আমার সংবাদ ডেস্ক
জানুয়ারি ১৭, ২০১৮, ০৭:০৫ এএম
শরীরের তাপস্থাপক হিসেবে কাজ করে ঘাম উৎপাদক গ্রন্থিগুলি। কারোর ঘাম বেশি, কারোর কম। কিন্তু আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের ক্রমাগত হাত ও পায়ের পাতা ঘামে। এমনই ঘাম হয়, যে সেলফি তুলতে গিয়ে বা অফিসে পাঞ্চ করে অ্যাটেনডেন্স দিতে গিয়ে মেশিনের সেন্সর আঙুলের ছাপ চিনতে পারে না। এতে সকলের সামনে হেনস্থা হওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হতে পারে।
হাত-পা ঘামে কেন? কী এর কারণ...
হাত-পা সারাক্ষণ ঘামে ভর্তি থাকলে মূলত ২-৩টে সমস্যা দেখা দিতে পারে :
১.হাত ঘামা (Sweaty Palms) বা পালমার হাইপারহাইড্রোসিস
২.পা ঘামা (Sweaty Feet) বা প্ল্যান্টার হাইপারহাইড্রোসিস
৩.বগল ঘামা (Sweaty Armpits) বা অগজ়িলারি হাইপারহাইড্রোসিস
মানুষের শরীরে ২০-৫০ লাখ অ্যাক্রিন ঘামগ্রন্থি আছে। ত্বকের পুরোটা জুড়েই গ্রন্থি। শরীরের তাপমাত্রা বাড়লে লাখ লাখ গ্রন্থি থেকে ঘাম নিঃসরিত হয়। ঘাম বাষ্পে পরিণত হলে শরীর ঠান্ডা হয়। কিন্তু বগলের ঘামগ্রন্থি একটু আলাদা। বলা হয়, অ্যাপোক্রিন ঘামগ্রন্থি। গরম ও আর্দ্রতা বাড়লে কিংবা উদ্বেগ ও হতাশা বাড়লে ঘাম হতে শুরু করে। পায়ের পা ও হাতের তালুতেও এই অ্যাপোক্রিন গ্রন্থি রয়েছে।
কী কী কারণে অ্যাপোক্রিন গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে ঘাম নিঃসরিত হয় :
১.অতিরিক্ত ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় ও অ্যালকোহল পান করলে অ্যাপোক্রিন গ্রন্থি থেকে মাত্রাতিরিক্ত ঘাম বেরোতে পারে।
২. লো ব্লাড সুগার বা হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে এমনটা হতে পারে।
৩. কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এর কারণ।
৪. মহিলাদের মেনোপজ়ও এর একটা অন্যতম কারণ।
৫.যাঁদের হাইপারথাইরয়েড আছে, এসমস্যা তাঁদেরও।
কী করলে মিটতে পারে সমস্যা ?
*বাজারে অনেক ধরনের অ্যান্টিপার্সপিরেন্ট কিনতে পাওয়া যায়। রাতে শুতে যাওয়ার আগে হাতে, পায়ের পাতায় ও বগলে লাগিয়ে শুতে যান।
*কফি বা ক্যাফেইনজাতীয় পানীয়/খাওয়ার অভ্যেস ত্যাগ করুন।
*একই সঙ্গে ঝাল-মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
*নিয়মিত দু’বেলা গোসল করা জরুরি। কিন্তু সওনাবাথ কিংবা গরম পনিতে গোসল করার অভ্যেস ছাড়ুন। এতে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। হাত-পা ও বগলে অনেক ঘাম হতে পারে।
*পা ধোয়ার পর কখনও ভেজা অবস্থায় রেখে দেবেন না। শুকনো কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে ভালো করে মুছুন। না হলে পায়ে জীবাণু জন্ম নিতে পারে, গোড়ালি ফেটে যেতে পারে, ঘাম হতে পারে, পায়ে দুর্গন্ধও হতে পারে।
*পা ঘামা কমাতে চেষ্টা করুন অন্তত বাড়়িতে খালি পায়ে থাকতে। মেঝে যদি পরিষ্কার থাকে, সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
*কখনও ভেজা জুতো পরবেন না। পরার আগে পুরোপুরি শুকিয়ে নিন।
*পায়ে অতিরিক্ত টাইট মোজা পরবেন না।
*হতাশা, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ কমে গেলে হাত ঘামা বন্ধ হতে পারে।