রফিকুল ইসলাম
জানুয়ারি ২৩, ২০২২, ০২:৩৫ পিএম
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেছেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনাকালেও দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে বিশ্বদরবার ও বিশ্বসভায় আজ বাঙালিরা মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু দেশের এই উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা অনেকের সহ্য হচ্ছে না। পছন্দও হচ্ছে না। তারা চায় না বাংলাদেশ এগিয়ে যাক। স্বল্পোন্নত রাষ্ট্র থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হোক। তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করতে চায়। এ জন্য দেশ ও দেশের বাইরে বসে রাষ্ট্রবিরোধী, সরকারবিরোধী, আওয়ামী লীগ বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে অপব্যবহার করে অসত্য, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও আজগুবি মিথ্যা তথ্য দিয়ে মনগড়া প্রতিবেদন তৈরি করছে এবং তা বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থায় দিচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রকারীরা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টায় লিপ্ত।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আমার সংবাদের সাথে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সব সময় ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে প্রস্তুত জানিয়ে ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, এসব ষড়যন্ত্রকারীর হাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে হত্যার শিকার হয়েছেন। ২২ বার হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। এই ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করতে চায়। সরকারের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র নতুন নয়। আওয়ামী লীগ এই ষড়যন্ত্র আগেও মোকাবিলা করেছে। আগামীতেও মোকাবিলা করবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবে। এই পথচলা কেউ থামাতে পারবে না।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আজ অনেকেই দেশের সুশাসন নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। সরকার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। মূলত তারা সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের অপচেষ্টা করছেন। এটাই তাদের প্রধান লক্ষ্য।
করোনা মোকাবিলায় সরকারের সফলতার চিত্র তুলে ধরে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বৈশ্বিক মহামারি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রূপ ধারণ করছে। এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকাসহ সবাই এ মহামারি মোকাবিলায় ব্যস্ত। করোনায় অনেক ধনী দেশের মানুষও ভালো নেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাস্তবমুখী উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের কারণে আজ বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে। দেশের বয়স্ক থেকে স্কুলগামী শিশুরাও বিনামূল্যে টিকা পেয়েছে। বুস্টার ডোজ পাচ্ছে। দেশের স্বাস্থ্য খাতে যে হাহাকার ছিল, তা এখন আর নেই।
ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, করোনার সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। প্রতিদিনই সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এমন অবস্থায় দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির পরামর্শে সরকার নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ধর্মীয় কর্মকাণ্ড, সামাজিক কর্মসূচি, রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গোপালগঞ্জে সাপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছিল। সেগুলোও বাতিল করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের দৈনন্দিন রাজনৈতিক কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ না করার জন্য দলের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শুধু করোনার সংক্রমণ যেন বৃদ্ধি না পায়, সে জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জসহ বেশকিছু জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। করোনার কারণে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের নতুন করে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যেন তারা করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির ওপর লক্ষ রেখে সম্মেলনগুলো করেন কিংবা তারিখ পুনর্নির্ধারণ করেন।
মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিটির সম্মেলন সম্পর্কে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া আরও বলেন, আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলের আগেই অধিকাংশ জেলা-উপজেলার সম্মেলন আমরা করে ফেলেছিলাম। দলের জাতীয় কাউন্সিলের পর সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে আমরা অনেক স্থানে সম্মেলন করতে পারিনি। আশা করি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই করোনা সংক্রমণ নিুগামী হবে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে এলেই মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিটির সম্মেলন শেষ করা হবে। তবে বর্তমান ওমিক্রন পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক কর্মসূচি সীমিতভাবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বহাল আছে।
আমারসংবাদ/কেএস