Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ‘ই-জয়িতা’

সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১, ০৬:৫৫ পিএম


নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ‘ই-জয়িতা’

দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে মাত্র তিন মিনিটে একজন উদ্যোক্তা রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন নিজ প্রোফাইল। স্মার্টফোনের সাহায্যে কেবল মোবাইল নম্বর, ইমেইল অ্যাড্রেস থাকলেই নিবন্ধন সম্ভব এবং উদ্যোক্তারা নিজের মতো করে সাজাতে পারবেন নিজ নিজ পণ্য— এমনই একটি ই-কমার্স সাইট ‘ই-জয়িতা’ নিয়ে এলো জয়িতা ফাউন্ডেশন।

গতকাল মঙ্গলবার ধানমন্ডির রাপা প্লাজায় জয়িতা ফাউন্ডেশনের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য অনলাইন মার্কেটপ্লেস ই-জয়িতার উদ্বোধন করেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এমপি।

এরই মধ্য দিয়ে ‘শপিং হোক ই-জয়িতায়’ মূলমন্ত্রে দেশে প্রথমবারের মতো যাত্রা শুরু করলো অনলাইন মার্কেট প্লেস ‘ই-জয়িতা’।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, “সবার কাছে ই-কমার্স জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। একই সাথে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। দেশের ৮০ শতাংশ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন নারী উদ্যোক্তারা। ফলে নারীরা আর্থিক সচ্ছলতা অর্জনের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। জয়িতা ফাউন্ডেশনের অনলাইন মার্কেটপ্লেস ‘ই-জয়িতা’ চালু করা একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। ‘ই-জয়িতা’ মার্কেট প্লেস দেশে নারী উদ্যোক্তা তৈরি ও তাদের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নারীদের মধ্যে রয়েছে উদ্যোক্তা হওয়ার বিশাল সম্ভাবনা। এই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক অগ্রগতির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে। তবে নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠতে রয়েছে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা। সব বাধা-বিপত্তি দূর করে ব্যবসায় উদ্যোগী নারীদের সম্পৃক্ত করা ও তাদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ১৬ নভেম্বর জয়িতা ফাউন্ডেশনের উদ্বোধন করেন।’

অনুষ্ঠানে জয়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান বেগম চেমন আরা তৈয়ব ও ই-ক্যাবের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয় ও জয়িতা ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও নারী উদ্যোক্তারা।

প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা আরও বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথ্য-প্রযুক্তির সুবিধা গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দিয়েছেন। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীরাও ই-কমার্সের মাধ্যমে নিজেদের কর্মসংস্থান করতে পারছেন। কোভিড মহামারির সময়ে ই-কমার্স দ্রুত বিকাশ লাভ করছে। অনেকে চাকরি ছেড়ে দিয়েও ই-কমার্স করছেন এবং তাদের আয় আগের চেয়ে বেশি।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের যে উন্নয়ন তার পেছনে রয়েছে নারীর অবদান। সরকার নারীদের আরো বেশি দক্ষ ও কর্মক্ষম করে গড়ে তুলছে। যার মাধ্যমে কর্মস্থলে নারীর সমতা নিশ্চিত হবে।’

এদিকে ‘ই-জয়িতা’ অনলাইন মার্কেট প্লেসে এক লাখ নারী উদ্যোক্তা সংযুক্ত হতে পারবেন। দেশের সব জেলা থেকে উদ্যোক্তাদের নিবন্ধন শুরু হয়েছে। ক্রেতারা ভিডিওকলে পছন্দের পণ্য নিতে পারবেন। বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকে পণ্য অর্ডার করা যাবে। যেকোনো ব্যাংকের কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেনের সুব্যবস্থা রয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেরপুর থেকে নারী উদ্যোক্তা জিমি আরা জেমি ও রাজশাহী থেকে কান্তা চক্রবর্তী অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে তাদের পণ্য বিক্রি ও ‘ই-জয়িতা’র সুবিধা তুলে ধরেন।  

জয়িতা ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এই প্ল্যাটফর্মে উদ্যোক্তার পণ্যের ছবি দেখে পছন্দ হলে ক্রেতা ভিডিওকলের মাধ্যমে তা যাচাই করতে পারবেন। একসাথে ৬৫ জন ক্রেতার সাথে ভিডিওকলে যুক্ত হতে পারবেন উদ্যোক্তা।

এর ফলে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে আস্থার একটি নতুন সেতুবন্ধন রচিত হবে। উদ্যোক্তাদের সহজ নিবন্ধন, বাংলাদেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে ডাক বিভাগের মাধ্যমে পণ্য পৌঁছানো ও সার্বিক সব সুবিধা দিয়ে জয়িতা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ ‘ই-জয়িতা’ পৌঁছে যাবে সারা বাংলাদেশে।