বরিশালে ৪ মাসে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৩৫ হাজার

আরিফ হোসেন, বরিশাল ব্যুরো প্রকাশিত: মে ৯, ২০২৫, ০৫:০২ পিএম
বরিশালে ৪ মাসে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৩৫ হাজার

বরিশালে ডায়রিয়া ও ডেঙ্গুর সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে জেলার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে প্রায় ৩৫ হাজার ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ অবস্থার মধ্যেই এপ্রিলের শুরু থেকে ডেঙ্গুর বিস্তার পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলেছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শুধু সরকারি হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ২৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছেন। মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই দুই শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে। এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে সরকারি হাসপাতালে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ভর্তিকৃত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা সাড়ে ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে।

২০২৪ সালের শেষ নাগাদ বরিশালে সরকারি হাসপাতালে প্রায় ৯ হাজার ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন এবং এদের মধ্যে ৬৪ জনের মৃত্যু হয়। তবে চিকিৎসকদের মতে, সরকারি হাসপাতালের বাইরে আরও তিন গুণ রোগী বেসরকারি ক্লিনিক ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বারে চিকিৎসা নিয়েছেন, যাদের পরিসংখ্যান স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে নেই।

ডায়রিয়া পরিস্থিতিও ভয়াবহ। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে শীতকালীন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সাড়ে ১০ হাজার নারী-পুরুষ ও শিশু ভর্তি হন। মার্চে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাও বাড়তে থাকে। মার্চ মাসে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন প্রায় ১১ হাজার রোগী এবং এপ্রিল মাসে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১৪ হাজারে। শুধু গত এক সপ্তাহেই ভর্তি হয়েছেন আড়াই হাজারের বেশি ডায়রিয়া রোগী।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বরিশালের সরকারি হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ৩৬ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে, এ পর্যন্ত ডায়রিয়ায় কেউ মারা যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল।

চিকিৎসকরা মনে করছেন, পথখাবারের দোকানগুলো এ অঞ্চলে ডায়রিয়া এবং অন্যান্য পানিবাহিত রোগের অন্যতম প্রধান উৎসে পরিণত হয়েছে। বিষয়টি জনস্বাস্থ্যের জন্য গভীর উদ্বেগের হলেও সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের তথ্যমতে, বর্তমানে ১ হাজার সিসির প্রায় ২৩ হাজার ও ৫০০ সিসির সাড়ে ৬ হাজার আইভি স্যালাইন এবং চাহিদা অনুযায়ী মেট্রোনিডাজল ট্যাবলেট ও অ্যান্টিবায়োটিক ক্যাপসুল মজুদ রয়েছে।

ইএইচ