Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

চলুন যাই নরসিংদী ড্রিম হলিডে পার্কে 

আমার সংবাদ ডেস্ক

ডিসেম্বর ৩১, ২০২০, ১১:২৫ এএম


চলুন যাই নরসিংদী ড্রিম হলিডে পার্কে 

শহুরে ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত জীবনে সজীবতা খুঁজে পেতে ভ্রমণের বিকল্প নেই। যাদের ঘোরার জন্য হাতে সময় কম, তারা হুট করে চাইলেই কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি চলে যেতে পারেন না। যারা অল্প সময়ে কম খরচে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকা থেকে স্বল্প দূরত্বের কোথাও ঘুরতে যেতে চান, তারা চলে যেতে পারেন নরসিংদীর ড্রিম হলিডে পার্কে।

নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনা চৈতাব এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে এই পার্কটির অবস্থান। বিনোদন প্রিয় মানুষদের জন্য ড্রিম হলিডে পার্ক বিনোদনের অন্যতম একটি আকর্ষণীয় স্থান। এখানে ছোট-বড় সবার জন্য বিনোদনের বিভিন্ন উপকরণ রয়েছে। পরিবার কিংবা বন্ধুদের নিয়ে দারুণ উপভোগ্য একটি দিন কাটাতে এই পার্কটি হতে পারে আদর্শ একটি জায়গা।

[media type="image" fid="103552" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

প্রায় ২০০ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই বিনোদন পার্কে রয়েছে আকর্ষণীয় সব রাইড। এখানে রয়েছে নাগেট ক্যাসেল, এয়ার বাইসাইকেল, অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ইমু পাখি, মায়াবী স্পট, কৃত্রিম অভয়ারণ্য, ডুপ্লেক্স কটেজ, পার্কে শিশু-কিশোরদের জন্য একাধিক রাইডস, সুবিশাল লেক, হংসরাজ প্যাডেল ও জেট ফাইটার বোট, মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশবেষ্টিত নয়নাভিরাম ক্যানেল, রকিং হর্স সহ আরো অনেক রাইড।

এছাড়াও রয়েছে অত্যাধুনিক সুইমিংপুল, এয়ার বাইসাইকেল, বাম্পারকার, সোয়ান বোট, ওয়াটার বোট, অত্যাধুনিক রোলার কোস্টার, ডেমু ট্রেন, সুইং চেয়ার, স্পিডবোট, বাচ্চাদের অতিপ্রিয় নটিক্যাসেল ও জাম্পিং হর্স। বসানো হয়েছে লাফার কিংসহ বিভিন্ন রাইড। পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছে আকর্ষণীয় আইসপাহাড়।
কি নেই এই ড্রিম হলিডে পার্কে। ছোটমনিদের জন্য আনন্দ উপকরণে ঠাসা এ পার্ক। নিত্যনতুন আরও বিনোদনের উপকরণ যোগ হয়েছে এই ড্রিম হলিডে পার্কে। 

ডাইনোসর থেকে শুরু করে একবারে ভূতের বাড়ি, হাতি, বাঘ আর বানরের দাপাদাপি। সবই যেন নজর কাড়ে শিশু থেকে একেবারে বুড়ো বয়সীদেরও। পার্কে প্রবেশ করলে মনে হবে সত্যি এ যেন স্বপ্নের পার্ক। এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে কৃত্রিম নদী, পাহাড় আর জীবজন্তু। সবই যেন অবাক করার মতো। একবার ঘুরলে মনে হবে যেন স্বপ্নের আবেশে মনপ্রাণ জুড়ে যায়। ওয়াটার পার্ক দিবে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের অনুভূতি।

[media type="image" fid="103553" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা ড্রিম হলিডে পার্কে পাওয়া যাবে হিমালয় পাহাড়ের সাদৃশ্য। নানা রাইডের পাশাপাশি ভূতের বাড়িসহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ২০টি জ্যান্ত ভূত! এগুলো কখনও ভয়, কখনও আনন্দে মাতিয়ে রাখে শিশু-কিশোরদের। রয়েছে ওয়েবপুল। যেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে কান পাতলেই শুনতে পাবেন সমুদ্রের গর্জন। প্রকৃতির এক অপরূপ ছোঁয়ায় মনমাতানো ঝর্ণায় দাপাদাপি করে মেতে উঠতে পারবেন আনন্দের ফোয়ারায়।

এখানকার নতুন আকর্ষণ এয়ার বাইসাইকেল, যা বাংলাদেশের পার্কের জন্য এক নতুন সংযোজন। এতে বসে দু’জন মানুষ অনায়াসে নিজ ইচ্ছায় প্যাডেল চালিয়ে পার্কের ওপর দিয়ে বেড়াতে পারবেন।

ড্রিম হলিডেতে রয়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশবেষ্টিত নয়নাভিরাম টলমলে জলের একটি ছোট্ট খাল। লেকের মত দেখতে এ খালে চাইলে স্পীড বোটে যে কেউ ঘুরে বেড়াতে পারবেন। খালের ওপর তৈরি করা হয়েছে লন্ডন ব্রিজের মত চমৎকার একটি ব্রিজ। আরও দেখতে পাবেন সিডনী ব্রিজের আদলে তৈরি ব্রিজ।

