Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ০৯ জুলাই, ২০২৫,

জেনে নিন হলুদের যত স্বাস্থ্য উপকারিতা

আগস্ট ২৯, ২০১৬, ০৫:৫৯ এএম


জেনে নিন হলুদের যত স্বাস্থ্য উপকারিতা

আমাদের দেশীয় রান্নার অপরিহার্য একটি উপাদান হচ্ছে হলুদ। যা খাদ্যের রঙ ও গন্ধকে উন্নত করে। হলুদের স্বাস্থ্য উপকারিতাও প্রচুর। হলুদের গুঁড়ার পাশাপাশি যদি কাঁচা হলুদ আপনার ডায়েটে যুক্ত করতে পারেন তাহলে সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক হলুদের যত স্বাস্থ্য উপকারিতা-

১. দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ দূর করেঃ-
কম সময়ের প্রদাহ শরীরের জন্য উপকারী এবং এটি রোগের সঙ্গে লড়াই করে। তবে দীর্ঘ সময়ের প্রদাহ বা ক্রনিক ইনফ্লামেশন জীবননাশের কারণও হয়। হলুদ এই দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে।

২. অ্যান্টি অক্সিডেন্টঃ-
হলুদের রয়েছে কারকিউমিন, এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফ্রি রেডিকেলস দূর করতে সাহায্য করে। ফ্রি রেডিকেলস শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই ফ্রি রেডিকেলসের মাত্রা কমা শরীরের জন্য ভালো।

৩. মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাকে ভালো রাখেঃ-
বিডিএনএফ হরমোন অথবা ব্রেন-ডিরাইভড নিউরোট্রোপি মস্তিষ্কে নিউরোনের ভাগ এবং সংখ্যা বৃদ্ধিতে কাজ করে। বয়স বাড়লে মস্তিষ্কের এই কার্যকারিতা কমে যায়। যদি খাদ্যতালিকায় হলুদ থাকে, এই হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায়। এটি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে, স্মৃতিশক্তি এবং বুদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে।

৪. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ-
রক্তনালির অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হলে রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত হয়, এতে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। খাদ্যতালিকায় হলুদ থাকলে রক্তনালীর কার্যক্রম ভালো থাকে। এর ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।

৫. আরথ্রাইটিসের ব্যথা রোধেঃ-
গাঁটের প্রদাহ আরথ্রাইটিসের একটি প্রচলিত কারণ। হলুদের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বা প্রদাহরোধী গুণ। এটি আরথ্রাইটিস রোধে সাহায্য করে। হলুদে উপস্থিত কারকুমিন বিভিন্ন ক্রনিক (যেসব রোগ প্রতিকার করা যায় না) রোগের চিকিৎসায় বেশ কার্যকর। বিভিন্ন ধরনের পেটের সমস্যা রোধে হলুদ কাজ করে।

৬. ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করেঃ-
ক্যানসারের কোষের বৃদ্ধি এবং ছড়িয়ে পড়া রোধে হলুদ সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটি মুখগহ্ববরের ক্যানসার রোধে কার্যকরী।

৭. বিষণ্ণতা দূর করেঃ-
গবেষণায় বলা হয়, কারকুমিন বিভিন্ন ধরনের বিষণ্ণতা দূরকারী ওষুধের মতো সমান কাজ করতে পারে। তাই খাদ্যতালিকায় হলুদ রাখা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। তবে যেকোনো খাবার নিয়মিত গ্রহণের ক্ষেত্রে আপনার শারীরিক অবস্থা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৮. কাশি ও ঠান্ডার জন্যঃ-
ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস হলুদ মেশানো দুধ পান করলে তা শুধু ঘুমের জন্যই উপকারী নয় বরং ঠান্ডা ও কাশি দূর করতেও সাহায্য করে চমৎকার ভাবে। এক টুকরো কাঁচা হলুদ পিষে নিয়ে ফোটানো দুধের সাথে মিশান। এর সাথে এক চামচ গুঁড় বা চিনি মিশান। দুধ কুসুম গরম থাকতে থাকতেই পান করুন। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে তা হল এই দুধ পান করার পর পানি পান করা যাবেনা। কারণ হলুদে যে তাপ উৎপন্নকারী পদার্থ থাকে তার কাজে বাঁধার সৃষ্টি করে পানি।

৯. বদহজমের জন্যঃ-
কাঁচা হলুদ যখন রসুন ও ঘি এর সাথে মিশ্রিত করে গ্রহণ করা হয় তখন তা বদহজম দূর করতে সাহায্য করে। যদি আপনার পেটে ব্যথা হয় অথবা বদহজমের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে কাঁচা হলুদ সিদ্ধ করে এর সাথে সমপরিমাণ রসুন এবং এক চামচ ঘি মিশিয়ে গ্রহণ করুন। হলুদের কারকিউমিন এবং তেল বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়ার উপসর্গ কমাতে সাহায্য করবে।

১০. গলা ব্যথার জন্যঃ-
কাঁচা হলুদের ভেষজ কার্যকারিতা এর অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি যৌগের কারণে হয় যা গলা ব্যথা নিরাময়ের একটি ঘরোয়া প্রতিকার। এক চা চামচ কাঁচা হলুদের পেস্ট এর আধা চা চামচ রসুনের পেস্ট ও এক চা চামচ গুঁড় মিশান। এই মিশ্রণটি খাওয়ার পূর্বে সামান্য গরম করে নিন। প্রাকৃতিক ভাবে গলা ব্যথা সারানোর জন্য দিনে দুইবার এই মিশ্রণটি পান করুন।

কাঁচা হলুদ ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারেন। হালকা ভাবে প্যাকেট করে রাখুন তাহলে চিতি পড়বে না। টারমারিক উজ্জ্বল কমলা-হলুদ বর্ণের হয় বলে আঙ্গুলে দাগ লাগতে পারে বিশেষ করে কাঁচা হলুদের। যদি আপনার আঙ্গুলগুলো হলুদ দেখতে না চান তাহলে কাঁচা হলুদ থেঁতলানোর সময় হাতে গ্লাভস পরে নিন।