ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ আঘাত হানার আশঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধে অরক্ষিত উপকূলবাসী

বেলাল হোসেন মিলন, বরগুনা প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৫, ০৫:৫৯ পিএম
ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ আঘাত হানার আশঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধে অরক্ষিত উপকূলবাসী

প্রবল শক্তিধর ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ আঘাত হানতে পারে এমন আশঙ্কায় চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন বরগুনার উপকূলীয় এলাকার মানুষ। জেলার বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের দুর্বল অবস্থার কারণে উপকূলবাসীর আতঙ্ক আরও বেড়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ ধীরে ধীরে উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এটি ২৮ মে দুপুর নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রবিবার সকাল থেকে বরগুনা জেলায় থেমে থেমে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়ের ফলে উপকূলীয় নিচু এলাকা স্বাভাবিকের তুলনায় ২ থেকে ২.৭ মিটার উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, বরগুনার মোট ৮০৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে নলটোনা, পালের বালিয়াতলী, কালমেঘা, রামনা এবং কালিকাবাড়ী এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার বাঁধ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। পরিকল্পিত ও টেকসই বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় প্রতিবছরই এসব এলাকায় ভাঙনের শিকার হতে হয় উপকূলবাসীকে।

বিষখালী নদীর তীরবর্তী হরিণঘাটা ও জিনতলা এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শতাধিক ঘরবাড়ি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নদীর পানি ফুলে উঠেছে—স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন, বঙ্গোপসাগরে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটতে চলেছে।

পাউবো সূত্রে আরও জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে ১০টি পয়েন্ট অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত, এবং মাঝারি ঝুঁকিতে রয়েছে আরও প্রায় ৫০টি স্থান। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

পাউবোর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান—“ঘূর্ণিঝড় শক্তির বিষয়ে এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা পাইনি।”

এদিকে, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির বরগুনা জেলা শাখার কর্মকর্তা আব্দুর রহমান জানান, “ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাব মোকাবিলায় এখন পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকায় কোনো ধরনের সংকেত দেওয়া হয়নি।”

ইএইচ