আন্তর্জাতিক ডেস্ক
এপ্রিল ১, ২০২১, ০৮:৫০ এএম
করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ফ্রান্সে। করোনা সংক্রমণের মারাত্মক হার কমাতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ কমপক্ষে এক মাসের কড়া লকডাউন ঘোষণা করেছেন । সেইসঙ্গে টিকাদান কর্মসূচির গতি বাড়িয়ে পরিস্থিতির উন্নতির আশা করছেন তিনি ।
বুধবার (৩১ই মার্চ) সরকারি হিসাবে সেখানে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ৫৯ হাজার ৩৮জন। আইসিইউতে কমপক্ষে ৫০০০ মানুষ।
এখন পর্যন্ত ফ্রান্সে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ৪৬ লাখ মানুষ। মারা গেছেন ৯৫ হাজার ৪৯৫ জন। তিনি কমপক্ষে তিন সপ্তাহের জন্য স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছেন। এক মাসের জন্য দেশের ভিতরে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছেন। খবর
সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন দেশের কিছু এলাকায় লকডাউন ঘোষণা করেন। তা আরো এলাকায় বাড়ানো হয়েছে। আগামী শনিবার থেকে অত্যাবশ্যকীয় নয় এমন সব দোকানপাট বন্ধ ঘোষণা করেছেন। যৌক্তিক কারণ ছাড়া কাউকে বাসা থেকে ১০ কিলোমিটারের বেশি দূরে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বুধবার এসব কথা তিনি ঘোষণা করেন সরাসরি টেলিভিশন ভাষণে।
এ সময় ম্যাক্রন তার দেশের পরিস্থিতিকে নাজুক বলে বর্ণনা করেন। আরো বলেন, এপ্রিল মাসটি হবে আরো কঠিন সময়। তার ভাষায়- যদি আমরা এখনই পরিস্থিতি মোকাবিলা না করি তাহলে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
৪৩ বছর বয়সী এই প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, একদিকে টিকাদান চলছে। অন্যদিকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। দুটি কর্মসূচি নিয়ে এক রকম প্রতিযোগিতা চলছে। তিনি আরো বলেছেন, আগামী সপ্তাহ থেকে যেহেতু স্কুল বন্ধ হচ্ছে, তাই গুরুত্বপূর্ণ কর্মীদের শিশুদের জন্য ক্লাস উন্মুক্ত থাকবে।
ম্যাক্রন বলেন, গত মাসের প্রথম দিকে ১৯টি জেলায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সেই বিধিনিষেধ সারাদেশে বিস্তৃত করা হবে। প্রতিজন ব্যক্তিকে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে সীমিত পরিসরে। ইস্টারের সময়ে দেশজুড়ে রাত ৭টা থেকে কারফিউ থাকবে। জনগণকে এ সময়ে বাড়ি থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ম্যাক্রনের এসব প্রস্তাব নিয়ে পার্লামেন্টে বিতর্ক হবে। তারপর তা ভোটে দেয়া হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি দেশের মতো ফ্রান্সেও করোনার টিকাদান কর্মসূচি ধীর গতিতে এগোচ্ছে। যথেষ্ট সংখ্যায় টিকার সরবরাহে ঘাটতির পাশাপাশি দেশের আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকেও এই সংকটের জন্য দায়ী করা হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত ফ্রান্সে মাত্র ১২ শতাংশ মানুষ টিকা পেয়েছেন। মাক্রোঁ টিকাদান কর্মসূচিতে গতি আনার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ষাটের বেশি বয়সের মানুষ এবং এর এক মাস পর পঞ্চাশের বেশি বয়সের মানুষ টিকা পাবেন। কড়া লকডাউন ও দ্রুত টিকাদানের ফলে মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ধাপে ধাপে কড়াকড়ি শিথিল করা সম্ভব হবে বলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট আশা প্রকাশ করেন।
আমারসংবাদ/এএসএম