Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

১ম, ২য় ও ৩য় বিশ্বের দেশ: কারা এবং কেন?

আমার সংবাদ ডেস্ক

ডিসেম্বর ৩, ২০১৯, ১২:২৬ পিএম


১ম, ২য় ও ৩য় বিশ্বের দেশ: কারা এবং কেন? বিশ্বকে তিনটি ক্যাটেগরিতে ভাগ করার জন্য প্রথম বিশ্ব, দ্বিতীয় বিশ্ব এবং তৃতীয় বিশ্ব এই টার্মগুলি ব্যবহৃত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে 'শীতল যুদ্ধ' চলাকালীন সময়ে বিশ্বের দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের ক্ষমতার প্রতিযোগিতার ফসল হিসেবে এইসব নামের আবির্ভাব। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে বিশ্বে শুরু হয় স্নায়ুযুদ্ধ। এই যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ন্যাটো বাহিনী ও সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে ওয়ারশ জোট গঠিত হয়। ন্যাটোর সহযোগী দেশ যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, পশ্চিম জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন তথা পশ্চিম ইউরোপ; এদের বলা হয় প্রথম বিশ্ব। আর সোভিয়েতের পক্ষে থাকা চীন, কিউবা ও তাদের সহযোগীরা হলো দ্বিতীয় বিশ্ব। কোনো পক্ষে অংশ না নেওয়া আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা, এশিয়া, ওশেনিয়ার দেশগুলি হলো তৃতীয় বিশ্ব। এই সময় তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো গড়ে তোলে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন; যার নেতৃত্বে ছিলেন জওহরলাল নেহেরু, সুহার্তো ও টিটো। তৃতীয় বিশ্বের এই দেশগুলোর মধ্যে কিছু দেশ শিল্প উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে; এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ভারত ও ব্রাজিল। ১৯৯২ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন অবলুপ্তির মধ্য দিয়ে এ স্নায়ুযুদ্ধের অবসান ঘটে। ব্রিটিশ লেখক, কূটনীতিবিদ ও রাষ্ট্রনায়ক স্যার উইনস্টন চার্চিল'র বিখ্যাত লৌহ পর্দা বা আয়রন কার্টন বক্তৃতা থেকে শীতল যুদ্ধের সূচনা বিবেচিত হয়। তার বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, পশ্চিম ও পূর্বের বিভক্তি একটি দৃঢ বাস্তবতা যা তিনি 'আয়রন কার্টন বা লৌহ পর্দা' বলে অভিহিত করেছেন। ১৯৫২ সালে ফ্রেঞ্চ জনসংখ্যাতাত্ত্বিকবিদ আলফ্রেড সোভে বিপ্লব-পূর্ব ফ্রান্সের তিনটি রাজ্যের অবস্থার প্রেক্ষিতে তৃতীয় বিশ্ব নামটি উল্লেখ করেছিলেন। প্রথম দুই এস্টেট হচ্ছে অভিজাত ও যাজকগোষ্ঠীর এবং বাকি সব হচ্ছে তৃতীয় এস্টেটের অন্তর্ভুক্ত। তিনি পুঁজিবাদী বিশ্বকে (প্রথম বিশ্ব) অভিজাত ও সমাজতান্ত্রিক বিশ্বকে (দ্বিতীয় বিশ্ব) তুলনা করেছেন যাজক সম্প্রদায়দের সাথে; আর বাকিদের তৃতীয় বিশ্বের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। সোভে তৃতীয় বিশ্বকে দেখিয়েছেন যে সব দেশ শীতল যুদ্ধে জড়ায় নি বা পূর্ব-পশ্চিম দ্বন্দ্বে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করে নি। ১৯৭৪ সালে ন্যাশনাল ইন্ডিয়ান ব্রাদারহুডের প্রধান জর্জ ম্যানুয়েল তার বই ‘দ্য ফোর্থ ওয়ার্ল্ড: এন ইন্ডিয়ান রিয়েলিটি’ তে তিনি চতুর্থ বিশ্বের ধারণা দিয়েছেন। সেখানে তিনি চতুর্থ বিশ্ব বলতে সেই আদিবাসী জনগণের জাতিগুলোকে সাংস্কৃতিক বা নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী বুঝিয়েছেন। যাদের সাধারণ বাস্তবতায় কোনো রাষ্ট্র নেই। বরং তারা একটি দেশের ভিতরে বা বহুদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাস করে। উদাহরণস্বরূপ, রেড ইন্ডিয়ান বা আদিবাসী আমেরিকানরা উত্তর আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে বাস করে। রাষ্ট্রহীন, দরিদ্র এবং প্রান্তিক জাতিগুলো প্রতিনিয়ত বৈষম্য, বঞ্চনা ও নিপীড়নের শিকার হয়। এরা হয়ে থাকে বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠী। বর্তমানে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর যে অবস্থা, তাতে তাদেরকে চতুর্থ বিশ্বের অন্তর্গত হিসেবে ধরা যেতে পারে। জেআই