পার্বত্য সাংবাদিকতার পথিকৃৎ এবং ‘পাহাড়ের চারণ সাংবাদিক’ হিসেবে খ্যাত মরহুম আলহাজ্ব এ কে এম মকছুদ আহমেদের রুহের মাগফিরাত কামনায় রাঙামাটি সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ক্লাবে বুধবার (৭ মে) দোয়া মাহফিল, ফাতেহা পাঠ ও জিয়াফতের আয়োজন করা হয়।
পারিবারিকভাবে আয়োজিত এই স্মরণ সভার উদ্যোগ নেন মরহুমের সহধর্মিণী মনজু রানী গুর্খা এবং ভ্রাতা মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর। অনুষ্ঠানে রাঙামাটির বিভিন্ন স্তরের রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার, জোন কমান্ডার লে. কর্নেল জুনাইদ উদ্দিন শাহ চৌধুরী, সাবেক পার্বত্য উপমন্ত্রী মনিস্বপন দেওয়ান, সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব কৃষ্ণ চন্দ্র চাকমা, জেলা সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা, আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট প্রতিম রায় পাম্পু, রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা, প্রেস ক্লাব সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক, এবং আরও অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন—সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। দিনব্যাপী এ আয়োজন ছিল স্মৃতিমেদুর ও আবেগঘন।
২০২৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাতে নিজ বাসভবনে স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেন এ কে এম মকছুদ আহমেদ। রাত ৯টা ৩০ মিনিটে স্ট্রোক করার পর তাকে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৮২ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন।
তাঁর মৃত্যুতে রাঙামাটি প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন গভীর শোক প্রকাশ করে। পরদিন ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে রাঙামাটি প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁর মরদেহ রাখা হয়। সকাল ১০টায় শহীদ শুক্কুর স্টেডিয়ামে প্রথম জানাজা এবং পরে নিজ গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।
উল্লেখ্য, মরহুম এ কে এম মকছুদ আহমেদ ৫৬ বছর সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত ছিলেন। ১৯৭৯ সালে ‘সাপ্তাহিক বনভূমি’ এবং ১৯৮৩ সালের ২৬ মার্চ ‘দৈনিক গিরিদর্পণ’ পত্রিকা প্রতিষ্ঠা করেন এবং আজীবন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দৈনিক ইত্তেফাক ছাড়াও রয়টার্স, বিবিসি বাংলা ও ভয়েস অব আমেরিকার রাঙামাটি প্রতিনিধি ছিলেন। রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে একাধিক মেয়াদে নেতৃত্ব দিয়েছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের সাংবাদিকতায় তাঁর অবদান যুগান্তকারী ও স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ইএইচ