Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

ফ্ল্যাট পেলেন হাতিরঝিলের ক্ষতিগ্রস্তরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেম্বর ২৪, ২০২১, ০৩:৫৫ এএম


 ফ্ল্যাট পেলেন হাতিরঝিলের ক্ষতিগ্রস্তরা

হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পের অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ফ্ল্যাট বরাদ্দ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পের অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বরাদ্দকৃত ফ্ল্যাট দেয়া হলো। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, তারা আজকের এ দিনটির জন্য দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছিলেন। এটা অনেকদিনের প্রত্যাশা ছিলো আমাদের। আজ এটা পূরণ হলো।’

তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের যারা প্লট বা ফ্ল্যাট কিছুই পাননি, তারা আমাদের গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে  যোগাযোগ করবেন। তিনি অবশ্যই একটা ব্যবস্থা করে দেবেন।

গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান নিকেতনে হাতিরঝিল ব্যবস্থাপনা ভবনে আয়োজিত ‘হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন’ প্রকল্পের অধিগ্রহণজনিত ক্ষতিগ্রস্তদের অনুকূলে ফ্ল্যাট বরাদ্দপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আজ যারা ফ্ল্যাট পেয়েছেন, তাদের কান্নাটাও আমি দেখেছি। জমি অধিগ্রহণের পর তারা রাত দুইটা-তিনটা পর্যন্ত আমার বাসায় হুলস্থূল করেছিলেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে জমি অধিগ্রহণ হলে তিনগুণ ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। হাতিরঝিলের আশপাশের এলাকার এক কাঠা জায়গার দাম এখন ১০ কোটি টাকা হয়েছে। আর সেই জায়গাগুলোর মধ্যে নিচু জমিগুলোর ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছিল দেড় লাখ টাকা, আর উঁচু জমিগুলোর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে। সে জন্যই তাদের কান্নার রোল ছিলো। তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে একাধিকবার আবেদন করেছেন এবং অনেক সময় রাস্তা অবরোধ করেছিলেন। এছাড়া তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী মান্নান সাহেবের বাড়ি ঘেরাও করেছিলেন ক্ষতিগ্রস্তরা। তখন আমি এ এলাকার সংসদ সদস্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তখন জিজ্ঞাসা করলেন যে এলাকার লোকজন কেন মন্ত্রীপাড়ায় এলো। তখন প্রধানমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্তদের দুঃখের কথা জানলেন।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হাতিরঝিল যেদিন উদ্বোধন হয়, সেদিনও আমি সংসদ সদস্য হিসেবে আমার বক্তব্যে এ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের দুঃখের কথা তুলে ধরি। তখন প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‘নো’ বলে কোনো শব্দ নেই। যেখানে জনগণের কষ্ট, সেটা লাঘব করার জন্য প্রধানমন্ত্রী পদক্ষেপ নিয়েছেন।

হাতিরঝিল প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, হাতিরঝিল ছিলো এক সময় নোংরা পানির একটি ভাগাড়। আগে আমরা দেখেছি, হাতিরঝিলের স্বচ্ছ পানিতে নৌকায় করে বিভিন্ন পণ্য আসতো। কিন্তু সেটি হারিয়ে গিয়ে হাতিরঝিল পরিণত হয়েছিল নোংরা ভাগাড়ে। আর এ নোংরা ভাগাড় থেকে হাতিরঝিল আজ একটি উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। যেখানে এসে আমরা ভুলে যাই যে অস্ট্রেলিয়া নাকি সিঙ্গাপুর নাকি বাংলাদেশে এসেছি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ বলেন, রাজধানী ঢাকাসহ প্রতিটি নগরীর অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। এর অংশ হিসেবে রাজউকের হাতিরঝিল এলাকার বেগুনবাড়ি ধাপ সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৩১০ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছে। এর ফলে এখানকার বাসিন্দাদের অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও আবাসন সমস্যা লাঘবের উদ্দেশে বেগুনবাড়ি মৌজায় ১৫ তলাবিশিষ্ট দুটি অ্যাপার্টমেন্টে ১১২টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, বেগুনবাড়ির এ ফ্ল্যাটগুলো ক্ষতিগ্রস্তদের জন্যই নির্মাণ করা হয়।

হাতিরঝিলের ক্ষতিগ্রস্তদের ফ্ল্যাট বরাদ্দের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বারবার আমাকে তাগাদা দিয়েছেন। তিনি অত্যন্ত ভদ্র ও ভালো মনের মানুষ। তিনি এ (তেজগাঁও) এলাকার সংসদ সদস্য। তার নেতৃত্বে এবং আচার ব্যবহারের প্রশংসা অতুলনীয়। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদুল্লাহ খন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এ বি এম আমিনুল্লাহ নুরী। এছাড়া অনুষ্ঠানে হাতিরঝিল এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সদস্য এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।