Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

করোনাভাইরাস: ব্রাজিলে তিন বাহিনী প্রধানের পদত্যাগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মার্চ ৩১, ২০২১, ১১:১০ এএম


করোনাভাইরাস: ব্রাজিলে তিন বাহিনী প্রধানের পদত্যাগ

করোনা মহামারির সঙ্কটে বেশ চাপেই আছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো। সঙ্কট মোকাবিলায় তার নেতৃত্বে অসন্তুষ্ট দেশের জনগণসহ প্রশাসনের অনেকে। শুরু থেকেই তিনি এই মহামারিকে সেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। আর এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে ব্রাজিলের মানুষকে।

এরমধ্যেই বোলসোনারোর ওপর ক্ষোভ থেকে দেশটির তিন বাহিনী প্রধানরা পদত্যাগ করেছেন।  নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন জেনারেল ওয়াল্টার সুজা ব্রাগা নেত্তো’কে। এর ফলে একযোগে যৌথভাবে পদত্যাগ করেছেন দেশটির তিন বাহিনীর প্রধানরা। 

তারা হলেন সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর প্রধান- যথাক্রমে এডসন লিল পুজোল, ইলকুয়েস বারবোসা এবং অ্যান্তোনিও কার্লোস বারমুডেজ। প্রেসিডেন্ট বোলসনারো তাদের সমর্থন চেয়েছিলেন।

 ফলে তারা মঙ্গলবার সাক্ষাত করেছেন নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ওয়াল্টার সুজা ব্রাগা নেত্তোর সঙ্গে। এর ফলে দেশটিতে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। মনে করা হচ্ছে প্রেসিডেন্ট তার রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য এসব করছেন।

অস্ট্রেলিয়ার অনলাইন ডব্লিউএ টুডে’তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে,  ব্রাজিলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তিন বাহিনীর প্রধানের পদত্যাগের কথা জানিয়েছে এক বিবৃতিতে। তবে এতে পদত্যাগের কারণ উল্লেখ করা হয়নি। এখন ওই প্রধানদের পদে কাকে বসানো হবে বা হয়েছে, তাদের নামও প্রকাশ করা হয়নি। তবে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন বোলসনারো সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রণ কড়া করার উদ্যোগ নিয়েছেন।  

সাও পাওলোতে ইন্সপার ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রফেসর কার্লোস মেলো বলেছেন, ১৯৮৫ সাল থেকে সশস্ত্র বাহিনীতে প্রেসিডেন্টের এমন পরিষ্কার হস্তক্ষেপের খবর এর আগে আমরা আর কখনো শুনিনি। ১৯৬৪ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ব্রাজিল ছিল কর্তৃত্ববাদী সামরিক স্বৈরাচারের অধীনে। 

বোলসনারো নিজে একজন সাবেক রক্ষণশীল সেনা ক্যাপ্টেন। মাঝে মধ্যে তিনি স্বৈরাচারের প্রশংসা করেছেন। ২০১৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রীপরিষদে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদে বসিয়েছেন বর্তমান এবং সাবেক কিছু সেনা কর্মকর্তাকে। 

কিন্তু মেলো বলেন, সেনাবাহিনীকে রাজনীতি থেকে দূরে রেখেছে নিজেরা। এদিকে, কোভিড-১৯ মহামারির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারায় জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন বোলসোনারো। তার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ক্ষোভ এবং হতাশা তৈরি হয়েছে।

দুই বছর আগে দায়িত্ব গ্রহণ করা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বোলসোনারোর দাবি, লকডাউন জারি করলে তা অর্থনীতিতে ধস নামাবে। তিনি মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এমনকি কোয়ারেন্টাইনেরও পক্ষে নন।

গত কয়েক সপ্তাহে দেশটিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় হাসপাতালগুলোতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। অক্সিজেন সঙ্কট, অপর্যাপ্ত ওষুধ এবং হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ায় আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।

ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ২৬ লাখ ৬৪ হাজার ৫৮ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ৯৩৬ জনের।

আমারসংবাদ/এএসএম