Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

সমন্বিত উদ্যোগই বাঁচাতে পারে হাজারো শিশুর প্রাণ: প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুন ২২, ২০২১, ১০:৪০ এএম


সমন্বিত উদ্যোগই বাঁচাতে পারে হাজারো শিশুর প্রাণ: প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা

মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা মা ও শিশু মৃত্যুর হার যেভাবে কমিয়ে এনেছি, আশা করি একইভাবে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর হার শূন্যে নামিয়ে আনতে পারবো। সরকার এ লক্ষ্যে কাজ করছে।

মঙ্গলবার (২২ জুন) ‘পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু প্রতিরোধ’ শীর্ষক জাতীয় পর্যায়ের এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। 

বেসরকারি সংগঠন গণস্বাক্ষরতা অভিযান, বাংলাদেশ ইসিডি নেটওয়ার্ক, সিআইপিআরবি ও সমষ্টি যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক দাতা সংস্থা গ্লোবাল হেল্থ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এম.পি. বলেন, সরকার ইতোমধ্যে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর বিষয়টি একটি বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে অধিকতর গুরুত্বারোপ করেছে। সরকার ও দাতা সংস্থার যৌথ উদ্যোগে পাইলট ভিত্তিতে কয়েকটি জেলায় কিছু কিছু কাজ হচ্ছে। শিশু সুরক্ষার জন্য দেশব্যাপী এসব কার্যক্রম সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এ বিষয়ে ডিপিপি (ডিটেইলড প্রজেক্ট প্রফোর্মা) প্রণয়নেরও কাজ চলছে। ডিপিপিটি যাতে দ্রুত অনুমোদন হয় আমার মন্ত্রণালয় সে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, শুধুমাত্র সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এককভাবে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে পারবে না। যৌথভাবে সরকারের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সমাজকল্যাণসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সমন্বয় ও সার্বিক সহায়তা ছাড়া যথাযথভাবে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।

সভাপাতির বক্তব্যে গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী বলেন, এনজিওদের সম্পৃক্ত করে প্রতিরোধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হলে একদিকে যেমন স্থানীয় কমিউনিটির অংশগ্রহণ বাড়বে, তেমনি কম সময়ের মধ্যে পুরো দেশে ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে। আমরা আশা করছি দ্রুততর সময়ের মধ্যে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে ডিপিপি অনুমোদিত হবে।

তিনি আরো বলেন, পনিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর চিত্র আমাদের শঙ্কিত করে তোলে, অথচ শিশুমৃত্যুর অন্যতম প্রধান এ সমস্যাটি নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয় না। সামাজিকভাবেও এ সংক্রান্ত সচেতনতা কম এবং প্রতিরোধে জোরালো উদ্যোগ দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ৫ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২৫ নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। রোগ-বালাইয়ের বাইরেও বাংলাদেশে প্রতিবছর বড় সংখ্যক শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। তাই শিশুমৃত্যু নিয়ে এসডিজি’র লক্ষ্য অর্জনে প্রতিরোধযোগ্য এ মৃত্যু কমানো জরুরি। পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি ও সহযোগিতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে বহু সংখ্যক শিশুকে পানিতে ডুবে মৃত্যু থেকে রক্ষা করা সম্ভব। এটি করতে পারলে এসডিজি’র লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে।

বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশের (সিআইপিআরবি) পরিচালক ড. আমিনুর রহমান জানান, দারিদ্র্য, অসচেতনতা ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগের অভাবের কারণে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এছাড়াও উদ্বেগের বিষয় হলো বাড়ির আশেপাশের ডোবা-নালা-পুকুর-খাল-বিল সবকিছু উন্মুক্ত। শিশুরা অন্যদের অলক্ষ্যে অবাধে জলাশয়ে চলে যায় এবং দুর্ঘটনার শিকার হয়। 

সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনের বরাতে তিনি বলেন, দিনের প্রথমভাগে শিশুদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রাখা হলে বাংলাদেশে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার ৭০ শতাংশ রোধ করা সম্ভব। এক্ষেত্রে গ্রামভিত্তিক শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র সফলভাবে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে কার্যকর।

আমারসংবাদ/কেএস