সূর্যমুখী ফুল চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৩, ০৩:২৪ পিএম
সূর্যমুখী ফুল চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে

ময়মনসিংহের নান্দাইলে মহাসড়কের পাশে সারি সারি সূর্যমুখী ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য্যে মন কাড়ছে পথিকের। পথের বাঁকে পথিকেরা একনজর ঘুরে আসছে সানফ্লাওয়ার গার্ডেন থেকে। সূর্যমুখী ফুলের সাথে স্মৃতি ধরে রাখতে সেলফি তুলতে যেন ভুলে না কেউ ।

জানা গেছে, উপজেলার মুশুল্লী ইউনিয়নের উত্তর মুশুলী নামক স্থানে কিশোরঞ্জ টু ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে দাড়িয়ে আছে সারি সারি সূর্যমুখী ফুলের গাছ। প্রতি গাছে গাছে সবুজ পাতার চাদরে হলুদ ফুলের বড় বড় পাপড়িতে হাসছে সূর্যমুখী ফুল। যেন তা সূর্যের হাসি। সৌখিন কৃষক শফিকুল ইসলাম ও নাঈম ইসলাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও ব্লক সুপারভাইজারের পরামর্শক্রমে তারা ৯০ শতক জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। যা বর্তমানে সান ফ্লাওয়ার গার্ডেন নামে পরিচিত।

পথচারীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে স্কুল-কলেজ পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রী, ফুল ও প্রকৃতি প্রেমিগণ সান ফ্লাওয়ার গার্ডেনে আসছে মন কাড়ানো দৃশ্য দেখার জন্য। এ যেন ফুল ও প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার অন্যরকম অনুভূতি। দর্শনার্থীরা জানান, রাস্তার পাশে বড় বড় সূর্যমুখী ফুলের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য এড়িয়ে যাওয়া যায়না। তাই এ দৃশ্যটুকু ক্যামেরা প্রেমে বন্দী করতে সূর্যমুখী ফুলের বাগানে এসেছি।’

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে,বর্তমান বিশ্ব বাজারে ও দেশে তেলের বেশ চাহিদা রয়েছে। তাই সূর্যমুখী ফুল থেকে সানফ্লাওয়ার ভোজ্য তেল উৎপাদন করা হচ্ছে। যা স্বাস্থের জন্য অধিকতর ভালো। ফলে কৃষকরা লাভবানের আশায় সুর্যমুখী ফুল চাষে তাদের আগ্রহ বেড়েছে দ্বিগুন। নান্দাইল উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ২ হ্যাক্টর জমিতে ২০/২৫জন কৃষক সূর্যমূখী ফুল চাষ করেছে। এছাড়া গত কয়েক বছর পূর্বে নান্দাইল আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছিলেন। এরপর থেকে অনেকেই উদ্ভোদ্ধ হলেও কমে গিয়েছিল সূর্যমুখীর চাষ। দীর্ঘদিন পর নান্দাইল উপজেলা

কৃষিকর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামানের উদ্যোগী পরিকল্পনায় কৃষকদেরকে সূর্যমুখী ফুল চাষের পরামর্শ দেন। সূর্যমূখী ফুল চাষ সহজলভ্য বলেই কৃষকরা তাদের জমিতে ভূট্টার পরিবর্তে সূর্যমুখী ফুল চাষ করেছেন। বর্তমানে কৃষকরা সূর্যমুখী ফুল চাষের বাম্পার ফলন আশা করছেন।

এ বিষয়ে কৃষক শফিকুল ইসলাম ও নাঈম বলেন, প্রাথমিক পরীক্ষা ও সৌখিনতার বশে ৯০ শতক জায়গায় সূর্যমুখী ফুল চাষ করেছি। এতে আনুমাকি ২৫/৩০হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে বাজারে সূর্যমুখী বীজের ভালো দাম আছে। আশা করি লাভবান হবো। তাছাড়া সূর্যমুখী ফুল চাষে যেমন আর্থিক লাভবান হওয়া যায়, তেমনি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যও বাড়িয়ে তুলে।

নান্দাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, তেল জাতীয় ফসলের মধ্যে সূর্যমুখী ফুল চাষটি জনপ্রিয় না হলেও তেলের চাহিদা লাঘবের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে এর চাষ হচ্ছে। তারই প্রেক্ষাপটে নান্দাইলে ২ হ্যাক্টর জমিতে সুর্যমুখী ফুল চাষ করিয়েছি। সূর্যমুখী ফুল চাষে একদিকে যেমন দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ সৃষ্টি করছে,অপরদিকে তা দেশে তেল উৎপাদনেও ভালো ভূমিকা রাখবে। আশা করছি এর বাম্পার ফলন হবে।

আরএস