ওয়াটার পার্কে আছে জল কামান,ওয়াটার অ্যাম্ব্রেলা, রেইনবো ওয়াটার, টাইটানিক সদৃশ জাহাজ যা অর্ধ ডুবন্ত অবস্থায় আছে। এর মধ্যে আছে ৫ মিনিট পরপর পানির ফোয়ারায় গা ভাসিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা। এর সঙ্গে আরও রয়েছে পানির ছন্দে বাজানো মিউজিক। এছাড়াও শিশুদের উপযোগী অসংখ্য ছোট ছোট ফ্রি রাইডও আছে। যাতে চড়তে চড়তে শিশু-কিশোরদের সারাদিন যে কিভাবে কেটে যাবে টেরই পাবে না।

[media type="image" fid="103554" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]

ড্রিম হলিডে পার্কে মধুরিমা ও মায়াবী নামের দুটি পিকনিক স্পটও আছে। ছুটির দিনে পিকনিকের জন্য ৩০০ জনের বেশি হলে ভাড়া গুনতে হবে ৮০ হাজার টাকা। ৫০০ জনের বেশি হলে ভাড়া দিতে হবে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দুই রুম সংবলিত একটি বাংলোর ব্যবস্থা থাকছে পিকনিকের জন্য। এর পাশাপাশি দোতলা বাংলোর ব্যবস্থাও রয়েছে। পরিবার নিয়ে থাকার জন্য পার্কের নিজস্ব চারটি কটেজ রয়েছে। নির্দিষ্ট মূল্য পরিশোধ করে বিলাসবহুল এই কটেজে রাত্রিযাপন করতে পারবেন।

রসনা বিলাসের ড্রিম হলিডে পার্কে রয়েছে থাই, ইন্ডিয়ান ও চাইনিজ খাবারের ব্যবস্থা। রয়েছে আইসক্রিম পার্লার, কফি হাউস। এর পাশাপাশি রয়েছে নারায়ণগঞ্জের বিখ্যাত ‘জামদানি হাউস’। কম দামে এখান থেকে কিনে নিতে পারবেন মেয়েদের থ্রি-পিস, বেড শিট ও অন্যান্য জিনিসপত্র।

সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রতিদিন খোলা থাকে এই পার্ক। পার্কে প্রবেশ করতে আপনাকে গুণতে হবে ২০০ টাকা।

যোগাযোগ :

ফোন : ৯৫৬৪০৪৬, ৯৫৭০১৪০-৪১, ৭৬৩০২২৫।

মোবাইল : ০১৭১২-১৪৫৮৪৯, ০১৭২১-৪৯০৪২০।

যেভাবে যাবেন :
ঢাকার সায়েদাবাদ, গুলিস্তান, কমলাপুর, মহাখালী থেকে সরাসরি নরসিংদীর উদ্দেশ্যে বাস ছাড়ে। মহাখালী থেকে পিপিএল সুপার, বিআরটিসি, চলনবিল, বাদশা বাস ছাড়ে। গুলিস্তান থেকে মেঘালয় লাক্সারী বাসে করেও পাঁচদোনায় পৌঁছাতে পারবেন। টঙ্গী কিংবা পুবাইল থেকে গেলে পাঁচদোনায় যায় এমন বাসে উঠতে হবে। পাঁচদোনায় নেমে সিএনজি বা অটোরিকশায় করে পার্কে পৌঁছে যেতে পারবেন।

এছাড়া ঢাকার কমলাপুর থেকে নরসিংদীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া এগারোসিন্দুর, মহানগর গোধূলি ট্রেনেও যেতে পারবেন নরসিংদী। যেকোনো বাস অথবা ট্রেনে গেলে মূল স্টেশন থেকে সিএনজি বা অটোরিকশায় পার্কে যেতে পারবেন।

যেখানে থাকবেন :
নরসিংদীতে থাকার জন্য বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হোটেল, গেস্ট হাউজ রয়েছে। এদের  মধ্যে রয়েছে :

নরসিংদী সার্কিট হাউজ (সরকারি), ফোন: ০২৯৪৬২০৮৩, ০১৭৩৫৮৪০২৯৪;

জেলা পরিষদ পোস্টাল বাংলো (সরকারি), ফোন: ০২৯৪৬৩৭৬৫, মোবাইল: ০১৭১২-৫২১২৭৪;

ডাক বাংলো (সরকারি), ফোন: ০২৯৪৬৩১৮১;

হোটেল নিরালা (আবাসিক),লাইব্রেরি পট্টি, নরসিংদী মার্কেট, ফোন: ০২৯৪৬৩৩৯৩,মোবাইল:০১৭১১১৯৬৬৯৯;

হোটেল আল আরাফাত (আবাসিক), ২১৫/১, সিএন দাবি রোড, বাসস্টেশন, ফোন: ০২৯৪৬৩৩৯৩, মোবাইল:০১৭১২১৩০১৩৯;

হোটেল আজিজ (আবাসিক), পাতিলবাড়ি সড়ক, মোবাইল: ০১৭১২০৭০২৩১।

আমারসংবাদ/এমআর