Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫,

রাবি শিক্ষিকা আক্তার জাহানের ‘আত্মহত্যা’ মামলায় অভিযোগপত্র

রাবি প্রতিনিধি॥প্রিন্ট সংস্করণ

সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৭, ০৬:১৫ এএম


রাবি শিক্ষিকা আক্তার জাহানের ‘আত্মহত্যা’ মামলায় অভিযোগপত্র

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষিকা আক্তার জাহান জলির আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় তার সহকর্মী আতিকুর রহমান রাজার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজশাহী নগরীর মতিহার থানার এসআই ব্রজ গোপাল জানান, গত মাসে (অগাস্ট) আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে নিজের আবাসিক কক্ষ থেকে সহযোগী অধ্যাপক আকতার জাহান জলির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে, আকতার জাহানের সাবেক স্বামী একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানভীর আহমদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত তদন্ত কমিটি এখনও প্রতিবেদন দেয়নি। আতিকুর রহমান রাজা আতিকুর রহমান রাজা মামলার নথি থেকে জানা যায়, ৯ সেপ্টেম্বর বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনের নিজের আবাসিক কক্ষের দরজা ভেঙে আকতার জাহান জলির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ওই কক্ষ থেকে লাশ উদ্ধারের সময় একটি চিরকুট উদ্ধার করে পুলিশ। চিরকুটে লেখা ছিল, আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। শারীরিক, মানসিক চাপের কারণে আত্মহত্যা করলাম। সোয়াদকে (আকতার জাহানের ছেলে) যেন ওর বাবা কোনোভাবেই নিজের হেফাজতে নিতে না পারে। যে বাবা সন্তানের গলায় ছুরি ধরতে পারে, সে যে কোনো সময় সন্তানকে মেরেও ফেলতে পারে বা মরতে বাধ্য করতে পারে।

পরদিন এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে জলির ছোট ভাই কামরুল হাসান বাদী হয়ে মতিহার থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। গত বছরের ৪ নভেম্বর আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে আক্তার জাহানের সহকর্মী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আতিকুর রহমান রাজাকে আটক করে পুলিশ। ৫ নভেম্বর আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। গ্রেপ্তারের পর রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) আল আমীন বলেছিলেন, আক্তার জাহানের ফোন কল ও এসএমএস লিস্ট উদ্ধারের পর সেগুলো যাচাই বাছাই করে এবং আতিকুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে ‘আত্মহত্যার’ পেছনে তার জড়িত থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছি। গ্রেপ্তার থাকায় গত বছরের ২৯ নভেম্বর সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আতিকুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তবে পরে হাই কোর্ট থেকে তিনি জামিনে ছাড়া পান।

এদিকে, শিক্ষক আকতার জাহানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তার সাবেক স্বামী এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানভীর আহমদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় তানভীর আহমদকে বিশেষ ছুটি দেওয়া হয়।
ওই সভায় অভিযোগ তদন্ত করার জন্য পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিমা জোহরা হাবিব ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মহা. নাসিম রেজা।

অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিটিকে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কমিটি যতদিন পর্যন্ত তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেয়, ততদিন তাকে ছুটিতে থাকতে হবে। তবে তিনি বেতন পাবেন। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলে তার ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে প্রশাসন। তিনি আরও বলেন, তদন্তের কাজ চলছে। এ মাসের শেষের দিকেই আমরা একটা প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।