মর্গে পঁচতে শুরু করেছে লাশ, তিনদিনেও মিলছে না ময়নাতদন্ত

মিরাজ আহমেদ, মাগুরা প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২২, ০৫:৪৩ পিএম
মর্গে পঁচতে শুরু করেছে লাশ, তিনদিনেও মিলছে না ময়নাতদন্ত

এ যেন ‍‍`মরেও শান্তি নেই‍‍`। জাগতিক দুনিয়া থেকে বিদায় নেবার পরও স্বজনেরা মৃত্যুর শেষ বিদায় দিতে পারছেন না। তিন দিন কেটে গেলেও আইন ও ময়নাতদন্ত জটিলতায় আটকে গেছে অন্তিম শয়ান, তাই ঠাঁই হয়েছে মাগুরা হাসপাতালের লাশ কাটা ঘরে। মাগুরা লাশ কাটা ঘরের সামনেই বাবার লাশের অপেক্ষায় কাঁদছেন ১০ বছরের শিশু সন্তান।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) বিকাল ৪.১৭ মিনিটে মৃতের সুরতহাল প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মৃত ব্যক্তির নাম আজিজুর রহমান (৫০) সত্যজিতপুর গোয়ালবাতান গ্রামের বাসিন্দা তিনি। বিগত ২৯ বৎসর আগে মাগুরা নিজনান্দয়ালি পশ্চিমপাড়া ৩ শতাংশ জমি ক্রয় করে বাড়ি করেছেন। তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। গত ২৯ অক্টোবর সকাল আনুমানিক সাত ঘটিকায় মৃত আজিজুল মোল্লা তার পুত্র মাহিদকে নিয়ে নিজনান্দয়ালি পশ্চিমপাড়া মাগুরা শহরের বাড়িতে আসেন। এরপর পুত্র মাহিদকে মাদ্রাসায় দিয়ে নিজনান্দয়ালির বাসায় আসেন তিনি। যথারীতি অনুযায়ী মাদ্রাসা ছুটি হলেও ছেলেকে আনতে যাননি মৃত পিতা আজিজুল মোল্লা এ সময় মাদ্রাসার শিক্ষক মৃত আজিজুলকে একাধিকবার মুঠোফোনে ফোন দিয়ে না পেয়ে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

এমতাবস্থায় আত্মীয়-স্বজনরা শহরের বাড়িতে সন্ধান করতে এলে মৃত আজিজুলের ঘরের মেঝোতে চটের উপর হয়ে শুয়ে থাকতে দেখেন। ৩০ আক্টোবর ১৯.১০ মিনিটে স্থানীয়দের সহযোগিতায় মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে অটোযোগে নেয়া হলে। কর্মরত ডাক্তার আজিজুল ইসলামকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সেই থেকে আজ বিকাল অব্দি সদর হাসপাতাল মর্গে পড়ে আছে মৃতের লাশ।

সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুর গলার মাঝ বরাবর রক্ত জমাট এবং বাম বগলের নিচে আনুমানিক ৩"আঘাতের ক্ষত, বুক এবং পিঠে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এছাড়াও পায়ের আঙুলে রক্ত জমাটের চিহ্ন। মৃত আজিজুল মোল্লার ছেলে মাহিদ (১০) সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয়ের জেরে তার পিতাকে হত্যা করা হয়েছে তিনি আইন-শৃংখলার কাছে ন্যায় বিচার দাবি করেছেন।

মাগুরা পৌরসভার সাত নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাকিব আল হাসান তুহিন দৈনিক আমার সংবাদ এর সাক্ষাৎ কারে বলেন, মৃত্যু আজিজুল একাই এ বাস ভবনে বাস করতেন, তার হঠাৎ মৃত্যু তে তার পরিবার শোকাবহ, তবে বিষয় টি ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না পেলে কিছু বলা সম্ভব না। তবে আইনিক ভাবে বিষয় টি তদন্ত করছেন মাগুরা থানা পুলিশ।

তবে এ ব্যাপারে মাগুরা থানা পুলিশ জানিয়েছেন সংবাদ পাওয়ার পর পরই মৃতের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে ময়নাতদন্ত শেষে জানা যাবে তার মৃত্যের কারণ।

কেএস