Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

শিশুদের সাজা না দিয়ে বই হাতে পরিবারের কাছে তুলে দিলেন আদালত

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

জানুয়ারি ২০, ২০২১, ১১:৩০ এএম


শিশুদের সাজা না দিয়ে বই হাতে পরিবারের কাছে তুলে দিলেন আদালত

সুনামগঞ্জে ৩৫ মামলায় ৪৯ শিশুকে জেলে না পাঠিয়ে বই হাতে পরিবারের কাছে তুলে দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো: জাকির হোসেন। 

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন বুধবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে জনকীর্ণ আদালতে আসামি, তাদের অভিভাবক ও আইনজীবীদের উপস্থিতিতে এই ব্যতিক্রমী রায় ঘোষণা করেন। 

মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রবেশনে মুক্তি দেয়া এসব শিশু সাধারণ মামলা ও মারামারি মামলার আসামি ছিলো।

নিয়ম অনুযায়ী এসব মামলার রায়ে তাদের প্রত্যেকের সাজা হওয়ার কথা ছিল। শিশুদের ভবিষ্যৎ জীবন ছিল অনিশ্চিত। তাদেরকে সুস্থ্য ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে ৩৫ মামলা নিস্পত্তি করে ৪৯ শিশুকে ১০টি শর্তে মুক্তি দিয়েছেন আদালত। ১০টি শর্ত পালন করতে নিয়মিত মনিটরিং করবে জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের অধীনে জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা। 

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট নান্টু রায় জানান, আদালত ৩৫ মামলায় ৪৯ শিশুকে বিভিন্ন অপরাধে শাস্তি না দিয়ে সংশোধন হওয়ার সুযোগ এবং সুস্থ্য ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে শিশু অপরাধ মামলায় এই যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন।

১০ শর্তের মধ্যে রয়েছে, বাবা মায়ের আদেশ নির্দেশ সঠিকভাবে মেনে চলা ও তাদের  সেবা যত্ন করতে হবে। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে ও ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠ করতে হবে। প্রত্যেকে কমপক্ষে ২০টি গাছের চারা রোপন ও পরিচর্যা করতে হবে। অসৎ সঙ্গ ত্যাগ ও মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে। ভবিষ্যতে কোনো অপরাধের সঙ্গে নিজেকে জড়াতে পারবে না। 

রায় দেয়ার সময় বিচারক জাকির হোসেন আদালতে বলেন, ‘এই রায়ের ফলে ছোটখাট অনেক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হলো। শিশুরা তাদের আপন ঠিকানা ফিরে পেলো। মা-বাবার দুশ্চিন্তার অবসান হলো এবং তারা তাদের আদরের সন্তানকে নিজের কাছে রেখে সংশোধনের সুযোগ পেলো।
আজকের শিশুরা আগামী দিনে আমাদের স্থান দখল করবে।’

এসময় জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা শাহ মো. শফিউর রহমান  আদালতের নির্দেশ পালন করতে অভিভাবক ও শিশুদের সহযোগিতা চান। প্রবেশনকালে এই শিশুরা শর্তগুলো যথাযথভাবে পালন করছে কিনা সেটির তত্ত্বাবধান করবেন প্রবেশন কর্মকর্তা। পাশাপাশি অভিভাবকদেরও দায়িত্ব রয়েছে এসব শর্ত পালনে তাদের সহযোগিতা করা, পাশে থাকার। তিন মাস পরপর আদালতে এই বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে হবে। 

রায় শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেনের নিজস্ব অর্থায়নে মামলায় জড়িত শিক্ষার্থীদের হাতে মাঝে ‘১০০ মনষীর জীবনী’ বই তুলে দেয়া হয়।

আমারসংবাদ/এমএ