আমার সংবাদ ডেস্ক
মার্চ ৯, ২০১৮, ০৬:১৯ এএম
প্রথম তিন মাস গর্ভবতী মায়েদের কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ সময়। একদিকে নিজের শরীরে একটি নতুন প্রাণের অস্তিত্বের আনন্দ। আর অন্য দিকে তাকে সঠিক ভাবে নিজের মধ্যে লালন করার গুরু দায়িত্ব। যেহেতু সন্তানের একদম প্রথম পর্যায়, তাই মাকে হতে হবে অনেক বেশি সতর্ক। একটু ভুলচুক মানেই ঘটতে পারে অনর্থ। কী করবেন এ সময়ে? কয়েকটি টিপস নিচে দেয়া হলো:-
*প্রথমেই জেনে নিন আপনি সন্তানসম্ভবা কি না। আজকাল প্রেগন্যান্সি কিট কিনতে পাওয়া যায়। কিট দিয়ে করা পরীক্ষা প্রায় ৯৫ শতাংশ ঠিকই হয়, তবে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত হতে চাইলে ডাক্তারের পরামর্শে আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।
*আপনি অন্তঃস্বত্ত্বা এ কথা জানার পরেই অ্যালকোহল, ক্যাফেইন, ধূমপান থেকে দূরে থাকুন, তা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যেমনই হোক না কেন।
*যেহেতু আপনি অন্তঃসত্ত্বা, তাই আপনাকে সব সময় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে। অতি সত্ত্বর একজন ডাক্তার নির্বাচন করুন। ডাক্তারের চেম্বার যেন আপনার বাড়ির কাছে হয়, আর যে কোনো প্রয়োজনে যেন তাঁকে পাওয়া যায়।
*অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে শরীরে বেশ কিছু হরমোনের পরিবর্তন ঘটে। যার ফলে বমি ভাব, মাথা ঘোরা, খেতে না পারা, শরীর খারাপ ভাব হতে পারে। এমন কিছু হলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বিশ্রাম করুন, সব ঠিক হয়ে যাবে।
*এছাড়াও হরমোনঘটিত পরিবর্তনের কারণে এ সময় স্তনের আকারে পরিবর্তন হয় ধীরে ধীরে। সেই কারণে স্তনে ব্যথা হবে ও স্তন নরম হয়ে যাবে। এমনটা হলে ভয় পাবেন না। মনে রাখবেন এই পরিবর্তন আপনার সন্তানের জন্য জরুরি।
*সন্তান গর্ভে ধারণ করার ফলে কিছু শারীরিক পরিবর্তনও ঘটে। যে হেতু সন্তান জরায়ুতে ধারণ করা হয় ও জরায়ুর অবস্থান থাকে প্রস্রাবের নালির উপরে, তাই বাচ্চার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জরায়ু প্রস্রাবের নালির উপরে কিছু চাপ ফেলে। ফলে প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাবে। এই সমস্যা প্রথম ৩ মাস এবং শেষ ৩ মাসের মধ্যেই প্রবল থাকে বেশি।
*এছাড়াও অনেক অন্তঃসত্ত্বা নারীরই রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেই সঙ্গে দেখা দিতে পারে সুগারের সমস্যা। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
*অন্তঃসত্ত্বা নারীর খাবার হজম হতে ও পেট খালি হতে অন্য নারীদের তুলনায় বেশি সময় লাগে, এর ফলে হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য ও বুক জ্বালা।
*গর্ভবতী মহিলারা শিকার হন মুড সুইং-এর। সেই সঙ্গে নানা রকম হরমোনের পরিবর্তনের কারণে রাগ বা খারাপ লাগা অনুভূত হতে পারে। এমন কিছু হলে অধিক উত্তেজনা পরিহার করে চলতে হবে। কারণ বেশি উত্তেজনা গর্ভস্থ সন্তানের জন্য ভালো নয়।
*আপনি যে কাজ করছেন তা প্রেগন্যান্সি সেফ কিনা জেনে নিন। ভারী কোনো কাজ একদম করতে যাবেন না। মনে রাখবেন প্রথম তিন মাস খুব সাবধানী হতে হবে কারণ এই তিন মাসেই গর্ভপাতের হার সব চেয়ে বেশি থাকে। সেই সঙ্গে এমন খাবার খাবেন না যা বাচ্চার জন্য খারাপ হবে। কাঁচা বা আধা সিদ্ধ প্রোটিন যেমন মাছ, মাংস, ডিম এ সব পরিহার করে চলতে হবে। প্রোটিন ভালো করে রান্না করে তবেই খাবেন। প্রথম তিন মাস খেতে কষ্ট হয়, কিছু খেতে ইচ্ছা করে না, তা-ও বাচ্চার কথা চিন্তা করে যতটা সম্ভব ততটা স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
*নিজে থেকে নিজের চিকিৎসা করতে যাবেন না। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কোনো ওষুধ খাওয়ার থাকলে তা খাবেন। এমনকি গ্যাসের সমস্যা, মাথা ব্যথা বা জ্বর হলেও ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খেতে যাবেন না। এতে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে।
*ঘুমের সময় বাড়িয়ে দিন। দিনে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা করে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন। এ ছাড়াও সারা দিনের কাজের ফাঁকে ফাঁকে হালকা বিশ্রাম নিতে পারেন।
*এই তিন মাসে যৌন সম্পর্ক করতে চাইলে করা যায়। তবে সে ক্ষেত্রে খুব সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।