সুচি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ বেশ কয়েকজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতায় বসে সেনাবাহিনী।

সেনাশাসনের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন দমাতে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ব্যাপক মারমুখী অবস্থানে রয়েছে। এরই মধ্যে তাদের হাতে নিহত হয়েছে অর্ধ শতাধিক মানুষ। 

বুধবার সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ওই একদিনই ৩৮ বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে।

আমারসংবাদ/জেডআই