ফেনীতে ১ লাখ ২০ হাজার মেট্টিক টন বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

ফেনী প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ৬, ২০২৪, ০২:১৪ পিএম
ফেনীতে ১ লাখ ২০ হাজার মেট্টিক টন বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

এ বছর আবহাওয়া চাষের অনুকূলে থাকায় ফেনীতে বোরো ধানের আশাতীত ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে মৌসুমের বোরো ধান কাটা ও মাড়াই শুরু করে দিয়েছেন কৃষকরা। বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় উৎপাদন খরচ পুষিয়ে লাভের মুখ দেখার আশায় রয়েছেন কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে জেলায় ৩০ হাজার ৯’শ ৯০ হেক্টর জমিতে বোরোধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। অর্জন হয়েছে ৩১ হাজার ২’শ ৭৭ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে বোরো ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ লক্ষ্য ২০ হাজার ৮’শ ২০ মেট্টিক টন।

কৃষি বিভাগ বলছে চলতি বোরো মৌসুমে ৯৩ হাজার ১’শ ৩৮ জনের বেশি কৃষক ও শ্রমিক ধান উৎপাদনে জড়িত ছিলেন। বিগত মৌসুমে আবাদ হয়েছিলো ৩০ হাজার ৯’শ ৬৬ হেক্টর। উৎপাদন হয়েছিলো ১ লক্ষ্য ১৯ হাজার ৯’শ ৩০ মেট্টিক টন।

চলতি মৌসুমে সঠিক সময়ে সেচের পানি সরবরাহ করতে পারায় কৃষকরা প্রতিটি জমিতে ব্যাপকভাবে বোরো চাষ করেন।

জেলার সোনাগাজী, ফুলগাজী ছাগলনাইয়া, ফেনী সদর ও দাগনভূঞার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে বোরো ফসলের সমাহার। এসব গোছাভরা পাকা ধান বৈশাখের সোনালি রোদের আলোয় আরও আলোকিত হয়ে উঠছে। আর কৃষক-শ্রমিকরা মাঠভরা এ পাকা ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এর মধ্যে কথা হয় সোনাগাজী উপজেলার চরছান্দিয়া ইউনিয়নের রুবেল হোসেন নামের একজনের সাথে। তিনি বলেন, সোনালী ধান ঘরে তোলার আগে বৃষ্টি চায় না কৃষক। এ বছর তাদের ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। ধান কাটা ও মাড়াই শুরু করেছেন। আশা করছেন বৈরী আবহাওয়ার আগেই ধান কাটা সম্পন্ন করে সোনালী ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।

আরও কয়েকজন কৃষক বলেন, ঝড়-বৃষ্টির জন্য একটু আশঙ্কায় রয়েছি। তারপরও ধান কাটা চালিয়ে যাচ্ছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন বেশ ভালো হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার আগেই ধান বাজারজাত করবো।

সদর উপজেলার কৃষক কবির আহমেদ বলেন, শ্রমিক সংকটে অনেক কষ্ট রয়েছি। এ বছর শ্রমিকদের মজুরিও বেশি। তবে শীঘ্রই আশেপাশের জেলা ও দক্ষিণাঞ্চল থেকে শ্রমিকরা আসলে এ সংকট দূর হবে এবং মজুরিও কিছুটা কমবে।

সোনাগাজী উপজেলা কৃষি অফিসার মাইন উদ্দিন জানান, এ বছর কৃষকরা হাইব্রিড ও উচ্চ ফলনশীল (উফসী) জাতের ধানের চাষ করেছেন। যে সকল কৃষক স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে বোরো ধান রোপণ করেছেন তাদের ফলন চাহিদার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি হবে। তাছাড়া অন্যান্য বছরের চাইতে এ বছর ধানের বাজারদর বেশি। তাই বোরো চাষীরা অনেক বেশি লাভবান হবেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনীর উপ-পরিচালক একরাম উদ্দিন জানান, এ বছর ফেনীতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বোরো ধানের আবাদ বেশি হয়েছে। ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। প্রায় মাঠে ৮০ শতাংশের বেশী ধান পেকে গেছে।

ফসলের অবস্থা এখনও পর্যন্ত ভালো। তবে বৈরী আবহাওয়ার হাত থেকে ফসল রক্ষায় জমির ধান পঁচাশি শতাংশ পাকার সঙ্গে সঙ্গেই কেটে নেয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ফলন তুলনামূলক ভালো হওয়ার আশা এই কর্মকর্তার।

ইএইচ