ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২০, ০৮:৪২ পিএম
আমাদের মধ্যে কম-বেশি অনেকেরই ঘাড়, পিঠ বা কোমর ব্যথার সমস্যায় পড়েছে, তাদের আবার অনেকে মেরুদণ্ড, ঘাড়, পিঠ ও কোমরের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন। বিষেশত বয়ষ্ক মহিলারা বেশি কষ্ট পায়।
আঘাতহীন ব্যথার জন্য মেরুদণ্ডে হালকা ব্যথা হলেও পরবর্তী সময়ে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় শরীরের অন্য অংশে। তাই মেরুদণ্ডের ব্যথায় সবার আগে প্রয়োজন রোগ নির্ণয় ও সঠিক ও কার্যকর চিকিৎসা। তা না হলে রোগীর যন্ত্রণা বাড়তে থাকে।
আমাদের মেরুদণ্ডের গঠন অনুযায়ী মাথার খুলির নীচ থেকে প্রথম ৭টি হাড় বা কশেরুকা নিয়ে ঘাড়, পরবর্তী ১২টি হাড় নিয়ে পিঠ, তার নিচের ৫টি হাড় নিয়ে কোমড় গঠিত।
মেরুদণ্ডের গঠন: গঠন অনুযায়ী মাথার খুলি থেকে প্রথম সাতটি হাড় বা কশেরুকা নিয়ে ঘাড়, পরবর্তী ১২টি হাড় নিয়ে পিঠ, তার নিচে পাচটি হাড় নিয়ে কোমর গঠিত।
নানা কারণে মেরুদণ্ডে ব্যথা হয়ে থাকে। ব্যথার উৎপত্তিস্থল ও লক্ষন প্রকাশের ভেতর দিয়ে মাথার খুলি থেকে নেমে আসা নার্ভ বা স্পাইনাল কর্ডে দুই হাড়ের মধ্যবর্তী ডিস্কের কিছু অংশ বের হয়ে গিয়ে চাপের সৃষ্টি করলে ব্যথা হয়।
প্রচলিত ভায়ায় এ জাতীয় ব্যথাকে মেরুদণ্ড হাড়ের ক্ষয়, হাড়ের ফাক হয়ে যাওয়া বা হাড়ের বৃদ্ধি বলা হয়ে থাকে। প্রকৃত পক্ষে চিকিৎসাশাস্ত্রে এ জটিলতাকে ডিস্ক প্রোল্যাপ্স, হার্নিয়েটেড ডিস্ক, স্পাইনাল স্টেনোসিস বলা হয়।ডিস্কের স্থানচ্যুতি বা সরে যাওয়ার মাত্রার ওপর নির্ভর করে প্রোল্যাপ্স রোগের জটিলতা।
মেরুদণ্ডের ব্যথার লক্ষন সমূহ-
-দাড়ানো বা বসা অবস্থায় কোমড়ে ব্যথা অনুভূত হওয়া।
-পায়ের বোধশক্তি কমে আসা ও পর্যায়ক্রমে পা দুর্বল হয়ে পায়ের কার্যক্ষমতা লোপ পায়।
-কোমড় থেকে উৎপন্নব্যথা পায়ে ছড়িয়ে পড়া
-পায়ের নিতম্ব ও পায়ের মাংস পেশীতে ব্যথা
-পায়ের বিভিন্ন অংশে ঝিন-ঝিন, শিন-শিন করা
-পায়ের বোধ শক্তি কমে আসা পর্যায়ক্রমে পায়ের অসারতা।
-ধীরে ধীরে পা দূর্বল হয়ে পায়ের কার্যক্ষমতা লোপ পাওয়া, চূড়ান্ত পর্যায়ে পঙ্গুত্ব বরণ করা।
-নানাবিধ কারনে মেরুদণ্ডের ব্যথা সৃষ্টি হয়ে থাকে। ব্যথার উৎপত্তি স্থল ও লক্ষন প্রকাশের স্থান আলাদা হওয়ায় প্রায়শই সঠিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা ব্যহত হয়।
-মেরুদণ্ডের হাড় গুলির ভিতর দিয়ে মাথার খুলি থেকে নেমে আসা রগ বা ষ্পাইনাল কর্ডে দুই হাড়ের মধ্যবর্তী ডিস্কের কোন অংশ বের হয়ে গিয়ে চাপের সৃষ্টি করলে ঐ স্নায়ু মুলেও সেখান থেকে বেড়িয়ে যাওয়া নার্ভের বিচরন ক্ষেত্রে ব্যথা হয়।
-এ জাতীয় ব্যথাকে প্রচলিত ভাষায় মেরুদণ্ডের হাড়ের ক্ষয়/ হাড়ের ফাক হয়ে যাওয়া/ হাড়ের বৃদ্ধি হিসাবে বলা হয়ে থাকে।
-প্রকৃত পক্ষে মেডিক্যাল টার্মে এই জটিলতাকে ডিস্ক প্রোল্যাপ্স / হার্নিয়েটেড ডিস্ক/ স্পাইনাল স্টেনোসিস বলা হয়। ডিস্কের স্থানচ্যুতি বা সরে যাওয়ার মাত্রার উপর নির্ভর করে ডিস্ক প্রোল্যাপ্স রোগের জটিলতা।
-দীর্ঘমেয়াদী রোগ যন্ত্রনায় রোগীরা সাধারণত ব্যথানাশক ঔষধের উপর নির্ভর করে সাময়িক ব্যথা মুক্তির চেষ্টা করে। নিয়মিত ব্যথানাশক খাওয়ার ফলে কিডনী বিকল হয়ে যাওয়ার ঝুকি অনেক বেড়ে যায়।
পরামর্শ: ব্যথা নিরাময়ের জন্য রোগীরা সাধারণত ব্যথানাশক ঔষধের ওপর নির্ভর করে ব্যথা উপশমরে চেষ্টা করে। নিয়মিত ব্যথানাশক খাওয়ার ফলে কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার ঝুকি বেড়ে যায়। তাই ঘাড় পিঠ বা কোমর ব্যথায় অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
হোমিওপ্রতিবিধান : রোগ নয় রোগিকে চিকিৎসা করা হয়। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা লক্ষণ ভিত্তিক। রোগীর ভাল-মন্দ অবয়ব, সর্বদৈহিক, শারীরিক ও মানসিক কাতরতাসহ যাবতীয় দিক বিবেচনা করে চিকিৎসা করা হয়, সেই জন্য একজন অভিজ্ঞ হোমিওচিকিৎসকে রোগীর পুরা লক্ষণ নির্বাচন করে মেরুদণ্ডের রোগীর চিকিৎসা দিতে পারলে আল্লাহর রহমতে এই সব রোগীরা ভাল হয়ে যায়। অভিজ্ঞ চিকিৎসকগণ প্রাথমিকভাবে যেসব ওষুধ নির্বাচন করে থাকেন- আর্নিকা মন্ট, কস্টিকাম, এরাম ট্রাইফাইলাম, ক্যালমিয়া, ন্যাজা, জিম্কাম, মেট, আয়োডাম, প্যারিস, এসিডফ্লুয়োরিক, লাইসিন, স্ট্রামোনিয়াম, ল্যাকেসিস, আর্নিকা, কোবাল্টাম, সাইলিসিয়া, রাস টক্সসহ আরো অনেক ওষুধ লক্ষণের উপর আসতে পারে।
লেখক : স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা, হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটি কেন্দ্রীয় কমিটি, কো-চেয়ারম্যান : হোমিওবিজ্ঞান গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
আমারসংবাদ/এসটিএমএ