Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪,

যেখানে সব ক্রেতাই নারী

দিনাজপুর প্রতিনিধি

অক্টোবর ৮, ২০২১, ০৬:০০ পিএম


যেখানে সব ক্রেতাই নারী

বাজার বলতেই আমরা সাধারণত বুঝি সেখানে পুরুষ আর পুরুষ। ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই পুরুষ। কিন্তু দিনাজপুরের এই বাজারে বিক্রেতা পুরুষ হলেও ক্রেতাদের প্রায় সবাই নারী। আর নারীরা এ বাজারের মূল ক্রেতা হওয়ায় তার নাম দেয়া হয়েছে ‘বউবাজার’।

দিনাজপুর শহরের চারুবাবুর মোড় থেকে মালদহপট্টি সড়কে বসে এই বাজার। বিভিন্ন এলাকার স্বল্প আয়ের মানুষরাই এখানকার মূল ক্রেতা। ঈদ, পূজা ও পয়লা বৈশাখের সময়গুলোতেই বেশি জমজমাট থাকে বউবাজার। সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে এই বাজার।

গতকাল শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, দেড় শতাধিক বিক্রেতা মাটিতে ত্রিপল বিছিয়ে তার ওপর পণ্য সাজিয়ে রেখেছেন। রাস্তার পাশে মাটিতে পলিথিন ও ত্রিপল বিছিয়ে তার ওপর সাজানো হয়েছে শাড়ি, থ্রিপিস, প্লাজো, ওয়ান পিস, ওড়না, চাদর, চুড়ি-ফিতা-দুল, জুতা, এমনকি ছোটদের খেলনাও। বিক্রেতারা বলছেন, বউবাজারে বিভিন্ন কাপড়ের সেলাই করা থ্রিপিস বিক্রি হয় ২৫০ থেকে ৭০০ টাকায়।

এ ছাড়া জর্জেট, সুতি, বাটিক, শিফনের ওড়না ৭০-১৭০ টাকায়। বিভিন্ন রকমের শাড়ি ৩৫০ থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হয়। সদর উপজেলা থেকে কাপড় কিনতে আসা মিশু আক্তার বলেন, আমার জন্য শাড়ি, থ্রিপিস ও ওড়না নিয়েছি। আর ছেলের জন্য শার্ট-প্যান্ট নিয়েছি। কম দামে পাওয়া যায় বলে প্রায়ই এখানে এসে কেনাকাটা করি।  

বিরল উপজেলার মিষ্টি রানী বলেন, সামনে পূজা। পরিবারের সবার জন্য এখানে কেনাকাটা করতে এসেছি। আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এ বাজার বেশ ভালো। পূজায় তো সবার জন্য কেনাকাটা করতে হয়। সবাইকে নতুন কাপড় দিতে হয়। এখানে যে কাপড়গুলো ৫ হাজার টাকায় কিনেছি, শহরের দোকানে একই কাপড় ১০ হাজার টাকা দিয়েও পেতাম না।

কাপড় ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান বলেন, আমি তো বড় দোকানে কাজ করি। সেখানে মাস শেষে একটা অঙ্কের টাকা পাই মাত্র। আর এখানে প্রায় প্রতি শুক্রবার আমি ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার কাপড় বিক্রি করি।

কাপড় ব্যবসায়ী আঞ্জু বেগম বলেন, আমি তিন বছর ধরে এখানে ব্যবসা করি। মোটামুটি ভালো বেচাবিক্রি হয়। এখানে সব মহিলা কেনাকাটা করেন। মাঝে মাঝে দু-একজন পুরুষও আসেন।

বউবাজারের কাপড় ব্যবসায়ীরা মিলে গড়ে তুলেছেন দোকান কর্মচারী ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দিনেশ মেহতা  বলেন, কিছু দোকানের কর্মচারী মিলে আমরা এই বাজার গড়ে তুলেছিলাম। দিন দিন বউবাজারে জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু নিম্ন-মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্তরাই নন, অনেক বিত্তবান লোকও এখানে কেনাকাটা করতে আসেন।