সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে অফিস সহায়ক পদে নবায়ন

নীলফামারী প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২৩, ০২:২৫ পিএম
সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে অফিস সহায়ক পদে নবায়ন

নীলফামারীর ডোমার উপজেলার হরিণচড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরী (অফিস সহায়ক) চুক্তি ভিত্তি নিয়োগে সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে নবায়নের  অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক শাহানারা বেগম লাকীর বিরুদ্ধে। তবে প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন তিনি কোন জালিয়াতি করেননি।

বিদ্যালয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে হরিণচড়া ইউনিয়নের বটতলী এলাকার আজিজুল ইসলামের ছেলে সোয়াইবুর ইসলাম কে দপ্তরী কাম প্রহরী(অফিস সহায়ক) আউট সোসিংয়ের মাধ্যমে তিন বছর চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হয়। দেড় শ টাকার নন জুডিশিয়্যাল স্ট্যাম্পে এই নিয়োগের চুক্তিপত্র করা হয়। নিয়োগ প্রদানের তারিখের পর থেকে ৩ বছর অন্তর অন্তর এই চুক্তিপত্র নবায়ন করতে হবে। ২০১৩ সালের প্রজ্ঞাপনে সুস্পস্ট উল্লেখ আছে এই কথাটি। যথারিতি অফিস সহায়ক পদে সোয়াইবুল ইসলাম দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এরই মধ্যে আবার তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের নবায়নের সময় আসলে ২০১৯ সালের নবায়নে সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তার নিয়োগটি নবায়ন করেছেন তৎকালীন প্রধান শিক্ষক। পরের চুক্তির ১০মাস অতিবাহিত হলেও এখনো হয়নি নবায়ন। চুক্তির পত্রের দ্বিতীয় শর্তাবলীতে লেখা আছে সরকারি বিদ্যালয়ে নিয়োজিত সকল জনবল চুক্তিকালীন সময়ে সার্বক্ষাণিক বিদ্যালয়ের কাজে নিয়োজিত থাকিবে এবং এই চুক্তিপত্রের মেয়াদ শেষে অব্যাহতি পত্র হিসেবে গন্য হইবে।

ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালে এসে চুক্তি নবায়ন করতে গিয়ে সভাপতি খয়রুল ইসলামসহ ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্যদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে চুক্তি নবায়ন করেন প্রধান শিক্ষক শাহানারা বেগম।

এ বিষয়ে তৎকালীন সভাপতি খয়রুল ইসলাম বলেন, দপ্তরী কাম প্রহরী (অফিস সহায়ক) পদটি চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ এটি আমি জানতাম না। প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে কোন দিন বলেনি। চুক্তি নবায়নের বিষয়ে কোন দিন কোন নোটিশ বা কোন মিটিং করা হয়নি। এটি গোপনে প্রধান শিক্ষক আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করেছে। এবিষয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত আভিযোগ করেছেন বলেও জানান।

বিদ্যালয়ের সভাপতি ফিরোজ আল মামুন ফিরোজ বলেন, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের চুক্তি তারিখ অনুযায়ী পরবর্তী নবায়নের ১০ মাস পার হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক আমাকে চুক্তি নবায়নের বিষয়ে কোন দিন বলেনি। প্রধান শিক্ষক নিজের খেয়াল খুশি মত চলেন। এভাবে একটি বিদ্যালয় পরিচালিত হতে পারে না।

সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়ে হরিণচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহানারা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সভাপতি স্বাক্ষর করেছে। আবার জানান অফিস সহাযক সোয়াইবুর বাড়ী বাড়ী গিয়ে  স্বাক্ষর নিয়েছেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা বলছেন তিনি। ২০১৯ সালের পরে নবায়ন করা হয়নি কেন জানতে চাইলে তিনি  বলেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার বলেছেন এটি এখন রাজস্ব খাতে গেছে এখন থেকে নবায়ন করার কোন দরকার নাই।

জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমির হোসেন বলেন, এটি আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ। যাহা ৩বছর পর পর চুক্তি নবায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, আমি কোন শিক্ষককে  বলেনি যে এটি রাজস্ব খাতে গেছে।

২০১৬ থেকে ২০১৯ সালে সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কেএস