Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ ও হোমিও পরামর্শ

ডা. মুহাম্মদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

নভেম্বর ২, ২০২০, ০৭:০৫ পিএম


লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ ও হোমিও পরামর্শ

কখনো কখনো বেশি পেটে ব্যথা অনুভব করলে অবহেলা করা উচিত নয়। বিশেষ করে, পেটের ডান পাশে নিয়মিত ব্যথা হলে তা লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। লিভার ক্যান্সার বোঝার জন্য একজন চিকিৎসক এ লক্ষণটি চিহ্নিত করে।

লিভারে কোনো ফোঁড়া বা পিণ্ড দেখা দিতে পারে। পেটের উপর বা নিচের ফোঁড়া ও পিণ্ডের মতো অংশ দেখা দিতে পারে। এর পাশাপাশি মাঝে মাঝে পেট ভরা থাকতে পারে। এসব লক্ষণ লিভার ক্যান্সার হলে দেখা দেয়। অনেক সময় পেট ফুলে যেতে পারে। তাই পেট ফুলে গেলে তা অবহেলা করা উচিত নয়।

কারণ এটি ক্যান্সার কোষের অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণে হতে পারে। আর লিভারে তরল পদার্থ জমে যাওয়ার কারণে পেটে বা লিভারের মধ্যে চাপ বৃদ্ধি পায়। এ কারণে লিভারের কর্মক্ষমতা কমে যায় ও লিভারের অকার্যকরিতা দেখা দিতে পারে।

জন্ডিসে আক্রন্ত হলে তা লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ হিসেবে ধরা যায় না। জন্ডিস কিছু কিছু সময় লিভার ড্যামেজের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবেও দেখা দিতে পারে। যা পরবর্তীতে লিভার ক্যান্সারে পরিণত হতে পারে। ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া ও প্রসাব গাড় হলে কখনই অবহেলা করা উচিত নয়।

যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। অবসাদ লিভারের ক্যান্সারের সঠিক কোনো লক্ষণ প্রকাশ করে না। কিন্তু অনেক সময় বিশ্রাম নেয়ার পরও অনেক বেশি ক্লান্তি অনুভব করা বা অল্প পরিশ্রমে বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়লে অবহেলা করা উচিত নয়।

এগুলো পাশাপাশি যদি পেটে ব্যথা বা জ্বর থাকে তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। অনেক সময় সাধারণ কারণে বা ইনফেকশনের কারণে জ্বর হতে পারে। পেটে ফুলে থাকা বা পেটব্যথার সঙ্গে যদি জ্বর জ্বর অনুভূত হয় তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। ক্ষুধা কমে যাওয়া বা পেট ভরা ভরা অনুভর করা লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ প্রকাশ করে। ক্ষুধা কমে গেলে শরীরের ওজন কমে যায়।

শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের না হলে লিভারের কাজে বাধা সৃষ্টি হয়। তাই লিভার ক্যান্সার হতে পারে। এছাড়াও নারীদের থেকে পুরুষের লিভার ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। ক্রোনিক ইনফেকশন বা হেপাটাইটিস-বি বা সি থাকলে লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। লিভারের অনেক বেশি আয়রন জমা হলেও ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

লিভার সিরোসিস রোগীদের জন্য কিছু পরামর্শ
অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান লিভার সিরোসিসের অন্যতম কারণ। সাধারণত ১০ বছর বা তার বেশি সময় ধরে অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করলে লিভার সিরোসিসের ঝুঁকি থাকে।

* লিভারে প্রদাহ সিরোসিসের আরেকটি কারণ। সাধারণত এ,বি,সি ভাইরাস আক্রমণ করলে লিভার সিরোসিস হতে পারে। এগুলো রক্তদান বা গ্রহণের সময় শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এ কারণে রক্ত দেয়া বা নেয়ার আগে রক্ত পরীক্ষা করা উচিত।
* মসলাদার, জাঙ্কফুড, প্রক্রিয়াজাত খাওয়া এড়িয়ে চলুন।   
* রাস্তাঘাটে সহজপ্রাপ্য খাবার না খাওয়াই ভালো। বরং দৈনিক খাদ্য তালিকায় বেশি করে শাকসবজি রাখুন এবং কম তেলযুক্ত খাবার খান।
* গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দিনে ২ থেকে ৩ বার কফি খান তাদের লিভার সিরোসিসের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় কম থাকে।
* কাঁচা পেঁয়াজ ও রসুন শরীরের টক্সিনকে বের করতে সাহায্য করে। তাই প্রতি দিন খাদ্য তালিকায় কিছুটা কাঁচা পেঁয়াজ ও রসুন রাখুন।
* শরীরের কোথাও ব্যথা বাড়লেই তা সহ্য না করে যখন তখন ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা লিভারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। ব্যথানাশক ওষুধে ব্যবহূত নানা উপাদান লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে লিভারের ক্ষতি করে।
* পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
* কেউ হেপাটাইটিস-বি বা সি-তে আক্রান্ত হলে স্ক্রিনিং করুন। লিভার সিরোসিস প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলে তা অনেকক্ষেত্রে নিরাময় করা সম্ভব।

হোমিও সমাধান
রোগ নয়, রোগীকে চিকিৎসা করা হয়। এই জন্য  লিভার সিরোসিসের প্রাথমিক ও মারাত্মক লক্ষণের কোনোটি দেখা দিলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। প্রাথমিক অবস্থায় লিভার সিরোসিসের রোগীকে  সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করলে আল্লাহর রহমতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাতে সম্ভব।

লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক স্বাস্থ্য তথ্য, স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা, হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটি কেন্দ্রীয় কমিটি ও কো-চেয়ারম্যান, হোমিওবিজ্ঞান গবেষণা ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র

আমারসংবাদ/এসটিএম