আমার সংবাদ ডেস্ক
জানুয়ারি ১৭, ২০১৯, ০৬:১৫ এএম
চারিদিকে চলছে শীত। আর সাধারণত শীতে বিয়ে বেশি হয়। বিয়ে মানেই জমিয়ে খাওয়াদাওয়া, সাজগোজ আর আনুষ্ঠানিক আচার-ব্যবহারের একটি উৎসব। গায়ে হলুদ বিয়ের অন্যতম একটি রীতি। বিয়েতে গায়ে হলুদ অবশ্যই হতে হবে । কিন্তু বিয়ের অনুষ্ঠানে গায়ে হলুদের প্রচলন কেন হল?
হিন্দু বিয়ের রীতি অনুযায়ী, বিয়ের দিন সকালে হলুদ মেখে গোসল করেন বর-কনে। প্রাকৃতিক এই মশলায় কী এমন গুণ আছে, যে বিয়ের সময় হলুদ মাখার চল শুরু হল?
বিয়েতে হলুদ ব্যবহারের কারণ হিসাবে বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি বিশেষ দিকের কথা বলে থাকেন।
অনেকে বলেন, আমাদের বর্তমান বিয়ের রীতি অনেকটাই মোঘল যুগ থেকে চলে আসছে। আগে নিয়ম ছিল সূচের ছোঁয়ানেই এমন বস্ত্র পরেই বিয়ে হবে। পরে নূরজাহান জরির সুতের বেনারসির চল শুরু করেন। তা দেখতে এতই সুন্দর ও আকর্ষক ছিল যে, বিয়ের পোশাক হিসাবে হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষ এই পোশাক পরা হত। হলুদের ব্যবহারের চল কিন্তু বৈদিক আচার নয়। বরং বেশ কিছু উপকারী দিকের কথা ভেবেই হলুদকে প্রাচীন কাল থেকেই বিবাহের অন্যতম উপকরণহিসাবে মেনে চলেছি আমরা।
কী কী সে সব কারণ, জানেন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঁচা হলুদ প্রাকৃতিক ভাবে জীবাণুনাশক। হলুদ শরীরকে পরিষ্কার করে ও সংক্রমণ ঠেকায়। শরীরে তাপের ভারসাম্য রাখে ও শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। বিয়ের দিন এমনিই অনেক কাজের চাপ থাকে। না খেয়ে থাকেন অনেকেই। তাই বিয়ের সময় বর-কনের শরীর ভাল রাখার জন্য, খুচখাচ অসুখ বা সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে হলুদ মাখানোর রীতি আছে।
এই হলুদ মাখাকেই আরও বিশেষ ভাবে মনে রাখতে ও সকলে মিলে আনন্দ করতেই ‘গায়ে হলুদ’-কে একটি অনুষ্ঠানের তকমা দেওয়া হয়।
ভারতীয় রীতিতে হলুদকে শুভ ও মঙ্গলদায়ক বলেও মানা হয়। সেটাও এই হলুদ ব্যবহারের আর এক কারণ।
এ ছাড়া হলুদ ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়। সঙ্গে ত্বকের যে কোনও সমস্যাকে ঢেকে রাখতে পারে এই হলুদ। ভারতীয় রূপচর্চায় প্রাকৃতিক উপাদানের অন্যতম ছিল এই হলুদ। হলুদের অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল ক্ষমতা যে কোনও ত্বকের জন্যই উপকারী। চড়া মেক আপেও ত্বকের ক্ষতি করতে দেয় না।
বিয়েতে সাজগোজ এক অনন্য অঙ্গ। তাই তার আগে হলুদ মেখে রাখলে মেক আপের ক্ষতি থেকে যেমন ত্বককে বাঁচায়, তেমনই হলুদ মাখার ফলে ত্বক উজ্জ্বল দেখায়।
মূলত এই কারণগুলির জন্যই হলুদকে বিয়ের অন্যতম উপাদান হিসাবে ধরা হয়। রীতি ও ধর্ম অনুযায়ী তার প্রয়োগ ও নিয়ম ও আচার আলাদা করা হয়েছে।